ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হল সমস্ত প্রকৃতি।জীব বৈচিত্রে সাজিয়ে তুলল নিজেকে। নানা অলংকারে শোভিত লাস্যময়ী রমনীর মতো জল জঙ্গল। কলকল বয়ে চলা নদীর ধারা। নানারকম ফুল ফল পশু পাখি যেন এক ভরভরন্ত সোনার সংসার! তবুও কোথায় যেন তার অভাব অপূর্ণতা!এত রূপ, এত সৌন্দর্য,অথচ তার গুণগ্রাহী নেই। সামনে এসে কেউ প্রশংসা করে না মুগ্ধ বিস্ময়ে,কেউ থমকে দাড়ায় না। সেই অতৃপ্ত হৃদয় প্রকৃতি সৃষ্টি করলো মানুষ তাকে দিল অপরিমেয় জ্ঞান, সৌন্দর্যবোধ,দিল সচেতন মন, চিন্তা আর কল্পনা ।
ঝলমল করে উঠলো প্রকৃতি কলকল করে উঠলো মানুষের পদচারণায়।তারপর ধীরে ধীরে গড়ে উঠলো সমাজ সংসার। দুচোখ ভরে দেখতে লাগলো প্রকৃতির রূপ,মুগ্ধ চোখে।দেখতে দেখতে নিজের প্রয়োজনে হাত দিল প্রকৃতির গায়ে। প্রকৃতি ভাবলো,এ আর এমন কি! আমার এত সম্পদ, সে আর কতটুকু নেবে?
বিশ্বাসের আসন বিছিয়ে বসতে দিয়েছিল তাকে!সেও তো কমদিন নয়!যে অপার সৌন্দর্যে প্রকৃতি সেজেছিল, সেই সৌন্দর্যে আঘাত নেমে এলো। বন কেটে বসত, মাটি খুঁড়ে ফসল ফলালো,এমনকি মুক্ত জীবনে অভ্যস্ত পশু পাখি তাদেরও জীবন বিপন্ন করে তুললো, অফুরন্ত,অপর্যাপ্ত লোভ আর লালসায়। প্রকৃতি প্রতিবাদে মাঝেমাঝে মাথা নাড়া দিয়েছে কিন্তু সব বৃথা। প্রগতির রথচক্রঘর্ষনে বিদীর্ণ হয়েছে প্রকৃতির হৃদয়। তার সব ভালোবাসা আশা আকাঙ্খা ধুলোয় মিশে গেছে। সহ্য সীমা অতিক্রান্ত, নিজ সৃষ্ট সন্তানের হাতে এই অপমান অসহনীয় অভাবনীয়!না, আর নয়। অসহ্য এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে হবে,তাই এবার এক শেষ কামড় দিতে চাই। নরকযন্ত্রণা কাকে বলে একবার দেখুক মানবসৃষ্ট সভ্যতা।