• Uncategorized
  • 0

কবিতায় সৈয়দ কওসর জামাল

কবি ও গদ্যকার। প্রসার ভারতীতে কর্মরত এবং সিজেএমসি, বিশ্বভারতীর গেস্ট ফ্যাকাল্টি মেম্বার ছিলেন।

স্বগতোক্তিপ্রায়

২১

বড়োসড়ো ঝান্ডার ওপরে তুমি উড়িয়েছ শ্বেতপতাকা, আমার তাতে কী
আমি বাতাসের মধ্যে গোপনে ছড়িয়ে দিয়েছি পারমাণবিক ক্রোধ
দূর থেকে লক্ষ করছি তোমার প্রতিটি গতিবিধি কতো দিশাহীন, ভ্রষ্ট
তুমি যতই রোদের গায়ে লিখে রাখো দ্বন্দ্বদীর্ণ মানুষের প্রণয় কাহিনি
আমি দেখি কীভাবে প্রতিটি গাছের পাতা থেকে টেনে নিচ্ছো ক্লোরোফিল
আহা, জীবন এরকমই, কত ধরনের পথ মিশেছে এই ক্যালাইডোস্কোপে
তবু অন্ধের হস্তীদর্শন, শপথ করে বলি, এই হল কাঁটাতার, এগিয়ো না
ওদিকে সন্ধ্যার মুখে প্রজাপতি ওড়ে, সন্ধ্যারতির শব্দে অন্য দৃশ্য মানা
যতই ইষ্টদেবের উদ্দেশে দুহাত কপালে ওঠে, বিদ্যুৎ খেলে যায় কোষে
প্রদাহের বিষ বিবশ করে রাখে স্নায়ু মেধা স্মৃতি ও সমস্ত অক্ষরলিপি
যারা জানে জীবন সমীহজাগানো ধর্মগ্রন্থের মতো এবং তা স্মৃতিধার্য
তাদের কাছে ইতিহাস পুরাণ এক হয়ে আকাশে মেঘের মিনার গড়েছে
তুমি তার প্রবাহের চোরা স্রোত, সন্ধ্যাসংগীত হয়ে ঢুকেছো শত্রুর গুহায়
আকাশের সব পাখি সত্যিই কি ঘরে ফিরতে পারবে আজ…..

২২

তুমি বন্ধু আমার অথচ শত্রুর মতো আছ অন্তত দুহাজার বছর
তুমি সেই পোপন পরিখা যার মধ্যে দিয়ে দূর্গে ঢুকেছিল শত্রুসেনা
অতি সাধারণ আমি, রাজত্ব বলতে আছে শুধু এই আত্মমর্যাদাটুকু
তবু লক্ষ করি আমার চারপাশে তোমার সতর্ক প্রহরা, দশজোড়া চোখ
আমি আকাশে চেয়ে থাকি, মেঘের মধ্যে হাঁটতে যাই, শব্দের অর্থ খুঁজি
সর্বত্র আমাকে অনুসরণ করছে রঞ্জনরশ্মির আলোর মতো তীব্র চোখ
এই কূটচালে বিপন্ন আমার পরিপ্রশ্নগুলি, রক্ষাকবচ উঠে আসে না
আমি কি রাত্রি হয়ে ঢেকে দিতে পারব অবিশ্বাসের ম্লান চক্ষুকোটর
আমি কি আগুনশলাকা ছুড়ে মারতে পারব সন্দেহপরায়ণতার দিকে
অন্ধকার কিংবা আগুন নয়, বাতাসে ওঠে হাহাকার, এই তবে ফাল্গুন
আমার সংকেত প্রেমের আহ্বান তোমার পায়ের কাছে কুন্ডলী পাকায়
বাঁচার উপায় বলতে এই অল্প পরিসর যা জানলার মতো খুলে যায়
দূরে যে ছায়াপথ তাকেই উৎসর্গ করি যত অবিশ্বাস প্রতিহিংসার চোখ
শাশ্বত রাত, গ্রহণ করো সব অসূয়া সংগীত, পৌনঃপুনিকতার ক্লান্তি…..
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।