কবিতা চর্চায় সংস্কৃতি বন্দ্যোপাধ্যায়

নৈঃশব্দের শব্দ,স্মৃতি ও শূন্যতা

মুক্ত বাতাসের মত সাবলীল পথ খোঁজে ,কবিতা চায় এক একক আধিপত্য।
আমি কআজ কোনও কবিতা আসছে না।ছন্দরা গোলমেলে,শব্দরা এলোমেলো হয়ে আছে।আসলে কবিতা কারোর হুকুমের দাস নয়।কবিতাবি নই।কবিতার সাধনে আমি সাধক মাত্র।প্রার্থনার মত কবিতার নৈবেদ্যে আমি লীন।আমার বেড়ে ওঠা মফঃস্বলের একটি যৌথ পরিবারে ।মনে পড়ে  শিশুকালে ঠাকুমা সুরে সুরে গাইতেন ,
“আতা গাছে তোতাপাখি
ডালিম গাছে মউ,
এত ডাকি তবু কথা
কও না কেন বউ”।আবার কৈশোরে বাবা কিংবা জ্যেঠুর বিদ্রোহী উচ্চারণ….এইভাবেই কবিতার সঙ্গে আমার সম্পর্ক স্হাপন,আমার কবিতায় যাপন শুরু।
এরপর বয়স বাড়তে থাকে ।কবিতা আমার কাছে ধরা দেয় এক বহমান নদীর মত।আমার আত্মোপলব্ধি,কল্পনারস ও শব্দের প্রয়োগে সেই নদীতে ঢেউ ওঠে।আমি লিখতে থাকি সময়ের স্বপ্ন,হতাশা ,সফলতা ,ব্যর্থতা কিংবা প্রেমের গান।
কবিতা আমার ব্যক্তিগত পরিক্রমা।এক নিজস্ব সফর ,সেই সফরে আমি একজন মুসাফির।কবিতা নিয়ে ভাবতে গিয়ে বার বার মনে হয়েছে কবিতা যেন এক অন্ধকার আকাশে অসংখ্য নক্ষত্রের ছায়াপথ।যে ছায়াপথে ভীড়ের মাঝে কখনও একা কিংবা কখনও একার মধ্য দিয়ে ভীড়ের কাছে যাতায়াত করেছে মন।চেতনা দুলে উঠেছে কোনও এক কবিতার কাছে।আমি যখন পৃথিবীর সবচেয়ে দুখী মানুষ কবিতা আমায় সাহস যুগিয়েছে ঘুরে দাঁড়ানোর।আবার যখন সবচেয়ে সুখী মানুষ তখন সাবধান করেছে।এইভাবে হাসিকান্না,সুখদুঃখে,সাফল্যব্যর্থতায় কবিতা হয়ে উঠেছে আমার প্রিয় বন্ধু।
কবিতা আমার নৈঃশব্দের শব্দ ,আমার স্মৃতি ও শূন্যতা ।কবিতা এমন এক আগুন যাকে বুকে ধারন করে ভালোবাসতে হয়।আবার তাকে চেপে রাখাও যায় না ।বেরোতে না দিলে সে বড় দহে।অন্তরকে ছাড়খার করে তোলে।এই আগুনকে আমি একদিনও চুম্বন না করে থাকতে পারিনা।
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!