মেহেফিল -এ- শায়র শুভ আহমেদ

জন্ম : ০৬ জানুয়ারি, ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দ, মাওয়া, মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ। শিক্ষা : বিএ, বি এস এস, ৫ম সেমিস্টার, অধ্যয়নরত। লেখালেখি : কবিতা এবং উপন্যাস। প্রকাশিত গ্রন্থ : অশুদ্ধ ব্যারোমিটার

“জন্ম উত্তরের পরের গল্প”

সেটা ছিল আগস্টের সন্ধ্যা।
আমার”মা” প্রাত্যহিক যুদ্ধ শেষে, তাঁর প্রিয় পালঙ্কে চড়লেন
এবং ভাবলেন ইতিমধ্যে এবাদতখানায় মাগরিবও শেষ হয়ে এলো
কিন্তু আমার পরকালের কি হবে!
আমি তাঁর ভারাক্রান্ত মুখ দেখে বললাম, বিচলিত হবেন না শ্রদ্ধেয়া!
মৃত্যু এতো সহজ জিনিস নয়। আপনার এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি আছে
আমার কথায় “মা” দুঃখ পেলেন, এবং সে এবার সত্যিই দুঃখযুক্ত হয়ে শুয়ে পড়লেন।

কিছুক্ষণ বাদে আমার “মা” হকচকিয়ে উঠলেন, তুমি কি কিছু শুনতে পাচ্ছো সোনা?
আমি তাঁকে শান্তনায় বললাম, আপনার ঘরে নিশ্চয় ডাকাত আসবেন না
কেননা, এই উন্নয়নশীল দেশের দারিদ্র সীমার নিচে অবস্থান করছি আমরা
ঐ দেখুন !, ছুঁচো ও আরশোলা কেমন নির্বিঘ্নে ছুটোছুটি করছে
সুতরাং এখানে ডাকাত নয়, শেয়াল আসতে পারে হরহামেশায়, মাননীয়া “মা”
আমার “মা” উতলা হলেন আর বললেন, এই ভাবনার বেগ তোমায় নিয়ে আমার ছোট্ট পাখি
কারণ, তুমি একটি নিম্নশ্রেণির আসনে বসে থাকো, এতে আমার চিন্তাযুক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক নয় কী ?
আর এটা অবশ্যই শিকার যোগ্য যে, তুমি ইদানিং রাতে ভালো দেখো না।
অতএব, আমাদের একটি বিশেষ আলোর প্রয়োজন এখন

হায় খোদা, হায়, আমার পালঙ্কের নিচে স্বয়ং যমরাজ শুয়ে আছেন
একটি কালো সাপ!, একটি কালো সাপ!, বলে চেঁচাতে লাগলেন আমার “মা”
অল্পক্ষণের মধ্যেই আমাদের বাড়িটি ভরে গেলেন। তাদের প্রত্যেকের হাতেই ছিল লাঠি
কিন্তু তারা পৃথক পৃথক ভাবে ঘরে আসছে এবং যৌথ হয়ে আলোচনা করছে
এই মূল্যবান শক্তিশালী ক্ষমতাসীন সাপটি মারার গৌরব কে কতটুকু পাবে।
আমার “মা” আমায় বুকে চেপে বললেন, এই উপকারের সকল প্রশংসা আপনাদের
অনুগ্রহপূর্বক আর কাল বিলম্ব করবেন না, মহোদয়।

কালো সাপটি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এবং আমার মায়ের শ্রবণে
ফিস ফিস করে বললেন, রাত ফুরলেই আসবে একটি “সাদা সাপ”
চার সন্তানের ঘরণী, গৃহবন্ধু হয়ে। আপনার এখনো অনেক কিছু দেখার বাকি আছে প্রিয় জননী।।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।