কবিতায় এম.জে মামুন

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম  জেলার মীরসরাইতে জন্মগ্রহণ করেন। যিনি ফুল প্রকৃত,নদী,সমসাময়িক জনজীবনের ঘটনা গুলো কবিতায় সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করেন।কবিতায় লেখে যাচ্ছেন দুর্বিষহ জীবনের করুণ আর্তনাদের কথা বারবার।

১। তোমাকে দেখার পর

তোমাকে দেখার পর কি রকম পাল্টে গেছি আমি,
উদাস উদাস ভাঙাচোরা হয়ে পড়ে আছি ঘরের এক কোণে।
যে প্রেম মাঝ পথে হাঁটু গেড়ে বসে গিয়েছিলো,
সে প্রেম আজ উঠে দাঁড়িয়েছে
দ্বিগুণ উৎসাহে।
তোমার সান্নিধ্য হয়ে ওঠে কবিতার আসর,
তোমার কাজল মাখা প্রতিটি চাহনিতে মাদকতা,ফোটে ভাসাপদ্ম।
তোমাকে দেখার পর মরুতে সৃষ্টি হয়েছে
শতধারা ঝর্ণা,
পাশ ঘেঁষে সৃষ্টি হতে থাকে হরিৎ পুষ্পোদ্যান।
তুমি যখন আড়াল হও,
পৃথিবী ঢেকে যায় মর্ত্যের অমানিশাতে,
মধুময় মধ্যাহ্ন ভেসে যায় গাঢ় ঝিম ধরা আধারে,
চারদিক ঘ্রাণে মাতাল পুষ্পোদ্যান মুহূর্তেই
মরুতে আছড়ে পড়ে।
তোমাকে দেখার পর,
শিল্পী এঁকেছে সেই বিখ্যাত মোনালিসা,
নদী হামাগুড়ি দিতে দিতে খুঁজে পেয়েছে
গন্তব্য,
তোমাকে দেখার পর পাল্টে যেতে দেখেছি নদীর গতিপথ,
যে জলন্ত আগ্নেয়গিরি লাভা উদগ্রীব করার কথা ছিল সে তা করে নি,
তোমাকে দেখার পর,
টাপিক সিগনাল ভুলে জ্যাম পাকিয়ে দিয়েছি রাস্তায় রাস্তায়
নৌকার মাস্তুল ফেলে ভেসে রয়েছি নির্জন সমুদ্রের মাঝে।
তোমাকে দেখার পর;
তিক্তা পেয়েছে অমৃতের সূরাহা।
জীর্ণ মাটির দেউল সেজেছে পুষ্পমাল্যে,
শতাব্দীর অমীমাংসিত কোন্দলের গা বেয়ে নেমেছে মীমাংসার ফোয়ারা।
গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহে উড়নচণ্ডী বাউলের একতারায় বেজেছে শীতল ছায়া।
তোমার স্পর্শে শব্দকে দেখেছি রাবণের বিরুদ্ধে তলোয়ারের ঝংকার তুলতে,
কবিতার পদভারে বিশ্বময় বিদ্রোহীর কম্পন সৃষ্টি করতে,
খুচরো শব্দে নির্মিত কবিতা তোমার স্পর্শে রাইফেলের মত বেজেছে,
ব্যর্থ প্রেমিক খুঁজে পেয়েছিল আলোর লহর,
কখনো দেখেছি কবিতার জন্য তোমাকে ভেঙে যেতে,ছেঁড়া ফাঁটা হয়ে যেতে
মুছে যেতে দেখছি রাঙা সিঁদুর,
ভেঙে গেছে হাতের রঙবেরঙের কাঁকন।
দেখেছি অরুন্ধতী হয়ে বিস্তীর্ণ ইউরেশিয়ান অঞ্চলে আগমন করতে অগ্নিবীণা নিয়ে।
তোমার প্রতিটি কথাই সৃষ্টি করে কাব্যের নদী,
তোমার হাসিতে ঝরে বসন্ত,
থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়া।
তাই তোমার আঁচলে বেঁধে নিয়েছি
আমার এলোমেলো জীবনের উপাখ্যান।

২। দেশের দুশমন

পেটুক যত জুটছে শালা
উচ্চ উঁচু পর্যায়ে,
ধান্দায় অতি রং তামাশা
নিথর মৃত্যু শয্যায়ে।
জীবন নিয়ে জুয়া খেলে
ক্রোরের স্তুপ তার,
মা মাটির সাথে বেইমানি
চলবে কতকাল আর?
সাধু জুটবে যত চোরের পক্ষে
তাদের গাইবে যত গান,
বরং মায়ের বুকে বাড়বে ক্ষত
বিশ্বে ধুলিস্যাৎ দেশের মান।
যে অত্যাচারীর সাফাই গায়
সেও নয় সাধু জন,
তার মুখটাও মুখোশে ঢাকা
শালা দেশের দুশমন।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।