গুচ্ছকবিতায় অচিন্ত্য রায়

ডাঁশ

লক্ষ্য করেছো কী
ফতফত ডানার শব্দে ডাঁশ
ঘুরছে আমাদের চারপাশে
পাছায় বদরক্তের কালচে মানচিত্র।
যন্ত্রণা কাঁটার মতো ফুকে আছে বুকে।
তার উপর ডাঁশেদের হুল।
এভাবে চ্যাঁট ছুড়তে ছুড়তে কতদিন?
নিজেদের সুরক্ষা বাজয় রাখবে?
হাতের তালিকে খুলে রাখো সতর্ক।
ওরা বসলেই তালি বাজিয়ে দ্যাখো-
পায়ের কাছে পড়ে আছে শরীর।
ডানার শব্দ নিস্তব্ধ।

মাছি

অজস্র মাছি আমাদের ঘিরে ধরেছে।
কখনো মুখের উপর বসে,
কখনো শরীর ও হাতে পায়ে…
আমরা মৃত নাকি ভীষণ চিন্তা হয়।
দিব্যি কেটে যায় রাত, কঙ্কাল পৃথিবীতে।
মাছিরাও আমাদের আবর্জনা ভেবে নেয়
ধোঁয়ার মতো দল বেঁধে বনবন শব্দে
আমাদিকে বসতহীন করতে এগিয়ে আসে
লক্ষ্য স্থির রোখো সন্তর্পন।
কর্পোরেশনের দেওয় ফিনাইল নিয়ে তৈরি থেকও-
ওরা মরবে বেরেহেমের মতো মরবে।

কিছু শোক

অজান্তেই কিছু শোক আঙুলের গিটেগিটে হেঁটে বেড়ায়
চমকে উঠি রক্তের শৈশব রঙ দেখে
পাঁজরে হৃৎপিণ্ড ছটফট করে
ঘরও যে হাঁটতে হাঁটতে চলে যায়
প্রতিনিয়ত দায়বদ্ধতা এড়িয়ে…
আমিই কেবল অন্ধকার খুঁজি
যন্ত্রণার কামড় থেকে বাঁচতে।
সূর্যের আলোকে প্রায়শই মনে হয়
সমাজের দৈনিক অভিশাপ।

ঘর

ঘর একরকম কোলাহল শহর
ঘুঘু ডাকা ভোরের পর থেকে
জানজট বাড়তেই থাকে…
কতরকম স্নেহময়ী শব্দ ঘুরে বেড়ায়
দুয়ার বাকুল উঠানে…
অনাবিল হাঁকডাক পায়রার মতো
খুঁটে খায় মায়ার খুদকুঁড়ো
পায়েপায়ে হেঁটে আসে নিস্তব্ধ বারান্দা
ঘর, বর্ণমালা। একপ্রকার বাজনাও।
যার ভেতরকার বোলের নাম ভালোবাসা।

চোখর নেশা

আগুন পলাশে মিশে গেছে
শিমুলের ডালে বসে আছে রক্ত
আমি বসন্ত দেখতে পাচ্ছি না
দেখছি উলঙ্গ শাসন।
ইতিহাস আকাশ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে
ডানায় পিস্তলের অনেক গল্প।
রাষ্ট্র কী কোনদিন সাবালক হবেনা?
নাবালকই থেকে যাবে?
অথচ দেখো চিলেরা বেমালুম ঘুরছে
শিকারের ধান্দায়, মহাশূন্যে ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।