• Uncategorized
  • 0

অণু গল্পে অমিতাভ দাস

অমৃত সায়র 

একদিন  প্রিয় শিষ্য বুধাকে নিয়ে পর্যটনে চলেছেন নানক। চলেছেন এক বিরাট মাঠের মধ্যে  দিয়ে  । গ্রীষ্মকাল । খাঁ খাঁ রোদ্দুর । কোথাও এক ফোঁটা জলের চিহ্ন নেই ।
বুধা বললে , প্রভু তেষ্টায় গলা ফেটে যাচ্ছে । আর তো হাঁটতে পারি না।জল না পেলে বাঁচব না আর । নানক বললেন , সামনেই জল আছে । এগিয়ে চলো ।
কিছুটা এগোনোর পর একটা পুকুর দেখা গেল । কিন্তু শুকনো । জল নেই । বুধা ফিরে এসে বললে সেই কথা । জল নেই প্রভু ।
নানক বললেন , বুধা তুমি এখনো গুরু আর সৎ নামে পুরোপুরি আস্থাশীল নও ।তাই জল পাওনি ,আবার যাও আর এক মনে জপ করো । সৎ গুরুর নাম করো ।
পরবর্তীতে বুধা আবার গেলেন আর অবাক হলেন । শুকনো মাটি ফেটে বেরিয়ে আসছে জলের ধারা । পরম তৃপ্তিতে ভরে উঠল তাঁর মুখ । তিনি আনন্দে  পান করলেন সেই সুপেয় জল । তাঁর মনে হল এ জল তো অমৃত । নাম দিলেন অমৃতসায়র ।
গল্প থামিয়ে দাদু চোখ বুজে আকাশের দিকে তাকায় । অন্তু দাদুর পাঞ্জাবি টেনে বললে , তারপর কী হল দাদু ? সে দশ বছরের বালক । বেড়াতে এসেছে দাদুর সঙ্গে ।
দাদু বললেন , তারপর অনেক দিন কেটে গেল । গুরু রামদাস সেই সায়রের মাঝে নির্মাণ করলেন সুন্দর এক মন্দির ।
–তারপর ? অন্তুর জিজ্ঞাসা ।
দাদু বললেন , তারপর আর কী ! ইতিহাসে রণজিৎ সিংহ-এর নাম তো শুনেইছো ।
–শুনেছি দাদু ।
–তিনি মন্দিরের গোম্বুজটি সোনার পাত দিয়ে বাঁধিয়ে দিলেন । নাম হ’ল স্বর্ণমন্দির ।শিখদের প্রধান তীর্থক্ষেত্র ।
দাদুর আঙুল ধরে টানতে থাকে অন্তু । চলো দেখে আসি সেই স্বর্ণমন্দির ।
দাদু হাসতে হাসতে বললেন , যাবো কী রে এসেই তো পড়েছি । ওই দ্যাখ — ওই যে দূরে দেখা যাচ্ছে চূড়া—- স্বর্ণমন্দির ।
–আর সেই সায়র , সেই পুকুরটা কোথায় দাদু ?
–সেই পুকুরেই তো এখন দাঁড়িয়ে আছি আমরা ।।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।