• Uncategorized
  • 0

গদ্য বোলো না -তে রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায় 

মালহার 

সকাল থেকে মৃদু মৃদু কাঁপছে পাতাগুলো , যেন মাদলের তালে দুলছে কোমর ৷ বৃষ্টির ফোঁটার আলো আলো চুমকি মায়াঘোর নেশায় বুঁদ হয়ে আছে চারপাশ ৷ ভিজে ডাহুকের ডানা ছুঁয়ে প্রস্তাবিত মিলনের সংকেত , দূত হয়ে বাতাস বয়ে নিয়ে চলে সঙ্গীনির আস্তানার অভিমুখে ৷ আহা , মধুরে মধুরে ! দিকচক্রবালে সাত রঙা রামধনু পেখম তুলেছে আকাশের গায়ে আর মাটিতে আত্মভরী চালে ঐশ্বর্য গরিমায় শিখী খুলেছে তার কলাপ ৷ রঙ রঙ রঙ , মুঠোমুঠো রঙ এসে লাগে আমার মর্মে , আমার দৃষ্টিতে , আমার শরীরে ! আমি হিরন্ময়ী হই ৷ এত আলো , এত আকাশ এই তো আমায় বরাভয় দেয় ! এই তো অহংকার ৷ জীবনকে আস্বাদ করার অহংকার , মৃত্যুকে জয় করার অহংকার ৷ যেমন অহংকারী ভিজে যাওয়া ঐ শিউলির গাছ , তার সম্মুখ দিয়ে চলে যাওয়া প্রতিটি অনাম্নী পথচারী আজ সম্মোহিত শশকেের  মত কিছুকাল স্হবির হয়ে যায় তার বিমহিত আকর্ষণে ৷
কোথাও ধবলা গাইয়ের বাড়ি ফেরার পথ বরাবর আর্শি নগর ৷  শিউলির নেশাতুর আবেশে দলছুট পাখিটার রমণের লিপ্সা দৃঢ় হয় ৷ আমার বায়বীয় শরীর ক্রমে তোমার শ্বাস-বায়ু হয়ে ওঠে ৷ তোমার কবোষ্ণ বুকে আমার ফোঁটা ফোঁটা অস্তিত্ব উষ্ণতার আঁচে গলনাঙ্ক ছোঁয় ৷ আমি দ্রবীভূত হই তোমার পাখোয়াজি মেজাজে ৷ তুমি পান কর আমায় হংসের চালে ৷ সম্মোহিত কপোতের মত বশ্যতার ঘ্রাণে নদীর মত বয়ে চলি৷ আকাশগঙ্গায় তখনও মালহার রাগে বেজে চলে সুরের মূর্ছনা ৷
এই মিলনের রেশ হয়ত বা লিখে রাখে কোন এক অনন্ত অপেক্ষার কাহিনী !
নতুবা নদীটার শরীরে দামাল বাতাস এমন করেই ঢেউ তুলে যাবে , আজীবন ……. জীবনভর …….
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।