মালদা'র বাসিন্দা।অতিথি অধ্যাপক।টুকটাক মন দিয়ে শুধু যা লিখতে পারি বলে মনে হয় সেটা হলো কবিতা।কেউ পড়েনি এমন দুইখানি বই'ও বের হয়েছে।একটি'র নাম-স্নানের আগের স্মৃতি,দ্বিতীয়টি সূচের সংলাপ
বান্দ্রা-একটি অনাশ্রয়ের নাম
শয়ে শয়ে চটি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে রাস্তায়। একটি মার খেয়ে প্রায়মৃত’কে সুযোগ পেলেই আরো দু’ঘা দিচ্ছে কখনো ডানদিক থেকে কোনো বর্দি কখনো বামদিক থেকে কেউ। ওর অবস্থা এখন প্রায় অভিমন্যুর মতো।আমরা যখন রঙ খেলি তখন ঠিক এমনভাবেই আক্রমণ করি কোনো নিরীহ মানুষ গোরু বা কুকুরকে। দুইদিক থেকে দে পিচকারি দে–বেচারা বুঝতে পারেনি এভাবে ফেঁসে যাবে…ওরা সকাল দশটায় ভাষণ শুনতে বসতে পারেনি। ওদের একসাথে যে গোয়ালঘরে রাখা হয়েছে ওরা সেখান থেকে মুক্তি চাইছিল।না! ওদের অতো ক্ষমতা ছিল না যে মুম্বাই থেকে হাঁটা পথে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়বে। মিনিস্টার চেঁচিয়ে বলল ‘খাবার দাও, শান্ত হয়ে যাবে”। স্পোকপারসন মাথা ঝাঁকিয়ে বলল ‘আশ্রয়ের জন্য একটা কার্নিশ দিয়ে দাও, চুপ করে যাবে’…ওরা অপেক্ষা করছিল ১৪ তারিখের জন্য। ওরা অপেক্ষা করছিল বাড়িতে আসার জন্য-ওই যে আপনি ছবিতে সাঁটিয়েছেন না-স্টে হোম,সেভ লাইফ’! ওইটাই ওইটাই। ওরা বাড়ি যেতে চাইছে।ওরা রামায়ণ দেখতে চাইছে না। ওরা শক্তিমান দেখতে চাইছে না। ওরা বিশ্বাস করুন খাওয়ারের মার ছেড়ে মায়া ছেড়ে দয়া ছেড়ে আপনার দিকে হাতজোড় করে বলছে-‘বাড়ি যাব’।
আমি জানি,আপনি এখন ভয় পাচ্ছেন হায় হায় করে। ভাবছেন সংক্রমণবেড়ে গেলো, গেলো বেড়ে। এইবার একটু বাড়ির খাটের ওপর চুপ করে বসে তিনটি ছবি দেখুন- ১. একটা ঘরের মধ্যে গিজগিজ করছে মানুষ। এর গায়ে ওর পা,ওর গায়ে এর ঘাম-এদের সংংক্রমণের দায় আপনার নয়?
২. একটি স্টেশনের গলি জুড়ে কাতারে কাতারে মানুষ বাড়ি ফিরতে চেয়ে ভিড় জমাচ্ছে। আপনার বাড়ি নয়। নিজের বাড়ি। নিজের আপনজনের কাছে। ওদের ঘরটি কেমন ভেসে আসছে না?
৩. দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে ওরা লাঠিচার্জের ভয়ে। আবার সেঁধিয়ে যাবে ওই আশ্রয় নামক প্রহসনে, দেশের স্বার্থে, আপনার স্বার্থে-চলুন একটা ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলুন!