তারপর এক ট্রানজিশান পয়েন্টের কাছে এসে মনে হল এও তো এক অববাহিকা হতে পারে, যার কাছে এসে আমি সত্যি থামতে চেয়েছিলাম, নাহলে আমার এই চলা আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির দিকে নিয়ে যাবে, অবশ্য এই সব মুক্তি আসলে কোনো মুক্তিই নয় কারণ, পৃথিবীর সকল মুক্তিই, সত্যি এক মায়া থেকে অন্য মায়ার মাঝে, খানিকটা স্বগতোক্তি আর কিছু নয়, তারপর আবার সেই স্বজন বর্জিত গুহার ভিতরে এক অনন্ত কাল যাপন, যেখানে শুরু আর শেষ একই বিন্দুতে এসে নিজেদের মধ্যে সঙ্গম ঘটায়, আমি তখন কেন্দ্রে বসে দেখতে থাকি কিভাবে গলিত শরীর নেমে যেতে চাইছে ঐ অববাহিকার দিকে, অথচ আমি তো বিকল্প চেয়েছি, চেয়েছি মাজার থেকে যে রাস্তা সোজা চলে এসেছে এখানে, তার দুপাশের ছড়ানো আঁচলে ঢেকে থাকা প্রকৃতি, নারী হবে, আদর করবে আমাকে, দেখাবে গুহাজন্মের গোপন রাস্তাগুলি।
তাহলে সে খেলার মাঠ আর খেলার নয়, কাটা ঘুড়ির পিছনে ছুটে যাওয়া ছেলে আর কিশোর নয়, সে আজীবন সন্ন্যাসে উড়ন্ত ছায়ার নিচে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে, নিজের অক্ষমতায় নিজেরই ভিতরে আগুন, কাহিনী নেই, কথা ফুরিয়ে গেছে, বন্যায় ভেশে গেছে অতিক্রান্ত কাল, তার এক চালা ঘর তার পিছন লাগোয়া শস্য ক্ষেত, দূর দিয়ে চলে যাওয়া বড় রাস্তা, সে তাকিয়ে আছে যেন হাতছানি, এগিয়ে যাচ্ছে কিছু না বলে কাউকে, তাকে যে যেতে হবে, পেরোতে হবে এই আপাত বাঁধন।
অথচ নাগপাশ সে বড় রাস্তাই হোক বা নিজেকে জড়ানো কোনও মরানদী, যে আমাকে চোখ দিয়েছে, ক্লান্ত কিন্তু ক্লান্তির বিপক্ষে, দূরে খালি সে দূরে তাকিয়ে থাকে, ঘুড়ির পিছনে ছুটে যায় কিন্তু ধরে না, ছুটতে থাকে শুধু, যেন ঘুড়ির ঠিকানা জেনে নেবে, যেন ঘুড়ির কাগজে লেখা আছে তার কল্পনার মেয়েটির নাম, ছুটে যাবে দেখে আসবে তার আলগোছে লেগে থাকা ওড়নায়, হাতের মেহেন্দি মোছা রং, আমি তার থেকে শুধু নীল রঙটুকু তুলে নিতে চাইছি, বিছানার পাশে সেই বিবর্ণ আলনায় যেখানে প্রায় প্রাগৈতিহাসিক কাপড় রয়েছে তাদের রাঙিয়ে দেবো করে।