কাব্যানুশীলনে শ্রী সদ্যোজাত

অসমাপ্ত পরিণীতা
“‘কিছু গোপন সাধ যে বাক্সবন্দি হয়েই থেকে গেলো,
কখনোই পূর্ণতা পেলোনা জীবনের বসন্ত সময়ে !
যেমন আশেপাশের কিছু কুঁড়ি সময়ের আগেই ঝরে পড়ে,ফুল হতে পারেনা..!!””
“”বিবাহ”” নামক শব্দটির সাথে কমবেশি সবাই অতি পরিচিত বা পরিচিতা,
তবু আজ পর্যন্ত এই গোপন অমৃত নদীপথের বিচিত্র সুখের রহস্যটা পুরোপুরিভাবে উন্মোচিত হলোনা বা
আস্বাদনও করা গেলোনা
বোধহয় কোনোদিন যাবেও না….!!
নিয়তি যে পরিমান যন্ত্রণা বা অবহেলা দেয়,
ঠিক সেই পরিমান সহ্য ক্ষমতাটাও দেয়,
এই দুটোই যে ভীষণরকম সহজলভ্য সাধারণ মধ্যবিত্তের অনুভবী বাজারে,
বিন্দুমাত্র বিশ্বাস করা যায়না যাকে,
তাকে এতটা বিশ্বাস কী করে করতাম..??
এই বিরক্তিকর প্রশ্নটাই রোজদিন
ক্ষতয় ক্ষতয় ঘরে বাইরে বহুলাংশে পাষাণ করে তুলছে,
বেঁচে থাকার কুঁড়েঘর অস্তিত্বটা আজও দাঁতে দাঁত চেপে টিকে থাকার রসদ খুঁজে চলেছে,
হালকা শিহরণটুকু হয়তো এখনো আছে বেঁচে..!!!
রাতে দুপুরে যার সাথে রোজ শোয়া বসা ওঠা,
হৃদয়ের প্রতি প্রকোষ্ঠ দিয়ে যাকে বেলা অবেলায় আগলে রাখা,
সাত সমুদ্র তেরোটা নদীর গল্প শোনাবো বলে প্রতিটা মুহূর্ত কে পঞ্চপল্লব দিয়ে সাজিয়ে রাখি..!!
আজ পর্যন্ত একটা পর্ব বলে উঠতে পারলাম না,
এক সময়ের চেনাজানা ঠিকানাগুলো নতুন পথের ভীড়ে হয়তো এখন নিখোঁজ,
হয়তো বা অঢেল একাকীত্বের সন্ধানে সাড়াশব্দহীন ফেরারি অবকাশ..!!
যথাসাধ্য ভালবাসতে যে অনেক খানি সময় লাগে..!!
মনের উপর্যুপরি পরিশ্রম করতে হয় সেখানে,
শুষ্ক শরীর যত তাড়াতাড়ি ঘামে চপচপে হয়,
তেমনি উল্টোরথের নিরপরাধ মনগুলি বিনা বিচারে ছাইচাপা দাবানলে আজীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়..!!
বিচার মিলবে কবে.??সে প্রশ্নটাও আজ মহাকাল মুখি অস্তাচলে..!!
বিচারক কবেই পলাতক, ও আসন আজও শূন্য আজও নিরুত্তর ..!!
যেখানে নরম মাটির চারা নেই,
হালকা মেঘে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি নেই,
সেখানে শেষের কড়ি গুনবে কে..??
মৃদু জোছনার একটু স্পর্শ সুখ আদর করে
কেইবা হাতে করে এনে দেবে..??
সহজিয়া ভালবাসাটা পেলে অনেকদিনের একটা মরা নদী আবারো স্রোত মুখি হতে পারে..সে আর বোঝে কে..??
ভালোবেসে ভালোবাসা নাইবা পেলাম,
তাতে দুঃখ আছে কষ্ট আছে , মৃত্যু নেই ,
কিন্তু যে মানুষটা একদিন বলেছিলো ,
তুমিই অতীত তুমিই সব তুমিই জন্মান্তর.!!
হঠাৎই কোন এক বাঁকের মুখে সেই হৃদয়ের মুখ থেকে যখন অবহেলার অনর্গল উল্কাবৃষ্টি বর্ষিত হয় অকস্মাৎ তারই বুকে,
তা যন্ত্রণারও অধিক কিছু পাওয়া,
সেখানে জীবনের ইতিবৃত্তগুলি দিনগত পাপক্ষয় কিম্বা পাপগত দিনক্ষয় হয়ে ওঠে খুব সহজেই,
সেই ভগ্ন পথে মৃত্যু চাইলেও মৃত্যু মেলে না,
সুখী গৃহকোণে কোণে দগদগে ঘায়ে হরেক রং লাগিয়ে মধ্যবিত্তের নিমিত্ত সংসারী হয়ে ওঠা..!!
সেও এক চরম শাপশাপানিত্ব অন্তহীন রিক্ত প্রাণের যাত্রা ,
এই ভাবেই ঘরে ঘরে ঈশান কোণে পড়ে থাকে প্রখর প্রণয় বিষের জ্বালা..!!
সময় এগিয়েছে বয়সটাও যে থেমে নেই,
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখি,
লুকোনো বলিরেখাগুলি এখন সামনের সারিতে আমারই সরলরেখায় মুখোমুখি,
আমাকে যথাসাধ্য বুকে টেনে ভালবাসার নতুন কোনো সংজ্ঞা বলে দিচ্ছে যে.!!
বেখেয়ালি ছন্দে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি,
সেই পুরনো ডোবাটারই মাঝে এখনো অকারণ সাগর খুঁজে ফিরি,
ছোট্ট পিচ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কতটুকু আকাশই বা দেখা যায়…??
সময় সুযোগ পেলে কাছে দূরের কোনো
নদীর ধারে যদি আসা যেত,
সেখানে আমার নীল নৈসর্গিক পৃথিবীটা
অযাচিতভাবে সুখের প্রহর গুনে চলেছে.!!
বাউল টানে আমারই অপেক্ষাতে,,
তোমার গায়ে গা লাগিয়ে দুলতে যে বড় ভালো লাগে,
তোমার নির্জনতা প্রিয় শরীরের উষ্ণতাটুকু মেখে,
প্রকৃতির কাছে গেলে মনটাও যে প্রকৃতিই হয়ে ওঠে,
ভালো থাকার গল্পটা নতুন কিছু নয়,
চেনাজানা ঝিল কিম্বা অদূরে কোথাও কোনো খরস্রোতার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে নিজের সাথে নিজের আমরণ সংলাপের ঝড়,
মরণদশা শান্তনু প্রেমটাও মাঝেমধ্যে একটু আধটু ঝিলিক দেয় বইকি,
মেরুদণ্ডহীন প্রতিশ্রুতি একটা পরিষ্কার সকাল দিতে পেরেছে কখনো…??
“ভালবাসি ভালবেসো”এই পবিত্র পীঠের সেতুপথে সহমরণের যাত্রীই বা কজন..??
মরমের রাঙামাটি সুরে স্বরলিপিতে সবই আসল সবই নকল…
কে বলেছে তোমায় তুমি সমাপ্তি বালুচর.? কোণে কোণে আপাদমস্তক প্রাচীন..??
পেরিয়ে আসা ভাঙা উজান গুলো জানে ;
দিনলিপির প্রতি সাদা পাতায় তুমি আজও সমকালীন….
হঠাৎ মরুঝড়েও দিক হারাবে না তুমি ;
রোদে ঝড়ে জলে আরো বেশি মাখামাখি যদি হও,সে তো আরও অনেক খানি পাওয়া,
ফুরফুরে চাঁদের হাট বসেছে তোমার বাড়ির চিলেকোঠাতে,
যেখানে শেষ বিকেলের গোধূলিরা আগের মতন নিশ্চুপে কাঁদেনা,
রাত গভীর হলেই তোমার ভালবাসারা জোছনার মতন অঝোরে ঝরে সেখানে,
সেও যে থাকতে চায় ওই পশ্চিমের সোনালি মেঘের সিংহদরজা আগলে সংগোপনে,
তোমার সাথে যাব রাতের মুক্ত অভিসারে,
তোমার নির্জনতা প্রিয় শরীরের উষ্ণতাটুকু মেখে,
প্রকৃতির কাছে গেলে মনটাও যে প্রকৃতিই হয়ে ওঠে,
এইতো সেদিন কে যেন বিড়বিড় করে আপন মনেই বলছিল কতকিছু,
বৈবাহিক সুখের মধুময় দুর্গন্ধটা দিনদিন বেড়েই চলেছে,
অনিচ্ছার সহবাস আর মিথ্যে আশ্বাস এই নিয়েই তো ভরপেট সংসার..!!
দিনান্তের অসহায় পুরুষগুলি সারাজীবনে
এতটুকু শান্তি পায়না..!!
সাধারণ মেয়ে মানুষের লুকোনো
জ্বালাটাও কেউ বোঝে না,জানতেও চায়না..!!
মনের মানুষ সুখের ঘর গর্ভের সন্তান সবই তথৈবচ পুরস্কার ,
সবার কপালে সব জোটেনা..!!
যা কিছু থাকে মনের গভীরে, ইচ্ছেমত অনুভব করা গেলেও
তাকে ছোঁয়ার আস্বাদনটা অধরাই থেকে যায়,
মুখ মন একটা সময় পরে দুই পথের সহযাত্রী হয়ে ওঠে,
এক সুললিত সর্বজয়ী মরণই কিন্তু পারে ওপারের সর্বস্বটুকু এনে দিতে..!!
ঘরে ঘরে ঈশানকোণে পড়ে থাকে নিষ্ঠুর প্রণয় বিষের জ্বালা,,
জল শুকিয়ে গেছে অনেকটাই,
তবুও বিকেল পড়লেই সান বাঁধানো ঘাটে গিয়ে বসি।
নান্দনিক ভালবাসাগুলোকে ঘর বোঝাই করে কি লাভ!
যেখানে সধবার সিঁথি বিধবার তিথি প্রান্ত ধূসর নীলে মিলেমিশে নিরাকার একাকার।।