|| অণুগল্প ১-বৈশাখে || বিশেষ সংখ্যায় শিল্পী নাজনীন
by
·
Published
· Updated
ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই, ছোট সে তরী
গাড়িটা শম্বুক গতিতে এগোচ্ছে। ড্রাইভার বিরক্ত। উদ্দেশ্যহীন এই ছুটাছুটিতে দ্বিধাগ্রস্ত। বারবার জানতে চাইছে আসলে সে কোন দিকে যাবে। বাবার বুকের ওঠা-নামা ক্রমশ বাড়ছে। গলার মধ্যে ঘড়ঘড় শব্দটা জোরালো হচ্ছে আরও। মাছের মতো হা করে একটু অম্লজান টেনে নেয়ার এই প্রাণান্তকর যুদ্ধে বাবা হেরে যাচ্ছে। বাবার হাতটা শক্ত করে ধরে শুকনো চোখে সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। বাইরে লাল-নীল আলোর দিপাবলী। শহরটা হাসছে। কোথায় কার বাবার ফুসফুস ফেটে যাচ্ছে একরত্তি অম্লজান তেষ্টায় তাতে কিচ্ছু এসে যায় না তার। তার কিচ্ছু এসে যায় না সদ্য কোভিড-উনিশে মা হারানো কোনো সন্তানের একই রোগে আক্রান্ত বাবাকে নিয়ে হন্যে হয়ে শহরময় এই ব্যর্থ ছুটে চলায়। পরিচিত, অপরিচিত কাউকে বাকি রাখিনি। মিনতি করেছি। ভিক্ষে চেয়েছি। আছে? ওগো, তোমাদের কারও খোঁজে কি আছে একটি আইসিইউ বেড? মাত্র একটি? নেই? তোমাদের শহরে এত জৌলুশ, এত এত ক্লাব, মার্কেট, রেস্তোঁরা, এতসব চোখ ধাঁধানো বাহারি স্থাপনা, অথচ একটা আইসিইউ বেড খালি নেই তোমাদের!
আছে। উঁচুতলার মানুষদের জন্য। আমরা নীচুতলার। ছোটলোক। বাবা শান্ত এখন। নীরব। বাবার আর আইসিইউ প্রয়োজন নেই। ড্রাইভার গাড়ি ঘুরিয়ে নিচ্ছে। বাইরে আলো। বাইরে পয়লা বৈশাখ।