বাসের সিটে এসে বসতেই বুড়িটা কোত্থেকে এসে হাত পাতত। পাঁচ টাকা দিতাম। চলে যেত। সেদিন বুড়িটা একটা প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে বলল, “বাবা। এই ওষুধটা হাসপাতালে নেই। দোকান থেকে কিনতে হবে। একশটা টাকা দেবে? খুব শ্বাসকষ্ট”। একশ টাকা আমি দিতেই পারতাম। কিন্তু বুড়ির কথা বিশ্বাস হল না। লোকের কাছ থেকে টাকা হাতাবার নতুন কোন ফন্দি মনে হল। অনেকক্ষণ অনুরোধ করে বুড়িটা চলে গেল।
পরদিন বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার মুখে দেখি বাস ছাড়ব ছাড়ব করছে। তড়িঘড়ি দৌড়ে এসে বাস ধরলাম। কন্ডাক্টরকে ভাড়া দেবার সময় দেখি পার্স উধাও। ভাল করে প্যান্টের পকেট, শার্টের বুকপকেট খুঁজেও পেলাম না। দিশেহারা অবস্থা। বাস ছেড়ে দিল। হঠাৎ দেখি বুড়িটা চলন্ত বাসের পেছনে পড়িমরি ছুটেছে আর হাত নেড়ে বাস থামাতে বলছে। থামলে বুড়িটা দৌড়ে এসে পার্সটা হাতে দিয়ে কোনরকমে বলল, “রিকশাওয়ালাকে টাকা দেবার সময় তোমার পকেট থেকে পড়ে গেছিল”।
পরম স্বস্তি পেলাম। পার্স থেকে একশ টাকা বুড়িকে দিলাম। চলন্ত বাসে পেছনের কাচ দিয়ে দেখি, বুড়িটা হাঁপাতে হাঁপাতে বুকে হাত দিয়ে মাটিতে বসে পড়েছে।