মার্গে অনন্য সম্মান দেবাশিস বসু (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৬৫

বিষয় – দীপাবলী

রামের প্রত‍্যাবর্তন

হেমন্তের রাতে মুক্তোর মালার মতো আলোর রোশনাই
অন্ধকার আকাশে মুখে আগুন নিয়ে ছুটে চলা হাওয়াই
মোমবাতির আলো আর আতশবাজি যেন চলন্ত জোনাকির বাড়ি
হিমেল বাতাসে পটকার ধোঁয়া বুঝি মরুভূমির বুকে বালিয়াড়ি
রঙ্গোলির রঙ আর মিষ্টান্নে সেজেছে গোটা সমাজ
সারাটা রাত আকাশকে জাগিয়ে রাখাই ফানুসের কাজ

ঘোর অমানিশা-অন্ধকারের আঁচলে ঢেকেছে অযোধ্যার পথঘাট
চোদ্দ বছর বাদে ঘরে ফেরা দাশরথির রাজপাট
বদলে গেছে মানুষ -পাল্টে গেছে পুরনো সব নিশানা
অসংখ্য গলিঘুঁজিতে চেনা পথও অচেনা
অযোধ্যাবাসী প্রদীপ দিয়ে সাজায় বাড়ী
সরযূ তীরে সহস্র আলোর মালায় উজ্জ্বল নগরী
আলো জ্বলে হরমন্দির সাহেবের অকাল তখতে
গুরু হরগোবিন্দ ফিরেছিল গোয়ালিয়রের বন্দীশালা হতে
মহাবীর পেয়েছিল নির্বাণ ঋজুকুলা নদীর তীরে
আগমবাগীশ দেখেছিল আজকের কালীমূর্তি সাঁওতাল রমণীর শরীরে
গোবর্ধন পাহাড় আঙুলে তুলে ধরে দেবকী নন্দন-
নিষ্ফল ইন্দ্রের বজ্র আর মুষলধারে বৃষ্টিপতন
এই চতুর্দশীতেই হত নরকাসুর-মুক্ত সহস্র রমণী
তারাই তো কৃষ্ণসখা সুবিশাল গোপীবাহিনী

ফুটপাথ নদীপাড় সমুদ্রসৈকত
নবনির্মাণ বা পরিত্যক্ত কারখানায়
রক্তাক্ত সতীচ্ছদের আর্তনাদ নিদারুণ লাঞ্ছনায়
ভাঙা বোতল আর লোহার রডে কুমারী শরীরের হাহাকার
ছিন্ন অন্তর্বাসে এখনো লেগে থাকা ধূসর তরলের সমাহার
শরীরে অজস্র হায়নার নখের আলপনা
কিংবা মন্থনের বিষে সারাটা শরীরে নীলাভ যন্ত্রণা
নিরালোক ল্যাম্পপোস্টের ধার ঘেঁষে সার দিয়ে দাঁড়ায় কত মাতৃমূর্তি
কিংবা বন্ধক দেওয়া জমিতে কৃষকবধূরা জোতদারের অনুবর্তী

আজও জীবিত সে অসুর হাজারো আলোর অন্ধকারে
আজও তার মৃগয়া ভূমি এই বাঙলার পথ ঘাট প্রান্তরে

হাতে তুলে নিই কলম তরবারির মত
আমি ছিন্ন করবো মেকী সভ্যতা যত
ভেকধারী আইন-মিথ্যেই শত সামাজিকতার শর্ত
কেটে যাবে এই অন্ধকার অমানিশা
দীপাবলীর রাত হবে ধ্বংসস্তূপে উজ্জ্বল আলোর দিশা

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।