হৈচৈ ছোটদের গল্পে তপন তরফদার

পেটে খেলে পিঠে সয়
পয়সা না দিয়ে খেতে পেলে পিঠের পিটানি হাসি মুখেই খাওয়া যায় । বিল্টু আর মিল্টু। হরিহর আত্মা। দুজনেই পেটুক। ক্লাস ইলেভেনে পড়ে। এখনইতো খাবার বয়স, অথচ পকেট ফুটো। ওদিকে হিরুদা আর ধীরুদা ওরা ভোজনা বাড়িতে বিনা নিমন্ত্রণে, বিনামূল্যে গান্ডে পিন্ডে গিলে আসে। অনুষ্ঠানের আশেপাশে ঘাপটি মেরে অপেক্ষা করে, সবার চোখ এড়িয়ে কনেযাত্রী বা বরযাত্রীদের সঙ্গে মিশে যায়। কোন তরফের অতিথি কেউ বুঝতে পারেনা।
ভোলাদার চায়ের দোকানের ঠেকে ব্যঙ্গ করে হীরুদা বলে, মজার খবর মাদ্রাসের এক রেস্টুরেন্টে খাবারের বিল না মেটানোর জন্য কাপ-ডিশ ধুইয়ে ছেড়ে দিয়েছে। বিল্টু, মিল্টুকে বলে এইরকম একটা রেস্টুরেন্ট যদি এখানে থাকতো বেশি বেশি করে ডিশ ধুয়ে দিতাম। হিরুদা খবর পরিবেশন করলো, অনাবাসী কয়েকজন ভারতীয় “পেটুক” নামে রেস্টুরেন্ট খুলেছে সেখানে নাকি বিল মেটাতে পারেনি বলে, জামা খুলে জমা রেখেছে। বিল মিটিয়ে পোশাক ফেরত নিতে হবে।
ওরা “পেটুক”কে খুঁজে পেল। দেখতে পেলো একধারে পুরনো জামা কাপড় পরিপাটি করে ঝোলানো আছে। তাহলে খবরটা মিথ্যে নয়। বেশি খাবারের অর্ডার দিলনা। প্রথম দিন রয়ে সয়ে খাওয়া ভালো।
কাউন্টারে দাম দিতে এসে বলল, আমাদের মানিব্যাগটা মনে হয় কোথাও পড়ে গেছে। দাম দিতে পারছিনা পরে দিয়ে যাব। ম্যানেজার বলল ঠিক আছে ভাই তোমাদের জামাটা জমা রাখো। বিল মিটিয়ে নিয়ে যেও।
বাইরে এসে বিল্টু বলে, কেন তোকে বলেছিলাম রঙিন গেঞ্জি পড়ে আসতে এখন বুঝলি। মিল্টু বলে, রাস্তার লোকরা জানতে পারবেনা আমরা জামা রেস্টুরেন্টে বন্ধক রেখেছি। খুব খুশি। এত দিনে মনের মতো একটা রেস্টুরেন্ট হয়েছে। “পেটুক” যুগ যুগ জিও।
কিছুদিনের মধ্যেই ওরা আবার হাজির। দেখল ওদের জামাগুলো টাঙানো আছে। ভারিক্কি গলায় ভালো ভালো খাবারের অর্ডার দিল। বেয়ারা এক গ্লাস শরবত দিয়ে বলে, ম্যানেজার সাহেব বলেছেন খাবার তৈরি করতে একটু সময় লাগবে। আপনারা ততক্ষণ এই ফ্রি পানীয়টা পেটে পুড়ুন।
শরবত অর্ধেক শেষ হয়েছে। পেট মোচড় দিয়ে উঠলো। আর থাকতে পারছেনা দুজনেই ছুটলো বাথরুমে। ম্যনেজার বাথরুমে তালা লাগিয়ে বলে আমাদের ফটোআইডেন্টি মেশিনে ধরা পড়েছে। বিল মেটাওনি। পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছে। ওরা মনে মনে বলে, কখনো আর এই পথে হাটবো না।