জন্ম- ১৯৬৭, বরানগর।
বর্তমানে দার্জিলিং জেলার মিরিক মহকুমার উপশাসক ও উপসমাহর্তা পদে আসীন।
চাকরীসূত্রে ও দৈনন্দিন কাজের অভিজ্ঞতায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের সমস্যা সমাধানে তাঁর লেখনী সোচ্চার।
জেনেটিক্স ও মহা প্রাচীন ভারত
(যে লোক জেনেটিক্স আর ইতিহাস কিছুই জানে না, এটা তেমন লোকের কল্পনা বিলাস। রামগরুড়ের ছানাদের অপাঠ্য)
১১
অহল্যার মতো জ্যান্ত মেয়েকে না মেরে ফেলে পাথর বানিয়ে রেখেদিলেন গৌতম মুনি । আর ইন্দ্রের গায়ে বানিয়ে দিলেন এক হাজারটি যোনি । তার পর সেই যোনি গুলি হয়ে গেল চোখ। এটা নিশ্চয় মহা প্রাচীন ভারতে শল্য চিকিৎসার চমৎকার ।
এবার মহা প্রাচীন ভারতের আর এক মেয়ের সাথে আর এক মহা মুনির প্রেমের কথা বলি। সেই মুনির নাম পরাশর।
তো পরাশর যার প্রেমে, মানে দৈহিক টানে মজলেন, (আমি প্লেটোনিক বা অলোক সম্ভব প্রেমের কথা বলছি না। স্বর্গীয় , মানে দেবতাদের প্রেমের কথা বলছি। সেই সূর্য, ইন্দ্র , সেই সব অতি কামুক দেবতাদের গল্প।) সেই অঘটন ঘটন পটীয়সীর নাম সত্যবতী। তো আমাদের সত্যবতী হলেন রাজার মেয়ে। তবে রাজাটি তেমন কুলীন নন, তিনি মৎস্য রাজ। মৎস্য রাজকন্যা সত্যবতী স্মার্ট মেয়ে। রীতিমতো নৌকা চালায়। চোখ মুখের ডৌল ভারি চমৎকার । তো পরাশর তারই প্রেমে, মানে দৈহিক টানে মজলেন ।
একদিন সত্যবতী নৌকা বাইছে। পরাশর তার নৌকায় পার হবেন। মাঝ নদীতে এসে পরাশর তার প্রেমের, মানে স্বর্গীয় প্রেম, অর্থাৎ নিপাট যৌন আবেদন পেশ করে বসলেন সত্যবতীর কাছে। সত্যবতী স্মার্ট মেয়ে। দেহ নিয়ে তার অতো ঘিন ঘিনানি ছিল না। আর মেয়েটি বেশ একটু প্র্যাগম্যাটিক গোছের ছিল। সে দেখল দেহ যদি না দিই, তা হলে ব্যাটা বামুন আমায় ভস্ম করে দেবে বা পাথর বানিয়ে দেবে। ওরা হল গিয়ে মোর ইকুয়ালের দল। ওরা যা করবে সেটাই ঠিক । মুনি ঋষিদের তখন সিণ্ডিকেট রাজ চলছে। তো চালাক চতুর মৎস্য রাজ কন্যা পরাশরকে বললো যে দ্যাখো আমি মেছোদের ঘরের মেয়ে কি না, আমার গায়ে মাছের ভারি গন্ধ। তুমি আমার গায়ে ভালো গন্ধ করে দিও তো। যৌন কামনায় অস্থির পরাশর মুনি বললেন হবে হবে সব হবে। আগে তুমি আমায় দেহ দাও। সত্যবতী বলল আর শোনো ইয়ে, মানে তোমার সঙ্গে তো আমায় যৌন বিহার করতে হবে, কিন্তু তার পরে আমার বিয়ে হবে কি করে? আমি তো সঙ্গমের পর আর অক্ষত যোনি থাকব না। তো তুমি আমায় আবার নিখুঁত কুমারীটি , মানে একেবারে ভার্জিন মেয়েটি করে দিও। কামতাড়নায় অস্থির মুনি পরাশর তাতেও রাজি। তিনি একেবারে ছটফট করছেন যৌন তাড়নায়।
এমন সময় সত্যবতী বললো, দিনের আলো ফটফট করছে, এই সময় এই রকম ফাঁকা যায়গায় আমি গা খুলি কি করে বল তো ঠাকুর? আমি কি ভাদ্র মাসের কুকুর বেড়াল?
মুনি তখন যোগ বলে ঝঞ্ঝা সৃষ্টি করে তার কাঙ্খিত আড়াল তৈরি করে দিলেন। যৌন তৃপ্তির পর সত্যবতীর গর্ভাধান হল। জন্ম নিলেন মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাস। সেই ব্যাস যিনি মহাভারত লিখবেন। মা সত্যবতীর অনুরোধে ধৃতরাষ্ট্র ও পাণ্ডুর জন্ম দেবেন।
ব্যাস মানে বেদের যিনি বিভাগ করেছিলেন। এমন আরো কয়েকজন ব্যাস ছিলেন।