এটাই একমাত্র উৎসব যেটা আমার কাছে শ্রেষ্ঠ , এই পুজোয় জাতি ভেদাভেদ নেই , শিখ ড্রাইভারের সাথে মুসলিম খালাসিকে দেখলাম গাড়ি ধোওয়াচ্ছে হাসি মুখে । জার্মান কারখানার অস্ট্রেলিয়ান টেকনিশিয়ান কে দেখলাম দশকর্মর মাল কিনতে গেল ।
এই পুজোয় কেউ কিছু চায়না তেমন , না নতুন পোশাক না প্রেমিকার ঠাকুর দেখার বায়না ।
আগে আমরা তিনদিন আগে থেকে কাঁচ গুড়ো করতাম মায়ের থেকে ছেঁড়া কাপড় নিয়ে চালুনি করতাম , তারপর রাত জেগে লাইপপোস্ট দখল করে সূতোয় মাঞ্জা । এখন অবশ্য এত হ্যাপা নেই , সব রেডিমেড । সকালে উঠেই মাংস কষানোর ব্যাবস্থা , কষে গেলেই দারু , চোখে নীল সানগ্লাস আকাশে ঘুড়ি লটস অফ সেলফি ।
বিশ্বকম্মা পুজোতেই কচি ছেলেটা বিয়ার দিয়ে শুরু করে ভদকা হয়ে হুইস্কি তারপর রাম ছুঁয়ে বাংলায় নেমে আসে ।
মা বাবা গুলো আর আগের মত বকে মারেনা । বছরের কয়েকটা দিন ছাড় দেয় যেমন দোল আর বিশ্বকম্মা । আসলে এতগুলো টাকা ইনভেস্ট করে বসে থাকে ওদের পড়াশোনায় যদি রাগ করে চলে যায় ক্যাশ কি করে হবে । তাছাড়াও ওনার ছেলেতো ভালোই বন্ধু গুলোই বাজে ।
পালেরাও বিশ্বকম্মা বানিয়ে খুশি , যা বিক্রি হোলো হোলো না হলে পেছন থেকে হাতি সরিয়ে ময়ুর সামনে দিয়ে দুগ্গি পুজোয় এটাকেই কেতু বলে চালিয়ে দেবে ।
সব থেকে বড়ো কথা বাবার ভাষা জ্ঞান আর ডান্স সেন্স । যা খুশি গান চালাও বাবা খুশ । বাংলা হিন্দি পাঞ্জাবি ভোজপুরি ইংরেজি এমনকি “আমিতো পাশিতা আঃ আঃ ” তাও চলে । কি নস্টালজিক গান সব আর যখন নাচ শুরু হয় ” তাম্মা তাম্মা লোগে ” বা ” আই ওয়ান্ট টু হিট সাম বডি….. মুঝে তোড় দো মুঝে মোড় দো …..মেরে বাহোকো তুম মড়ড়ড় দো ” উফফফ আনন্দে আবেগে চোখের জল সামলাতে পারিনা সে নাচ দেখে ।
এ কোনো ফুটপাতিয়া বাবা নয় , কোনও রাস্তার মোড় বা বটতলায় পার্মানেন্ট মন্দির নেই । তবু বিশ্বকম্মা মানে ফুল মনোপলি কিন্তু কাজ একঘর । যদি ওকে দিয়ে ব্রিজ বাননো হোতো জিরো মেইনটেনেন্স ফুল গ্যারান্টি ।
বিসর্জনের ফাংশন
পাড়ার একটা চাটনি কারখানায় , গায়িকা গাইছেন । বাঙালি গুলো আবদার করলো ” গোল প্রিন্টের শাড়ি পড়ে গড়িয়াহাটের মোড়ে….” গাইতে হবে
সঙ্গে সঙ্গে আবদার এলো ” যাতারা পরদেশ বালমবা ….
এক চুম্মা
এক চুম্মা
এক চুম্মাতো দেতা যা ” এরকম বেশ কিছুক্ষন চুম্মা থামলে গড়িয়াহাট আর গড়িয়াহাট থামলে চুম্মার আবদার আসার পর গায়িকা পালিয়ে বাঁচলো । এরপর কিশোর কন্ঠে কুমার রনি এসে ধরলো ” যাবি যেদিন শ্মশান ঘাটে বাঁশের দোলায় চড়ে “