স্কুল যাওয়ার পথে কিছু ছেলে আমার এক বন্ধু কে দেখে সিটি বাজিয়ে ছিল৷ বন্ধুটি ঘুরে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ইডিয়েট৷ বখাটে গুলো অট্টহাস্য করে উঠেছিল৷ যথারীতি ক্লাস শুরু হল৷ প্রথমেই বাংলা৷ নাম ডাকা শেষ৷ এবার পড়া শুরু৷ হঠাৎ দেখি বন্ধুটি উঠে দাঁড়িয়ে বললো, দিদি আমাদের স্কুলের সামনে কিছু খারাপ ছেলে বসে থাকে৷ দারোয়ান কে বলে ওদের কে সরিয়ে দেন৷ বন্ধুটি খুব উত্তেজিত হয়ে বললো, আমি ওদের কে বকে দিয়েছি৷ বলেছি,ইডিয়েট৷ মেম গেলেন রেগে৷ কেন? বুঝলাম না৷ বললেন, ইডিয়েট বানান বলতো ইংরাজিতে৷ মেয়েটি ভয় পেয়ে চুপ করে গেল৷ মেম বললেন, যখন তুমি ইংরাজীতে ইডিয়েট বানান বলতে পার না তখন অন্যকে ইডিয়েট বলা কেন৷ সেদিন আমরা চুপ করে বসে ছিলাম৷ সেদিন বুঝে ছিলাম প্রতিবাদ করতে নেই৷
আমার এক কলেজের বন্ধু বলেছিল সে যখন প্রাইমারি স্কুলে পড়তো তখন তার শিক্ষক মশাই তার পিছু পিছু টয়লেটে ঢুকে পড়েছিল৷ সে তার মাকে কথাটা বলায় মা তার মুখ চেপে ধরেছিল৷ বলেছিল, চুপ৷ কাউকে বলবি না৷ এ সব কথা কাউকে বলতে নেই৷ যখন আমার বড় মামার বড় ছেলে আমার সঙ্গে অসভ্যতা করেছিল, তখনও আমার মা সেই এক কথা বলেছিল৷ চুপ৷ কাউকে বলবি না৷ বললে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলব৷
আমি তখন কলেজে৷ সুমনা ছিল আমার খুব ভাল বন্ধু৷ হাসি খুশি প্রাণখোলা এক মেয়ে৷ কলেজে পড়তে পড়তেই প্রেমে পড়ে যায়৷ বেশ কয়েক মাস প্রেম চলতে থাকে৷ তারপর একদিন ছেলেটির হাত ধরে সুমনা পাড়ি দেয়৷ বন্ধু আমার হারিয়ে যায় অন্ধকার এক জগতে৷ কলেজে কিছু মেয়ের গোপন আলোচনায় শুনলাম সুমনাকে আসানসোলের এক হোটেল থেকে পাওয়া গেছে৷ প্রেমিক পুরুষটি পালিয়েছে৷ মাথা গরম হয়ে উঠল৷ মন বলে উঠল প্রতিবাদের একটা ঝড় উঠুক৷
কলেজের বাথরুমে জলের ঝাপটা নিতে নিতে ভেসে উঠল সুমনার মুখ৷ বুক ফাটা কান্না আসছিল৷ চিৎকার করে উঠলাম৷ পর মুহুর্তে নিজের গলা টিপে ধরে বললাম, চুপ, চুপ একদম চুপ৷