কবিতা – দেব চক্রবর্তী
বিদ্যাসাগর২০০/বিশেষ সংখ্যা
বর্ণমালা
তোমার অগ্নিবাণে
আমাকে বিদ্ধ করো ,
আমাকে পোড়াও ভাষাবীর ।
প্রথম জন্মে দেখা কালো বর্ণগুলো আমি আজও চিনি নি মহাশয় ; শুধু দেখে গেছি ।
আর আধো রাতে ঘুমচোখে শুনেছি তোমার গল্প ।
শুনেছি উদভ্রান্ত দামোদর ঠেলে যাওয়ার কথা –
বিশ্বাস করি নি
বিশ্বাস করি নিই
কারণ আজ আমি কাউকে উদভ্রান্ত নদী পাড় হ’তে দেখি না ; যেমন দেখি না তোমার বর্ণগুলো কাউকে আদর করে পড়তে ।
তোমারই বাংলার বুকে সে বর্ণ বড় বিশ্বাসঘাতক আজ , বড় বেমানান ।
‘বেঙ্গলি’ হয়ে পোশাকে হয়েছে সজ্জিত ।
আজকাল তোমার জন্মদিন জানতে গুগল খুঁজতে হয় ।
তোমার আটহাতি ধুতি আর কালো চাদরে ঢাকা পড়ে গেছে সব মহিমা ।
এ কেমন শিক্ষা দিলে বিদ্যাধর !
শেখাতে পারো নি কারণ আমাদের আধা মস্তকে সে শিক্ষা ধরে না ।
স্বপ্নকাকা গল্পের ছলে বলেছিলেন তুমি নাকি ‘বিধবা বিবাহ প্রথা’ চালু করেছিলে –
কি প্রয়োজন ছিলো বলো তো !
আজ তো পরকীয়া সিদ্ধ !
আসলে সবটাই অনুসরণ নয়
‘অনুকরণ’ ।
আর নারী শিক্ষা
তা তো কবেই গেছে ভেসে টেমসের জলে ।
এখন শুধু আক্ষেপ আর উদ্বেগ ।
বড় কঠিন এ সময়
পাথর ফাটিয়ে এসে দেখলেই তো পারো এই মরা সময়ের উপাখ্যান !
সাগর লুকালে কোথায় !
কোথায় তোমার দৃঢ়চেতা বুক
আর দয়ার হৃদয় !
দয়া মায়া হীন দুর্বলচেতা এই বিপন্ন মানুষ আজ খোঁজে তোমাকে ।
হ্যাঁ , তোমাকেই খোঁজে ;
খোঁজে গর্বের বর্ণগুলো সব
কেননা মাঝে মাঝে বুকে ব্যথা হয় , জ্বর হয় কিংবা ম্যালিগন্যান্টের আশঙ্কা ! !