সৃষ্টির নেশা অপার। প্রতিটা সৃষ্টির পেছনে থাকে কিছু সুন্দর মানুষের অনুভূতির ছোঁয়া। আর এই সৃষ্টিকে ধাওয়া করেছেন সেই তরণকাল থেকে যাঁর খ্যাতি শুরু হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে সাহিত্য ও সংগীতাঙ্গনকে ঘিরে। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অনীক মাহমুদ ছাত্র বয়স থেকে খুব মিষ্টভাষী হিসাবে পরিচিত। স্বভাবগত ভাবেই তিনি যে কোন ব্যক্তির সাথে মিশে যেতে পারেন। খুব শান্ত ও নরম মেজাজের এই মানুষটির সাথে পরিচয় বেশী দিনের নয়। মােটামুটি বছর পাঁচেক তাে হবেই। তবে তাঁর নামে সাথে পরিচয় ছােট্টবেলা থেকে। আমরা সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে প্রয়ােজনেই। আমি দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ ও সংরণের কাজ করে আসছি। এবং তা আমার সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয় ছােটকাগজ প্রজন্মে প্রকাশের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধে চেতনা লালনের প্রয়াস থেকে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক প্রজন্মের উপদেষ্টা ড. সুজিত সরকারের সুবাদে একটি কবিতা সংগ্রহের জন্য তাঁর সাথে আমার পরিচয় ঘটে। আর সেই থেকে আজ অবধি একই বৃত্তে বসবাস। আরেকটি বিষয় হলাে যেহেতু আমাদের দুজনের নাম অনীক ও অনিক তাই সখ্যতাটা মিতা হিসাবে একটু বেশী। তাকে যতই জানচ্ছি ততােই আমার নিকট বিশাল আকার ধারণ করছে। সাহিত্য অঙ্গনে বিচরণ তাঁর সবখানেই। তাঁর কবিতার প্রতিটি শব্দ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মাটি ও মানুষের কথা বলে যা সব প্রজন্মের হৃদয়ে, এটে যায়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই মনমুগ্ধ চিত্তে তাঁর প্রবন্ধ, গদ্য, কবিতা, ছড়া উপভােগ করে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তাঁর এই সৃষ্টির ছোঁয়া বিকাশ লাভ করবে। মাটি ও মানুষের ভালােবাসার পরশে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রােপটে তিনি সর্বজন স্বীকৃত একজন সাহিত্য ব্যক্তিত্ব। আমার সাথে তার কিছু ছাত্রের পরিচয় আছে যারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পড়াশুনা করছে এবং সেই সাথে ছােটকাগজ প্রকাশনা করছে। তারা তাদের শিক্ষককে পথ ধরে অনেক দূর যেতে চায়। তাদের বক্তব্য থেকে পরিস্কার বােঝা যায় আগামী প্রজন্ম এই সাহিত্য ব্যক্তিত্বের লেখনির মাধ্যমে কতটুকু শিক্ষিত। তাঁর ছােটদের ছড়ার বই নানুর বাড়ি কানুপুরে ছােটদের চিন্তাভাবনায় নতুন মাত্রা যােগ দিয়েছে। যেমন : দুষ্ট ছেলে দুষ্ট ছেলে/গামলা ভরা কী/ঘটা করে সবটা খেলে পান্তা ভাতে ঘি! এই ছড়াটির প্রথম চার লাইন থেকে বােঝা শিশুদের জন্য তিনি কতটা নান্দনিক। তাঁর প্রতিটি ছড়া শিশুদের মনন বিকাশে সহায়ক বলে আমি মনে করি। আমরা ছােটকালে যে সকল ছড়া শুনতাম তার প্রতিটা ছোঁয়া আজও আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করে। আজকের শিশু আগামীতে অনীক মাহমুদের ছড়া, কবিতা বা গদ্যদের আদলে আলাে ছড়াবে বলেই বিশ্বাস। এই প্রজন্মের দৃষ্টি তাই তাঁর লেখনির পরতে পরতে। তার পথ ধরে আগামী দিনের বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অনেক দূর পর্যন্ত এই প্রত্যাশা সকল প্রজন্মের ।