T3 ।। কবিতা পার্বণ ।। বিশেষ সংখ্যায় উজ্জ্বল দাস

পিঠে পাব্বন

কাকাই জ্যঠাই আজও আছে, আজো আছে লাল দালান।
পিঠে পাব্বন আজও আছে, আজ খুশি নেই ঠাম- দিদান।।
লম্বা মেঝে, উবু হয়ে কেউ বা কোরে নারকোল।
চারদিকে সব কচি কাঁচা, উঁকির সঙ্গে হট্টগোল।।
মায়ের মুখের মিষ্টি হাসি, জ্যাঠাইমার ওই চোখ বড়,
একটু রেগে বলতে চাওয়া, “একটু সবুর আর করো।
গরম কড়ায় ফুটছে যে জল, পুলি- নাকি সেদ্ধ আজ,
খেজুর গুড়টা মাখিয়ে নিলেই রাঙা আলুর মিষ্টি লাজ।
পাটিসাপটা পার পাবে না, কামড়াবে সব জোর করে,
আসকে, পুলিও ছাড় পাবে না চাটবে যখন খুব জোরে।
ছ‍্যাঁখ ছ‍্যাঁখানি ভাজার আওয়াজ ওই বুঝি হাঁক- ডাক এলো।
হুটো পাটি তৈরি সবাই উসখুসে মন, মুখ গুলো।
কলাই কিংবা কাঁসার থালায় পড়বে যখন ঝপ করে।
মালপোয়াটাও সটাং তুলে পুরবো মুখে খপ করে।
এর পাতেতে, ওর পাতেতে চোখ বোলানোই হচ্ছে সার।
কেউ দেবে না একটুকু ভাগ পিঠের বেলায় যে যার তার।।
সোনার সেদিন মারছে উঁকি তারুণ্যের এই প্রাক্কালে
রোজ মনে হয় আর একটা দিন বাড়লো বয়স যাচ্চলে।
মাঝ বয়সেও আনাচ কানাচ স্মৃতির নেশা হাঁতড়ে সব।
পৌষ মাসের আকাশ ফাঁকা হয়না ঘুড়ির মহোৎসব।
সরু চাকলির সঙ্গে দেখা, আসকে পিঠের হয় না আর।
রসবড়া টার দাম কি নেবে হাত গালে তাই দোকানদার।
বিচ্ছু, লাজুক মুখ গুলো কি মশগুল সব ঘর কুনো।
কাড়াকাড়ি লাঠালাঠির হারিয়ে গেলো দিন গুনো।
স্তব্ধ নবীন আড়মোড়াতে, ভাঙছে না ঘুম ক্লান্তিতে।
পিঠের নেশার মৌজ কেন হচ্ছে না সংক্রান্তিতে।
ছোট্ট করে দাও হে আবার ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা দি
এ্যালুমুনিয়ম বাটি পেতে পিঠে খাওয়ায় পাল্লা দি।।
নলেন গুড়ের মিষ্টি পায়েস শিমুই হলেও জমবে বেশ।
সভ্যতা আজ দোকান মুখো, বাড়ির পিঠে নিরুদ্দেশ।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।