Cafe কলামে – আত্মজ উপাধ্যায় (পর্ব – ৪১)

নরনারীর যৌনপরিষেবা – ৩৩


নরনারীর যৌন পরিষেবা বলতে গত ৩২টি অধ্যায়ে মূলতঃ বিয়ে ও বিয়ে বহির্ভূত যৌনসম্পর্কের ইতিবাচক নেতিবাচক বা আইনি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি। উদাহরণের শেষ নেই। প্রাচীনকাল হতে আজ অবধি গত সাড়ে চার হাজার বছরের অধিক কাল ইতিহাসে- প্রাচীন ধর্মীয় গ্রন্থে বিবৃত আছে।আর আছে গত ১০০ বছরের সংবাদ পত্রে।

আমি আমার উপসংহার টানার আগে, পাঠককে আরেকবার অনুরোধ করব গত ৩২টি ভাগে ( প্রায় শতাধিক পৃষ্ঠা, বা ২৫ হাজার শব্দের অধিক) আমি যা আপনাদের পরিবেশন করেছি তা এক ঝলক দেখে নিতে।
শুরু করেছিলামঃ
বিবাহঃ নারী পুরুষের যৌনমিলনের অনুমতি? প্রথম অধ্যায় মেসোপটেমিয়ায় (Mesopotamia) প্রায় ২৩৫০ খ্রীষ্টপূর্বে (2350 B.C). থেকে একজন মহিলা এবং একজন পুরুষকে বিবাহের অনুষ্ঠানের প্রথম রেকর্ড করা প্রমাণ থেকে বিবাহের উৎপত্তি ও ধর্মীয় অনুশাসন দিয়ে।
প্রয়োজন বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন রকম। কোথাও বিবাহ চুক্তিবদ্ধ, কোথাও প্রথানুগত, কোথাও বিয়ে নেই সহবাস আছে, কোথাও সমলিংগে বিয়ে। মহাদেশগুলির মধ্যেকার নরনারীর যৌন সম্পর্ক নানাবিধ্‌ শৃংখলা বা বিশৃংখলা রয়েছে। বিয়ে নিয়ে গোষ্ঠি দ্বন্দ্ব রয়েছে, জাতি দ্বন্দ্ব রয়েছে, ধর্মীয় দ্বন্দ্ব রয়েছে। সভ্যতার পাশাপাশি অসভ্যতা রয়েছে। মানুষ যত নিজেকে স্বেচ্ছাচারী আইনি রূপে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে সে তত আত্মকেন্দ্রিক হয়েছে, যত আত্মকেন্দ্রিক হয়েছে তত সামাজিক শত্রুতা তৈরি করেছে। সামাজিক অমংগল নিয়ে আসছে। যেমন ধরুন, ইউরোপ আমেরিকায় সভ্যতা অন্য মহাদেশের তুলনায় অনেক উন্নত।ইউরোপ আমেরিকার মেয়েরা সমাজে নিজেদের উলংগ করতে চলেছে। তাদের কাছে স্ত্রীলিংগ হল একখানি ব্রহ্মাস্ত্র, যা দিয়ে তারা স্বেচ্ছাচারীতায় মেতেছে, যা খুশি করে পারপেয়ে যাচ্ছে, এবং দাবি করছে তারা অনেক উন্নত। এবং তারা কোন স্বামীর অধীনে থাকতে রাজী নয়, তারা সন্তান ধারণে অনিচ্ছুক। তারা সংসারে খাপ খাইয়ে নেওয়াকে মনে করে পরাধীনতা। ফলে সেখানে বিচ্ছেদের হার অধিক।মেয়েরা ঘর সংসারের কাজ করতে ইচ্ছুক নয়। তারা ১০টা ৫ টা অফিস করতে চায়। আরামের চাকরি চায়।
একথা বলা বাহূল্য মহিলারা পুরুষের মত বিপদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেনা। শ্রমের দিক থেকে পুরুষ অধিক শক্তিশালী হওয়ার জন্য মহিলারা পুরুষের শ্রমের সম তুল্য নয়। মেধার দিক থেকেও মহিলারা বিজ্ঞান শিল্প সাহিত্যে পুরুষের সমতুল্য নয়। কিন্তু ওরা দাবি করে পুরুষের সম মর্যাদার, সম মজুরী ইত্যাদি। মানুষ এত বোকা নয়, আর কারুর টাকা পয়সা দান দক্ষিণার জন্য নয়। ফলে, কাজ বুঝে মজুরী দেয়। এমনকি একজন মহিলা আরেকজন মহিলাকে শ্রমের দিকে বিশ্বাস করেনা কিন্তু আন্দোলন করে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
গত ১০০ বছরের মহিলা উত্থান প্রচার এত হয়েছে ফলে সারা পৃথিবীর মহিলারা পশ্চিমী শ্লোগানকে হাতিয়ার করে যে যার মত চলতে চাইছে। ইংলিশ দুনিয়া হল ভন্ড দুনিয়া ও মহিলা দাবি মানে সামাজিক ধ্বংস হিসাবে দেখি।
একটা প্রবাদ আছে “ নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস। নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে। ”( মোহ -রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) মহিলারা সেই মোহে ডুবে আছে। তারা সব সময় ভাবে পুরুষ খুব সুখে থাকে, তাই তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও অনবরত চেষ্টা পুরুষকে নকল করা। তারা পুরুষের পোষাক থেকে শুরু করে সকল স্টাইল ইতিমধ্যে নকল করেও সন্তোষ্ট নয়, কারণ তারা পুরুষকে সম্পূর্ণ নকল কি করে করবে?

উপরের ছবিটা দেখুন। ছবিটা উইকিপেডিয়া থেকে নেওয়া হয়েছে। মহিলারা ভুলে যান যে, মানুষ বিবর্তনের ফসল এবং লক্ষ লক্ষ বছরের বেঁচে থাকা প্রাণ লক্ষ বছর ধরে তার জীবিকা নির্ভর করে মানুষ আকৃতি পেয়েছে। মহিলারা নরম শরীর মসৃণ চামড়া, স্তন যোনি এসব তারা অতীতে চর্চা করে পেয়েছে । আজ দুদিনেই যদি লক্ষ বছরকে মুছে দেওয়া সম্ভব হত তাহলে সম্ভবতঃ পুরুষরাও আরো কিছু করতে পারত।
ইউরোপ আমেরিকার সবাই চায়না পুরুষের নকল করে বাঁচতে। এছাড়া ইসলাম দুনিয়ার মহিলারাও চায়না পশ্চিমী মহিলাদের মত উলংগ হয়ে পুরুষ শোষণ করতে। ইসলাম দুনিয়া ছাড়া বাকী দুনিয়া পারুক না পারুক পশ্চিমী মানে সাহেবদের নকল করতে ভালবাসে। একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি। ১৩৫ কোটি মানুষ ভারতের ১৯৪৭ এর পর নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। এখনো ভারতের জনসাধারণের অবস্থা বাস্তবিক অত্যন্ত খারাপ। যেমন গুন্ডা বদমাস ভোটে জিতে স্বেচ্ছাচারীতা চালায়, সরকারী কোষাগার লুটপাট করে, তেমন উল্টোদিকে নাগরিকরা না খেতে পেয়ে, চাকরি বা কর্মস্থানের অভাবে, হাসপাতালের চিকিৎসার অভাবে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় আছে । অন্যদিকে চীনে গুন্ডা বদমাসের জায়গা নেই, আর এমন সুযোগও নেই ভোটে জিতে সরকারি কোষাগার লুন্ঠন করবে। ১৯৬০ সালের পর ১৪৫ কোটি নাগরিকের দেশ চীন।
এবার আর্থিক সংকট না মিটলে বিয়েতে সংকট বাড়ে। মানুষ বিয়ের বিকল্প খোঁজে।পরকীয়া খোঁজে। অবৈধ সম্পর্কের দিকে চলে।
একথা সত্য, মহিলারা মানুষ হিসাবে পরাধীন থাকবে কেন? আর পুরুষ একজন মহিলার সারাজীবনের ভরণ পোষণের ভার বা দায়িত্ব কেন নেবে? বা মহিলারা বিয়ে করে পুরুষের সম্পত্তি হাতিয়ে বিচ্ছেদ চাইবে কেন? এরকম অনেক জটিল প্রশ্নের সমাধান সমাজকে করতে হবে।
চলবে।
৩৭ নং পর্ব দুবার ভিন্ন লেখাতে প্রকাশ হয়েছে ফলে এটা ৪০ না হয়ে ৪১ নংপর্ব হবে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।