• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাবাহিক প্রবন্ধে সম্বুদ্ধ সান্যাল (পর্ব – ৬)

রেস্তোঁরায় ভাগাড় – গুজব, না বিকাশ?

…এবং সপ্তেন্দ্রিয়

বিষয়টা নিয়ে বড় বেশি মাতামাতি হচ্ছে। ওই কী যেন বলে, হ্যাঁ, ভাগাড়ের মাংসের ব্যাপারটা আর কি। তা ভাগাড়ের মাংস বলে কী মাংস নয়? এই যে হরিণের পচা মাংস কোটি কোটি টাকা দামে বিকোচ্ছে তার বেলা? ওই পচা মাংস খাওয়ার জন্য কত বিপ্লবী বনদপ্তরের গুলিতে প্রাণ হারালো তার বেলা? কী চাড্ডিরা, এইবেলা চুপ কেন? সেকুপন্থীরা মিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরু খেয়েছিলো বলে এইভাবে শোধ নেবেন? এই খবর শুনে রাজ্যের বিকাশ আটকে গেছে। মানে এই রাজ্যের বিকাশরঞ্জন বাথরুমে আটকে গেছেন, বেরোনোর নামই নেই। এইভাবে বিকাশকে আটকে দেওয়ার কী সাঙ্ঘাতিক দুরাভিসন্ধি গো-বলয়ের ভাবুন তো?
তবে সত্য বেশিক্ষণ গোপন করা যায় না। এর মধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষিত সম্প্রদায় ভাগাড়ের মাংস খাওয়ার শাস্ত্রীয় বিধি সম্পর্কিত নানা তথ্য বের করে ফেলেছে বেদ-পুঁথি ঘেঁটে। সেগুলি পড়ে নিয়ে নিশ্চিত হন যে ভাগাড়ের মাংস খাওয়া অপরাধের কিছু নয়, সনাতনীমতে তা বৈধ। এতে জাত যাওয়ার কোনও রকম সম্ভাবনা নেই। শকুনে খায়, আপনি কেন খাবেন, এ জাতীয় বৈষম্যবাদী চিন্তা মাথার থেকে এইবেলা ঝেড়ে ফেলুন দেখি। সামনে চমৎকার সুযোগ এসেছে নিজেকে সাম্যবাদী প্রমাণ করার। সুযোগ অবহেলা করা ঠিক হবে না। ধর্মতলার মোড়ে শুনছি জনে জনে ভাগাড়ের মাংস খাইয়ে এই মধ্যযুগীয় প্রথার অবসান ঘটাতে উদ্যমী হয়েছে এক সংস্থা।
রহমতাদুল্লাহ্‌ (সঃ চাঃ পাঃ কাঃ) তাঁর খবিশনামা বইয়ের মাঝের দিকে ডান দিকের পাতায় উপর থেকে চার নম্বর অনুচ্ছেদে দুশো সাতাশি নম্বর ফতোয়ায় (মুদ্রক পৃষ্ঠা নম্বর বসাতে ভুলে গেছিলেন ছাপানোর সময়, তাই উল্লেখ করা গেল না) জানিয়েছেন, “অলমাসলাখাবিদুলিল্লাহ, মোর্গাবাদ, আল খাসখাবার-এ-আজ-চিল্লা”। অর্থ বিশ্লেষণ করি। ‘অল’ শব্দার্থ সব, তেমনি মাস – মাংস, খাবি – খাওয়া। অর্থাৎ আল্লার নামে সমস্ত মাংস খাওয়া জায়েজ। মোর্গাবাদ, অর্থাৎ মুর্গী বাদ। এই উক্তিটির শেষটুকুর প্রতি গো-বলয় থেকে আক্রমণ শানানো হয়েছে যেখানে এর আক্ষরিক অর্থ হলো, আজকের স্পেশাল খাবারে আনন্দে সবাই চিল্লা। কিন্তু গোবাদীরা উঠে পড়ে লেগেছে এই চিল্লা শব্দটিকে ‘চিল লা’-এর মতো অনর্থ করে। তাদের বক্তব্য মুর্গী বাদ দিয়ে চিল প্রজাতিকে ভক্ষণ করার ফরমান দিয়েছেন রহমতাদুল্লাহ্‌ (সঃ চাঃ পাঃ কাঃ), কিন্তু আদৌ এটা সঠিক নয়। তাদের কথায় কর্ণপাত না করাই শ্রেয়। বিধর্মীরা অনেকেই অনেক কিছু বলে থাকে। তাদের বক্তব্য হলো এই হ্যানো ঐশ্লামিক খাদ্যাভ্যাসে চিল-শকুন প্রভৃতি ভাগাড়ে প্রজাতি উধাও হয়ে যাচ্ছে, যা সঠিক তথ্য নয়। তার উপর শকুন বঙ্গজীবনে কোনও কার্যকরী প্রজাতি নয় এই মুহূর্তে। ভাগাড়ের মাংস বঙ্গসমাজে সুপরিপাচ্য হওয়ার দরুণ শকুন ও চিলের প্রয়োজনীয়তা নেই বললেই চলে। এছাড়া ডিএসএরআরধারীদেরও শকুনে বিশেষ ভক্তি দেখা যায় না, বাচ্চাদেরও খুব একটা উৎসাহ নেই যে তাকে চিড়িয়াখানায় পোষা যায়। তা ছাড়াও চিল প্রজাতি এত উঁচুতে ওঠে যে তাকে সুস্পষ্টভাবে ধরতে অত দামী লেন্স কেনা ছাপোষা বাঙালীর পকেটবাহুল্য ও সাংস্কৃতিক বাতুলতার সমান।
এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে নেপোলিয়নের যুদ্ধের উল্লেখ করা যেতে পারে। যদিও ইতিহাস কিছুই প্রমাণ করে না বলে মার্ক্স এবং আল্লা উভয়েরই ফরমান আছে, তাঁরাই সর্বপ্রামান্য, আল-শাহীদ। তবু কাফির গো-বলয়জাতরা কেবলই অতীতচারণ টেনে আনে, সুতরাং তাদের অস্ত্রেই আমার এই অবতারণা। যদিও আল-হাক-এর কেতাব ব্যতীত কোনও কেতাবই সর্বসত্য নয়, তারা আমার এই প্রমাণের উপর রেফারেন্স দিয়ে হতোদ্যম করার চেষ্টা করতেই পারে। তবু আমি টেনে আনি নেপোলিয়নের রাশিয়া আক্রমণ প্রসঙ্গ যখন অপরাজেয় নেপোলিয়ন সেনাবাহিনীকে রাশিয়া সাইবেরিয়া পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়ে সাঁড়াশি চাপে হারিয়েছিল। এলাকার পর এলাকা ফসল জ্বালিয়ে দিয়ে খাদ্যসংকট তৈরি করেছিল রাশিয়ান কমিউনিস্ট সেনারা, যার ফলে না খেতে পেয়ে বোরোদিনোর যুদ্ধে নেপোবাহিনী গেলো হেরে। তা ঠারেঠোরে আমরা সবাই বুঝতে পারছি যে এই বাঙালি জাতির মধ্যে খাদ্যসংকট তৈরি করাই গো-বলয়ের লক্ষ্য। এর ফলে দুগ্ধজাত খাদ্যের প্রাচুর্য বৃদ্ধি পাবে প্রোটিন জোগাতে। ফলত ব্যবসা। সঙ্গে দেশের সরকারও লাগাতার মদত দিয়ে চলেছে এই ষড়যন্ত্রে। সারা ভারতে চলছে বেনিয়া গুজরাটি ফ্যাসীবাদী আগ্রাসন।
গত কয়েকবছরে যারা লাগাতার রেস্টুরেন্টে গিয়ে খচাখচ ছবি তুলে ইন্সটাগ্রামে পোস্টিয়েছিলেন তারা হতোদ্যম হয়ে পড়বেন না। দেশের জন্য এই পরিবর্তন ও সাম্যবাদীতার সাক্ষী হিসেবে আপনাদের স্মরণ করবে ভবিষ্যত প্রজন্ম। গতকাল আমি নিজে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেয়েছি এবং তাদের ফরাসী আঘ্রাণে সুবাসিত হয়েছি। নিমন্ত্রণসূত্রেই সেখানে যাওয়া, নইলে ঝটজলদি বড় রেস্তোঁরায় খাওয়ার সামর্থ পার্টিফাণ্ডে দান ব্যতীত এই হ্যানো খরচ আমার মতো শ্রমিক মজদুরদের সামর্থের বাইরে। ভাগাড়ের মাংসে যেসব পোকামাকরের উৎপত্তি হয় তা পরীক্ষা করে দেখা গেছে প্রোটিনের আদর্শ উৎস, দুর্বল শ্রমিক-মজদুরদের সংস্থান। এতে তাদের গায়ে আসবে বল, শক্তি হবে দ্বিগুন। মূল্য? মাত্র বিনামূল্য। রেস্তোঁরায় খাবারের মূল্য নেমে যাওয়ায় হাইপ হবে দুর্দান্ত। ধরা যাক আর্সালানের বিরিয়ানি স্বাদে ভাগারের মাংস। সঙ্গে স্টার্টার ফ্রী। মূল্য নেমে আসবে এক ঝটকায়। বাড়ি বসে সটাসট অর্ডার করে ফটাফট খেয়ে নিতেও পারেন। তবে যাতায়াত মূল্য খাদ্য মূল্যের তুলনায় বেশি হবে। পাহাড় প্রমাণ ভিড়ের চাপে রেস্তোঁরা ব্যবসার উন্নতি পরিসংখ্যান বলছে চব্বিশ গুণ বাড়বে। ফলে বেকার সমস্যার সমাধান। রেস্তোঁরা কর্তৃপক্ষকে এই পরিকল্পনার কথা জানানোয় তারা এটা পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছে, পরের মাসে বৈঠকে অনুমোদিত হয়ে যাবে আশাকরি।
হতোদ্যম না হতে রাজ্যের তরফে একখানি বিদ্বজনসমাবেশ বসিয়েছিলো এবিপি, দেখা যাক তার ঘন্টাখানেকের অংশ –
সুমন – নমস্কার, শুরু করছি আজকের ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন। আজকের বিষয় হলো রাজ্যের খাদ্য সংকটে ভাগাড়ের ভূমিকা। আমাদের সঙ্গে আছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল মুখ্যসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজকবি সুবোধ সরকার, মহাকবি জয় গোস্বামী, বিরোধী দলপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী আইনজীবী জয়প্রকাশ মজুমদার, কমিউনিস্ট নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র এবং সঙ্গে থাকছেন পরিচালক অরিন্দম শীল, বিশিষ্ট সমাজকর্মী অনুব্রত মণ্ডল, কংগ্রেস কর্মী অধীর চৌধুরী, বিশিষ্ট নারীবাদী গায়িকা সুকন্যা চৌধুরী, অভিনেত্রী পাওলি দাম দেব ও চিকিৎসক অসিতবরণ সরকার। এছাড়াও প্রখ্যাত আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য তার শারীরিক অসুবিধার কারণে আসতে পারেননি বলে বার্তা পাঠিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রিয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আমাদের সঙ্গে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে থাকবেন। তাহলে আজকের মতো ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন শুরু করা যাক একটা ছোট্ট বিরতির পর। ফিরে আসছি, সঙ্গে থাকুন।
নানারকম গ্রাফিক অ্যানিমেশনের ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে উঠলো থিম স্কোর।
সুমন – ফিরে আসলাম ঘন্টাখানের সঙ্গে সুমনে। প্রসঙ্গে ছিলাম রাজ্যের খাদ্যসংকটে ভাগাড়ের ভুমিকা। তাহলে শুরু করা যাক এই প্রসঙ্গে জয় গোস্বামীর একটি কবিতা পাঠ এবং তার বক্তব্যের মাধ্যমে।
জয় গোস্বামী – কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে, তুমি আমার সামনে দাড়ালেই আমি
তোমার ভিতরে একটা তন্দুরি চিকেন দেখতে পাই।
তন্দুর মশলায় একটা মৃতদেহ ঢাকা দেওয়া আছে।
অনেকদিন ধ’রে আছে। কিন্তু আশ্চর্য যে
এই মৃতদেহ জল, বাতাস, রৌদ্র ও সকলপ্রকার
কীট-বীজাণুকে প্রতিরোধ করতে পারে। এর পচন নেই।
বন্য প্রাণীরাও এর কাছে ঘেঁষে না।
রাতে আলো বেরোয় এর গা থেকে।
আমি জানি, মৃতদেহটা ভাগাড়ের।
কিন্তু ব্যাপারটা হচ্ছে, এই জারিজুরি এবার ফাঁস হওয়া প্রয়োজন।
আর তা হবেও, যেদিন চার পায়ে গুঁড়ি মেরে গিয়ে
পা কামড়ে ধ’রে, ওটাকে, তন্দুর থেকে
টেনে বার করব আমি।
এই কবিতাটা অন্যরূপে লিখেছিলাম আমি। তখন নাইন্টিন সেভেন্টি ফোর। রাণাঘাটে তখন স্টেশনের পাশ থেকে ভাজা মাংস কম পয়সায় কিনে খেতাম সন্ধ্যায়। সামর্থ ছিল না রেস্তোঁরা থেকে দামী মাংস কিনে খাওয়ার। পরে জানা গেল বুঝলে, অবশ্য আগেও রটনা ছিল, এখন প্রমাণ হলো বলা যায় যে সেগুলো পোলট্রি ফার্মের মরা বাসি মুরগি। তা আমি যতদিন খেয়েছি, আমার খারাপ মনে হয়নি একদিনও। কিন্তু জানতে পারার পর এলাকায় নানা জনের নানা রোগ দেখা দেয়। সুতরাং এটা বলাই যায় বুঝলে, যে না জেনে খেলে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা নেই। প্রচারে মুখ ঢেকে দিচ্ছে, এই যা।
সুমন – আমাদের এখানে উপস্থিত আছেন পরিচালক অরিন্দম শীল বাবু। বিজ্ঞাপণ চত্বরেও তার সুনাম আমরা পাই। তার কাছে জানতে চাইবো যে প্রচার অর্থাৎ বিজ্ঞাপণ। আপনার মতে কী এই বিজ্ঞাপণই এই সমস্যার মূল কারণ?
অরিন্দম শীল – দেখো সুমন, বিজ্ঞাপণের একটা সূত্রের কথা কিন্তু অস্বীকার করা যায় না কিছুতেই। কিন্তু আসল ঘটনা হলো বিজ্ঞাপণ করছে কারা? তুমি লক্ষ্য করে দেখবে গোমাংস বিতর্কের পরেই এসব বেড়ে গেছে। এতদিন এই বাংলায় মাংস খাওয়া নিয়ে অত লক্ষ্য করতো না কেউ। অভিযোগের কথা তো রাজ্যর খাদ্যদপ্তর সবার আগে টের পাবে। তাদের কোনও অভিযোগ নেই এই বিষয় নিয়ে। এই বিজ্ঞাপণ অন্য রাজ্যের সৃষ্টি। অ্যাজ আ টেকলিক্যাল প্রফেশনাল আমি বলতে পারি এই ছবিগুলি ফোটোশপ করা। গোবলয়ের উদ্যোগে এই খাদ্যসন্ত্রাসের সৃষ্টি।
সুমন – আপনি বলতে চাইছেন রাজ্য খাদ্য দপ্তরের থেকে কোনও অভিযোগ নেই, কিন্তু কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক মন্তব্য করেছে তাদের পাঠানো টাকা কাজে না লাগানোয় ফেরৎ গেছে কেন্দ্রে। আমাদের সঙ্গে আছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, আসুন দেখি তিনি কী বলছেন এই বিষয়ে। হ্যালো… হ্যালো… জেটলিজি… আপ শুন রাহে হ্যায় ক্যায়া?
অরুণ জেটলি – হাঁ, ম্যায় শুন রাহা হুঁ।
সুমন – জেটলিজি, ইঁয়াহা কা মাননা হ্যায় কে স্টেট ফুড ডিপার্টমেন্ট কা কোই কমপ্লেন নেহি হ্যায় ইস ইস্যু মে। আপ কুছ কেহেনা চাহেঙ্গে?
অরুণ জেটলি – কেন্দ্রিয় সরকার নে পশ্চিম বাংগাল কে লিয়ে চার হাজার কড়োর রুপায় স্যাংসন কিয়ে থে পিছলে সাল জিসকা… মুঝে দেখনে দিজিয়ে থোড়া… ঢাঈ হাজার সত্তর কড়োর রুপায় লাস্ট ইয়ার এন্ডিং মে ওয়াপস আয়া হ্যায়। ইয়ে রুপায় ভেজা থা স্টেট ওয়াইজ বাজেট কে হিসাব জোড়কর। তো বঙ্গাল কা লোগ পিছলে সাল খায়া ক্যায়া? ইতনে প্যায়সে মে তো উতনা সারা খানা মিল নেহি সকতা। ফির দেখিয়ে, পশ্চিম বঙ্গাল মে রেস্টুরেন্ট সে ট্যাক্স কালেক্ট হুয়া হ্যায় পিছলে সাল সাতশ উন্নাব্বই করোর রুপায়। তো হিসাব হ্যায় কে লোগো নে ঠিক ঠাক ইনভেস্ট কিয়া খানে মে। কম ইনভেস্ট মে ইতনা সারা খানা মিলনা তো ডাউটফুল হ্যায় হি।
সুমন – অরুণ জেটলির কথায় কম পয়সায় বেশি খাদ্যের সংস্থান করে নজির গড়েছে বাংলা। বাংলার এই সাফল্যে রাজ্যের তরফে আপনার কী বক্তব্য জানতে আমরা আসছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে।
মমতা – বললেই হবে চারহাজার কোটি টাকা স্যাংশন করেছে। যতসব কেন্দ্রের ঢপবাজি। খাদ্যদপ্তরের কোনও টাকা ফেরৎ যায়নি, আমরাই উলটে বেশি ট্যাক্স পাঠিয়েছিলাম খাদ্যের ভিত্তিতে দেশের কল্যাণে। সেইটিকে ইস্যু করে নোংরা রাজনীতি খেলছে বিজেপি। আই ওয়ান্ট এ হাম্বল এক্সপ্ল্যানেশন, ম্যায় জিজ্ঞেস করতা হুঁ কে এই পরিসংখ্যান আপ কাঁহাসে পায়া হ্যায় জেটলিজি? যতসব ঝুটা রিপোর্টের উপর ভরসা করে বাংলাকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করবেন না আপনারা, ফল ভালো হবে না…
অনুব্রত – বোম রেডি আছে দিদি, পার্লামেন্টে সিটটা পাইয়ে ঢুকিয়ে দিন শুধু।
মমতা – তুই থাম কেষ্ট, ক্যামেরা আছে। ভাগাড়ের মাংস নিয়ে অতই কপচানি দিয়ে চমকাবেন না, আপনাদের দিল্লিতেই আমরা আরও কম দামে মাংস পাই। তন্দুরি ওখানে একশ আশি ফুল মুর্গি, এখানে দুশো চল্লিশে চার পিস। আগে নিজের এলাকায় নজর দিন। বাংলাকে কেউ আলাদা করতে পারেনি, পারবে না। এই ভাগাড়ের মাংসই একদিন দেশের খাদ্য সমস্যার সমাধান করবে। বাংলার মানুষ আজ ভাগাড়ের মাংসকে গ্রহণ করেছে নির্দ্বিধায়। এই পথযাত্রা শুরু হলো আজ বাংলা থেকে।
সুমন – এতক্ষণ আমরা শুনলাম রাজ্যের জননেত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। এবার আসবো দিলীপবাবুর কাছে, শুনবো তিনি কী বলছেন। দিলীপবাবু…
দিলীপ – বোলবো আবার কী, সুনচোই তো। যা বলবো পোরিস্কার বোলবো। দিলীপ ঘোস কাউকে ডরায় না। ভাগাড়ের মানসো খে কাল সামবাজারে দুজন মারা গেচে। জবাব দেবে কে? বিসোক্কিয়া বলে তো একটা কতা আচে। পচা মানসে বিসোক্কিয়া হয়। মানে পেটের গণ্ডগোল, ডায়রিয়া, মেরিঞ্জাইটিস, এনকেফেলাইটিস। বাংলা ভাসায় ভাগারের মানসো খে রোক বাড়চে পস্‌চিমমঙ্গে। এই তো বোসে আচেন ডাক্তার সরকার, জিজ্ঞেস করুন ওনাকে যা বোলচি সত্ত্যি বোলচি কিনা।
ডঃ সরকার – ভাগাড়ের মাংসে বিষক্রিয়া হবেই, ব্যাকটিরিয়া থিকথিক করে পচা মাংসে। মাংসে থাকা সালমোনেল্লা অথবা ই-কোলাই ব্যাকটিরিয়ার প্রকোপে খাদ্যে বিষক্রিয়া দেখা যায়। পেটব্যথা থেকে ক্রমাগত বমি খাদ্যে বিষক্রিয়ার উপসর্গ। শুধু মানুষ নয়, ভাগাড়ের মাংস খেয়ে অন্য পশুরাও সারতে পারে না। একমাত্র ব্যতিক্রম শকুন ও চিল প্রজাতি। শকুনের পাকস্থলীতে সালমোনেল্লা অ্যাসিড থাকে যা অ্যানথ্রাক্সের মতো জীবাণু মেরে ফেলতে পারে। বিজ্ঞানীদের মত, রান্না করা খাবারে অভ্যস্ত বলেই মানুষের পাকস্থলী এখন আর শক্তিশালী অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না। ফলে, খাবারে ‘ব্যাকটিরিয়াল লোড’ বা ‘টক্সিন’ বেশি থাকলেই পেট খারাপ হয়। ক্ষতবিক্ষত হয় ক্ষুদ্রান্ত্র। তবে ভরসা একটাই, খাবার থেকে বিষক্রিয়া হলে ৬ থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খাদক তা টের পেয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে মল পরীক্ষা করে ব্যাকটিরিয়াল লোড জেনে নিতে পারবেন চিকিত্‍সকরা। সেই মতো দেওয়া হবে অ্যান্টিবায়োটিক।
দিলীপ – দেকেচেন, দেকেচেন। চোখ ঘুরিয়ে দিলেই হবে?
সুবোধ – আমি আমেরিকায় গিয়ে শুনে এলাম
লোকে ওখানেও বলছে:
দিনকাল যা পড়েছে
তুমি তোমার খাবারের কাছে ঠিক সময়ে
পৌঁছতে না পারলে
অন্য একজন পৌঁছে যাবে।
কিছু বুঝলে? যদিও এখানে উপস্থিত সবার বোঝার ক্ষমতা নেই। এটা আমি লিখেছিলাম সবকিছু বিবেচনা করেই। অনেকে আজ আমাদের খাদ্য অভিযান নিয়ে ট্রোল করছে দেখছি ফেসবুকে। রান্নার স্বাদে আবার পচা-ভালো কী। স্বাদ স্বাদই। তাতে কোনও ফারাক না পেলে কীসের মাংস খাচ্ছি তা জানার প্রয়োজনই বা কী। আমরা কবিরা আজকে যা বুঝতে পারছি, সাধারণ প্রজন্ম বুঝবে কয়েক বছর পর। আজকের বাংলা, ভবিষ্যতের দেশ।
সুমন – এতক্ষণ আমরা শুনলাম রাজনৈতিক আলোচনা। এবার আসছি একটু অন্য প্রসঙ্গে। আমাদের সঙ্গে আছেন বিশিষ্ট নারীবাদী গায়িকা সুকন্যা চৌধুরী। সেখি তার বক্তব্য কী?
সুকন্যা – খাদ্যগ্রহণের বিষয়ে আমি কোনও বাদীত্বে বিশ্বাস করি না। যেমন মুরগী তন্দুরে চাপার পর তার লিঙ্গ নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে ডিম পাড়ার উদ্দেশ্যে নারী মুরগির সংরক্ষণ জরুরী। পুরুষ মুরগি তন্দুরে ব্যবহার হোক। তেমনই ভাগাড়ের মাংসে আমি নারী বিদ্বেষী কোনও গন্ধ পাচ্ছি না। সাম্যবাদের একটি আদর্শ স্থান শ্মশান, কবরখানার মতো ভাগাড়ও। মৃতদেহ নারী-পুরুষ ভেদ করে না। তেমনি ভাগাড়ের মাংস খাওয়া নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। হয়ত না জেনে খেয়েছি, কিন্তু আমার সুস্বাদু লেগেছে। এ তো আর গানের মতো পুরুষতান্ত্রিক বিষয় নয়। কিশোরকুমারের পশে লতা মঙ্গেশকরের কণ্ঠ দেখবেন রিনরিনে ব্যাতীত স্পষ্ট নয়। বাঁজখাঁই কণ্ঠধারী পুরুষালি বিষয়ের জন্য আজ আমরা নারী জগৎ ইন্ডাস্ট্রিতে অবহেলিত। বেশিরভাগ গায়িকা পুরুষকণ্ঠকে ছাপিয়ে গাইতে গিয়ে কণ্ঠ খ্যানখেনে করে ফেলে ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিদায় নিয়েছে। এর প্রতিবাদে আগেও ছিলাম, এখনও আছি। তবে ভাগাড়ের মাংস নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই। পার্ক, তাজ যা দেবে, তাই অমৃত ভেবে খেয়ে নেবো।
সুমন – সুকন্যা জানাচ্ছেন খাদ্যে বৈষম্য না রাখাই ভালো। তা ভাগাড়ই হোক বা খামার। আমরা জানতে চাইছি এই প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য। মোদিজি… মোদিজি…
মোদি – মিত্রোঁ…
অনেক্ষণ চুপ। কোনও আওয়াজ নেই।
সুমন – নেটওয়ার্কের গণ্ডগোলের জন্য আমরা আন্তরিক দুঃখিত। আমাদের পরিচিত জিও কানেকশনের এই রকম নেটওয়ারর ফেলিওরের অভিযোগ সারা বাংলা ব্যাপী। এর ফলে প্রধানমন্ত্রীকে আমরা দেশবাসী সম্পূর্ণ ধরতে পারছি না। দিকে দিকে আলোচনা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী জিওকে ব্যবসা করার ছাড়পত্র দিয়েছে নিজের মৌনিব্রত অবলম্বনের জন্য। না রহেগি নেটওয়ার্ক, না চলেগি বাত ওয়ার্ক। এই নিয়ে আমরা আসছি পরের দিন। সঙ্গে থাকুন, সঙ্গে রাখুন।
জ্যোতিপ্রকাশ – এতই যদি অভিযোগ আপনাদের তবে স্টুডিওতে ফ্রী কানেকশনের জন্য জিও নিতে কে বলেছিলো? অন্য প্রোভাইডারও তো ছিলো।
সুমন – এই নিয়ে আসছি আমরা পরেরদিন। আপাতত আসছি অনুব্রতবাবুর কাছে। শুনতে চাইছি ভাগাড়ের বিষয়ে তিনি কি বলছেন।
অনুব্রত – বোম পড়লে আবার পচা আর ভালো। ধরুন যদি একটা গরুর পেট কেটে বোম ফাটিয়ে দিই, তবে সেই গরু বার্স্ট করলে কাটা কাটা থোপা থোপা মাংস রক্ত নাড়িভুড়ি চাদ্দিকে ছিটিয়ে পড়বে। ভাগাড়ের গরুর পেটে মারলেও তাই পড়বে। তারপর যদি দুটো মাংসকে আলাদা করতে পারেন তবে বুঝবো। আর ভাগাড়ের মাংস খাবে না মানে জনতা। ঘরে ঢুকে বোম মেরে আসবো। উন্নয়ন হবে না মানে?
সুমন – অনুব্রতবাবু বলছেন উন্নয়ন তিনি এনে ছাড়বেন পশ্চিমবঙ্গে। কীভাবে তিনি আনতে চাইছেন সেই মত একান্তই তার ব্যক্তিগত। আসল কথা হলো উন্নয়ন এলো কিনা। আমরা আসছি বিশিষ্ট আইনজীবী ও বঙ্গবিজেপি দলের অন্যতম প্রধান মুখ জয়প্রকাশবাবুর কাছে।
জয়প্রকাশ – অনুব্রতবাবুর কথাতেই প্রমাণ হচ্ছে এই বাংলায় আইন শৃঙ্খলা একেবারে রসাতলে গেছে। থানায় বাড়িতে ঢুকে বোম মেরে শান্তি নেই তার, ভাগাড়ের একটা নিরীহ অবলা জীবের প্রতিও তার বোম মারার সাধ। দেখুন আইন বলছে কে কী খাবে সেটা তার ব্যাপার। সুতরাং কে কম পয়সায় পচা মাংস খাবে বা কে পয়সা খরচ করে আর্সালানের বিরিয়ানী খাবে সেটা জনগণের ব্যাপার। মুল বিষয়টি হলো জনগণ কী চাইছে। এতদিন বিষয়টি কারোর সামনে আসেনি, তাই জনগণ মুখ খোলেনি। কিন্তু এখন আমার মতে কোনটা ভাগাড়ের মাংস ও কোনটা টাটকা তা আলাদা ভাবে জানিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। এতে আইনি কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।
সূর্যকান্ত মিশ্র – ডারউইন যদি বিশ্লেষণ করেন, তবে তিনি জানাচ্ছেন সমস্ত প্রাণীই খাদ্যসংকটে বিকল্প খাদ্যের সংস্থান করে। কথায় আছে ঠেলায় পড়লে বাঘেও ধান খায়। এটা তো দেখতেই পাচ্ছি আমরা যে পশ্চিমবঙ্গের জনগণ মুখ বুঁজে ভাগাড়ের খাদ্য গ্রহণ করছে, তাদের কোনও মাথাব্যথা নেই এই নিয়ে। অর্থাৎ তারা খাদ্যটিকে গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছেন। ডঃ সরকারের কথায় আমাদের পেটে সালমোনেল্লা অ্যাসিড তৈরীর পরিমাণ কমে গেছে রান্না করা খাদ্যের প্রভাবে। অর্থাৎ আগে আমরা তা গ্রহণ করতে সক্ষম ছিলাম। অনভ্যাসে তার অবনতি হয়েছে। এখন যদি এই অভ্যাস আবার ফিরে আসে তবে একদিন ভাগাড়ের মাংস গ্রহণ করতে আমাদের কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয় যেটা বাংলার জনগণ আজ প্রমাণ করে দিয়েছে। তবে রাজ্যের তরফে এই তথ্য গোপন করে কোটি কোটি টাকা কেবল মাত্র একটি দলের ফান্ডে যাচ্ছে যে অর্থ জনগণের, মুটিয়া-মজদুরদের। আমরা এর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলন করবো। সামনেই ধর্মতলায় আমাদের সমাবেশ আছে। আমরা জনে জনে ভাগাড়ের খাদ্য খাইয়ে প্রমাণ করবো যে জনগণকে ফাঁকি দিয়ে সরকার কত লক্ষ কোটি টাকা হস্তগত করেছে। বনবাসের সময় আমরা অভিজ্ঞতা করেছি হরিণের মাংস না পচিয়ে খাওয়া যায় না। সুতরাং এটা প্রমানিত যে পচা খাবারে দোষ নেই। এছাড়াও আমাদের মার্ক্স তাঁর ক্যাপিটাল গ্রন্থে বলে গেছেন, “Hunger is hunger; but the hunger that is satisfied by cooked meat eaten with a knife and fork differs from hunger that devours raw meat with the help of hands, nails and teeth” সুতরাং রাজ্যের এই খাদ্যের অনটনের সময় ভাগাড়ের মাংসে আমার ব্যক্তিগত ভাবে কোনও আপত্তি নেই।
সুমন – এই প্রসঙ্গে পাওলি দাম দেব আমাদের কিছু বলতে চাইছেন, পাওলি… তোমাকে দিলাম…
পাওলি – আমি কিন্তু মাংস বিরোধী, তা সে যে মাংসই হোক। সম্পূর্ণ ভেজিটেরিয়ান। আমি ভেজিটেরিয়ান সিনেমাও চুজ করি এর প্রচারের জন্য… যেমন ধরুন… উম্‌ম্‌ম্‌… ছত্রাক। বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ির চাপে রিসেন্টলি মাছ খাওয়াটা ধরেছি। তবে মাংস কখনই নয়, ফীগারটা ঠিক রাখতে ধরুন গ্রাসরুট প্রোটিন খুব উপকারি। তবে সূর্যবাবু, আপনাদের অধিবেশনটা কবে একটু জানাবেন আমায়, পারিবারিক ব্যস্ততায় অনেকদিন লাইমলাইটের বাইরে। আপনাদের অধিবেশন আমার রিলঞ্চিং স্টেজ হতেই পারে। সঙ্গে একটা কমিউনাল পারফিউমড ব্যাকগ্রাউন্ড। সিনেম্যাটিক। ক্রিটিক।
সুমন – ঘন্টাখানেক সময় এবার শেষের দিকে। আমাদের সঙ্গে আছেন জননেতা অধীর চৌধুরী মহাশয়। আমরা শুনবো ই প্রসঙ্গে তার বক্তব্য। আসুন অধীরবাবু…
অধীর – দেখুন, এই যে রাজ্যে যা ঘটছে তা প্লেন হাইপ। ফেসবুক ট্যুইটারে দেখছে কী লোকে হামলে পড়ছে। গোবলয় থেকে এই খাদ্যসন্ত্রাস ছড়াচ্ছে ও রাজ্য তাতে মদত দিচ্ছে। আসল উদ্দেশ্য হলো পঞ্চায়েতের দাঙ্গার থেকে শহরবাসীর চোখ সরিয়ে রাখা। তাদের মধ্যে প্যানিক সৃষ্টি করে হসপিটালে পাঠিয়ে গ্রামবাংলার থেকে দূরে রাখা। আর এই প্ল্যান চলছে বিজেপি আর আমাদের সরকারের যোথ উদ্যোগে। আমরা বামেদের সঙ্গে অনেক আগের থেকেই একমত এইখানে যে নোটবন্দীর পরে মূল্যবৃদ্ধির জন্য তৈরি অর্থসংকট তৈরি হওয়ায় এই উপায়ে খাদ্যগ্রহণ পকেট সাশ্রয়কর। তবে সেটার আড়ালে রাজ্যসরকারের যে চুরি চলছে তার জন্য আমি সিবিআই তদন্তের আবেদন জানাচ্ছি।
সুমন – আচ্ছা, অনেক ধন্যবাদ অধীরবাবু। সঙ্গে আছেন তৃণমূল মহাসচিব আমাদের শেষ আমন্ত্রিত হিসেবে। নমস্কার পার্থবাবু, আপনার মতামত রাজ্যের মতামত। তাই আপনার মতামত নিয়ে আমরা শেষ করবো আজকের অনুষ্ঠান।
পার্থ – এসব ন্যাওড়া ভ্যালীর ক্যাওড়াবাজিতে আমরা কান দিই না। আসল কথাটা হচ্ছে জনগণ কী বলছে। জনগণ খাচ্ছে তো খাচ্ছে, খাচ্ছে না তো খাচ্ছে না। এসব ছোটোখাটো পার্টির তোলা ফেসবুক হাইপ, দুদিন বাদে ফুস। এসবে কান না দিয়ে সামনে পঞ্চায়েত ভোটেই দেখে নেবেন কাদের জোর বেশি। জনগণ ভাগাড়ের মাংস খাবে না নাইজিরিয়ার মাংস খাবে সেটা একান্তই তাদের ব্যাপার। এসব বাংলাকে বিভাজনের চক্রান্ত। সোশাল মেডিয়ার হাইপ। সব থেমে যাবে। যে যা খাচ্ছে, দুদিন বাদে তাই খাবে। খাদ্য দপ্তর কিছু বলছে না, এদের গায়ে লাগছে । আচ্ছা নমস্কার।
সুমন – ধন্যবাদ পার্থবাবু, সবাইকে অনেক ধন্যবাদ আপনাদের নিজস্ব বক্তব্য পেশ করার জন্য। আপাতত আমরা এই সিদ্ধান্তে আসলাম যে ভাগারের মাংস খাদ্যসংকটের ভবিষ্যত সমাধান, কমিউনিস্ট তরফে ধর্মতলায় এই নিয়ে খাদ্যআন্দোলনের দাবি রেখেছেন তারা। বিজেপি তরফে জানানো হয়েছে এতে আইনি কোনও জটিলতাও নেই। এছাড়া সামান্য কিছু বিতর্ক রয়ে গেলেও ভবিষ্যতের জন্য একটি সুন্দর পদক্ষেপে স্বাগত রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের বিদ্বসমাজকে। আজকের মতো এখানেই শেষ হলো ঘন্টাখানেক সঙ্গে সুমন। সঙ্গে থাকুন, সঙ্গে রাখুন। নমস্কার।

ক্রমশ…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।