ক্যাফে কাব্যে অনির্বাণ চৌধুরী

আজ একুশের দিনে

আমার মাতৃভাষাকে আমার মনে হয়
মা এর সেই অদ্ভুতভাবে চেয়ে দেখা

বহুযুগ ধরে গাছের ভিতর লালন করে চলেছি
এক একটা পরশমনি।
আমাদের মন গাছ দেখে
গাছ বড়ো হতে থাকে আরও আরও
ক্রমে ক্রমে আমরা মানুষের ভিতর পরশুরাম লালন করি।
ধারালো কুঠার আর শক্ত ডালের হাতল।
বহুমাত্রিক হয়ে উঠেছে আমাদের ভাষা।
আমার বাবা ফটো তুলেছিলেন মা এর হাত ধরে একসাথে।
আমিও সেলফি তুলি সহগামী বউ এর হাসি।
বাংলা ভাষার ভার বুকে নিয়ে
বাবা হো হো করে হাসতেন। এখনও হাসেন সেই ভাবেই।
মা এখনও তাই দেখে অদ্ভুত ভাবে তাকান।

এক একটা সেলফি তে এখন গৃহিণীর স্মাইল ফুটে ওঠে
একটু হা হা করে হাসলে শব্দ হয়,
আধুনিক হাসি নাকি নিঃশব্দের হয়, নইলে মুখ ভার হয়।
কুঠারের প্রতিটা ছোবল আর শব্দ করে না
বাংলা ভাষার বিরাট বটগাছের ভিতর থেকে
পরশুরাম অশব্দে কেড়ে নেয় পরশমনি।
সে পরশমনি লোহার কুঠার স্পর্শ করে, দেখি।
বহুমাত্রিক শব্দ উঠতো যখন বাংলা ভাষার,
আমরা দেখতাম, লোহার কুঠার তখন সোনা হয়ে যেত
আবার গজিয়ে উঠতো গাছ।
এখন চকচকে নিশব্দ পরশুরাম হেঁটে চলে।
বন নেই, গাছ নেই, শব্দ নেই—-
বহুমাত্রিক বাংলা ভাষা ক্রমেই নি:শব্দে কেটে চলে গাছ—

অদ্ভুত ভাবে চেয়ে দেখেন মা।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!