জন্ম ১৯৬৭ সালের ২ জানুয়ারি হুগলী জেলার ধনিয়াখালি গ্রামে। লেখালিখির শুরু খুব ছোটবেলা থেকেই। ছাপার অক্ষরে স্কুল ম্যাগাজিনে চিরাচরিত নিয়ম ভেঙেই প্রথম প্রকাশিত হয় "কেয়া" নামের একটি প্রেমের কবিতা। সাহিত্য নিয়েই পড়াশোনা। পেশায় গৃহশিক্ষক হলেও সাহিত্যই চব্বিশ ঘণ্টার ধ্যানজ্ঞান। মাসিক কৃত্তিবাস, একুশ শতক, ভাষাবন্ধন, প্রমা, কথাসাহিত্য প্রভৃতি পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে। তুমি অনন্ত জলধি (কবিতা), বিমূর্ততার অনন্ত প্রবাহে (কবিতা সংক্রান্ত গদ্য)। সম্পাদিত পত্রিকা : ছায়াবৃত্ত এবং কাটুম কুটুম।
কৌটোর গল্পরা
তোমাকে বুঝেছি
হয়তো বা তোমাকে বুঝিনি
কিন্তু তোমাকে বোঝার মধ্যে দিয়ে
আমি নিজেকে কী বোঝাব ?
তোমাকে না বোঝার মধ্যে দিয়েই বা
আমি নিজেকে কী বোঝাব ?
যেখানেই দেখা হোক
আমি ঠিক তোমাকে চিনতে পারবো
তোমাকে ঠিক কতটা চিনতে পারছি
অথবা আদৌ তোমাকে চিনতে পারছি কি না
তা নিয়ে কোনো মাথা ঘামাব না
তুমি তো আমার মাথা কোনোদিন ঘামাও নি
তুমি সেই সারিতেই কোনোদিন পরতে না
তোমার মায়ের খবর জানাব
তোমাদের ছাই হয়ে যাওয়া বাড়ির
অনেকটা ছাই আমি কৌটোয় ভরে রেখেছি
তুমি চাইলে সেই কৌটোর গল্পও
আমি তোমাকে শোনাতে পারি
শুনেছি তোমার আলমারিতে অনেক কৌটো
একটারও ঢাকনা নেই
অনেক গল্প সেই কৌটোয় রাখা
যদিও একটা গল্পও তোমার নয়
তোমার কোনো গল্পই নেই
আমি তো জানি তুমি এক একটা গল্পকে
নিজের হাতে খুন করেছ
গল্প রাখতে হয়
গল্প নিজের হাতে ভাত জল দিয়ে
একটু একটু করে বাঁচিয়ে রাখতে হয়
গল্প তো ধুলোয় মাখা পথ
শীতের সকাল খিড়কি পুকুরের জলে
ভেসে থাকা সর
সুনীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা
ডিসেম্বরের বিকেলে উড়তে থাকা একলা ঘুড়ি
গল্প তো জন্মভূমি
মাটির দুয়ারে বসে মায়ের ডাক
সন্ধ্যের শাঁখ, কাঁসর ঘন্টা
সেই কোন ছেলেবয়সে
একবার সিঁড়ি থেকে পড়ে যাই
গল্পরা আমায় বাঁচিয়েছিল
হাত ধরে তুলে
মাটিতে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল
অন্যের গল্প তোমার কৌটোয়
তোমার আলমারিতে তাদের গল্পের সারি
তুমি কোথায় থাকবে?
তোমার জন্য কোন আকাশ?
তুমি কোন ধুলোর পথে হেঁটে যাবে?
আমি তোমাকে মায়ের গল্প বলি
তোমার ভাই একরাতে আস্ত একটা গল্প হয়ে গেছে
তুমি গল্পগুলো ছুঁতে পারো না
গল্পগুলো তোমার সামনে দিয়ে উড়ে যায়
একটা গল্প চড়ুই
একটা গল্প ভোরের আকাশের শুকতারা
একটা গল্প হঠাৎই খোয়াইয়ের দিকে বেঁকে গিয়ে
বাউল হয়ে গেল
নিথর কৌটোগুলোর ভেতর থেকে
তুমি মুখ বাড়িয়ে গল্প দেখো ।