হৈচৈ ছোটদের গল্পে তপন তরফদার

ম্যাগনাম—মাগনায়
বিল্টু আর মিল্টু। হরিহর আত্মা। দুজনেই পেটুক। ক্লাস ইলেভেনে পড়ে। এখনইতো খাবার বয়স, অথচ পকেট মানি জোটেনা। ওদিকে হিরুদা আর ধীরুদার গলায় গলায় বন্ধুত্ব। কেন ওদের জুটি অটুট তাও জানে বিল্টু-মিল্টু। ওরা ভোজনা বাড়িতে বিনা নিমন্ত্রণে, বিনামূল্যে গান্ডে পিন্ডে গিলে আসে। অনুষ্ঠানের হলের আশেপাশে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে, যেই কনেযাত্রী বা বরযাত্রীর দল ঢোকে, ওদের সঙ্গে মিশে যায়। কোন তরফের অতিথি কেউ বুঝতে পারেনা।
ভোলাদার চায়ের দোকানের ঠেকে ব্যঙ্গ করে হীরুদা বলে, মজার খবর বোম্বাইের এক রেস্টুরেন্টে খাবারের বিল না মেটানোর জন্য কাপ-ডিশ ধুইয়ে ছেড়ে দিয়েছে। বিল্টু, মিল্টুকে বলে এইরকম একটা রেস্টুরেন্ট যদি এখানে থাকতো বেশি বেশি করে ডিশ ধুয়ে দিতাম। হিরুদা খবর পরিবেশন করলো, অনাবাসী কয়েকজন ভারতীয় ম্যাগনাম রেস্টুরেন্ট খুলেছে সেখানে নাকি বিল মেটাতে পারেনি বলে, জামা খুলে জমা রেখেছে। বিল মিটিয়ে জামা ফেরত নিতে হবে।
ওরা রেস্টুরেন্টটা খুঁজে পেল। দেখতে পেলো একধারে পুরনো জামা কাপড় সুন্দর করে ঝোলানো আছে। তাহলে খবরটি মিথ্যে নয়। বেশি খাবারের অর্ডার দিলনা প্রথম দিন রয়ে সয়ে খাওয়া ভালো। ম্যাগনাম আমাদের মাগনায় দেবে। কাউন্টারে দাম দেওয়ার সময় বলল আমাদের মানিব্যাগটা মনে হয় কোথাও পড়ে গেছে। দাম দিতে পারছিনা পরে দিয়ে যাব। ম্যানেজার বলল ঠিক আছে ভাই তোমাদের জামাটা খুলে রেখে যাও পয়সা দিয়ে নিয়ে যেও।
বাইরে এসে বিল্টু বলে, কেন তোকে বলেছিলাম রঙিন গেঞ্জি পড়ে আসতে এখন বুঝলি। মিল্টু বলে, রাস্তার লোকরা জানতে পারবেনা আমরা জামা রেস্টুরেন্টে বন্ধক রেখেছি। খুব খুশি। এত দিনে মনের মতো একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে। যুগ যুগ জিও। কিছুদিনের মধ্যেই ওরা আবার হাজির। দেখলো ওদের জামাগুলো টাঙানো আছে। ভারিক্কী গলায় ভালো ভালো খাবারের অর্ডার দিল। বেয়ারা একগ্লাস শরবত ধরিয়ে দিয়ে বলে, ম্যনেজার সাহেব বলেছেন খাবার তৈরি করতে একটু সময় লাগবে। আপনারা ততক্ষণ বিনি পয়সার শরবত খান।
শরবত অর্ধেক শেষ হয়েছে। পেট মোচড় দিয়ে উঠলো। আর থাকতে পারছেনা দুজনেই ছুটলো বাথরুমে। ম্যনেজার বাথরুমে তালা লাগিয়ে বলে আমাদের ফটোআইডেন্টি মেশিনে ধরা পড়েছে। বিল মেটাওনি। পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে। ওরাই ব্যবস্থা নেবে।