ধারাবাহিক প্রবন্ধে তপশ্রী পাল (পর্ব – ৪৬)

আলাপ

দক্ষিণ ভারতের আর একটি বিখ্যাত নৃত্য কথাকলি। এটিকে গল্পকথন শৈলীর নাচও বলা যায়। কেরালার মালয়ালম ভাষাভাষী অঞ্চলের নাচ এটি। এই নাচের জন্ম হয় খীষ্টিয় প্রথম শতাব্দীতে নানা ধরণের লোকনৃত্যের মাধ্যমে, যেমন কৃষ্ণনাট্যম অথবা কোঝিকোড়ের (কালিকটের) সামুথিরি (জামোরিন) রাজাদের সময় ব্যবহৃত নানা ধর্মীয় নাটক। খ্রীষ্টিয় সতের শতকে পূর্নাঙ্গ কথাকলি নাচ প্রথম দেখা যায়।
প্রথাগতভাবে পুরুষরাই এই নাচে অংশগ্রহণ করতেন, তবে আধুনিক কথাকলিতে মহিলারাও অংশগ্রহণ করেন।   অন্যান্য শাস্ত্রীয় নৃত্যের মতোই রঙিন পোশাক পরিচ্ছদ ব্যবহৃত হয় কথাকলিতে। তার সঙ্গে পুরুষ শিল্পীরা ব্যবহার করেন নাট্যচরিত্রের প্রয়োজন অনুযায়ী অসাধারণ সব মুখোশ! এতে সঙ্গীত ও বাদ্যের ব্যবহার, গান, কোরিওগ্রাফি এবং হস্তপদ মুদ্রার ব্যবহার তো আছেই, যেটি অন্যরকম, তা হল দক্ষিণভারতের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী নানাপ্রকার মার্শাল আর্ট,  যুদ্ধভঙ্গিমা ও চলনের ব্যবহার। অন্যান্য শাস্ত্রীয় নৃত্য যেমন মন্দিরে অথবা গুরুগৃহে শেখানো হত, কথাকলির বিভিন্ন শৈলী এবং রীতি কিন্তু হিন্দু রাজত্বের সময়কালে সভায় অথবা নৃত্যপ্রদর্শন মঞ্চেই গড়ে ওঠে। বিভিন্ন লোকগাথা, পৌরাণিক কাহিনী ও ধর্মীয় কিংবদন্তীই এই নৃত্যের অবলম্বন। গানগুলি গাওয়া হয় সংস্কৃত অথবা মালয়ালমে। আধুনিক কথাকলি নৃত্যে অবশ্য বিভিন্ন বিদেশী গল্প, যেমন শেক্সপীয়ারের নাটক অবলম্বনেও নৃত্য প্রদর্শিত হচ্ছে।
কথা বা গল্প এবং কলি বা নাট্যপ্রদর্শন অর্থাৎ কথাকলি হল বিভিন্ন গল্পকে নাটক হিসাবে প্রদর্শন। এই নৃত্য মন্দের বিরূদ্ধে ভালোর লড়াই ও বেশীরভাগ ক্ষেত্রে জয় দেখায়।
প্রাচীন ভারতীয় নৃত্য কুট্টিয়াম, যেটি কৃষ্ণ এবং শিবমন্দির সংলগ্ন মঞ্চে প্রদর্শিত হত তার সঙ্গে কথাকলির অনেক মিল পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে বেশী মিল কৃষ্ণনাট্যমের সঙ্গে, যেখানে ঠিক এমনি গল্পের মধ্য দিয়ে কৃষ্ণের জীবনের নানা ঘটনা বর্ণনা করা হয়। এতেও আছে বর্ণময় পোশাক, মুখোশ এবং নাটকীয় চলন ও মুদ্রার ব্যবহার। কথিত আছে কোত্থাকারা থামারূপন, যিনি ভিরা কেরালা ভার্মা বলেও বিখ্যাত, তিনি কৃষ্ণনাট্যম দলের সাহায্য চেয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্রের জীবনের গল্প বলার জন্য। কিন্তু তারা তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ায় তিনি কৃষ্ণনাট্যমের কিছু পরিবর্তন করে রামানাট্যম তৈরী করেন। এই রামনাট্যমই প্রথম কথাকলি হিসাবে প্রদর্শিত হয়। তবে ক্রমে এতে আরো বিভিন্ন ধরণের কাহিনী যোগ করা হয়। জয়দেবের গীতগোবিন্দ থেকে নেওয়া অষ্টপদীআট্যম এবং দক্ষিণভারতীয় যুদ্ধকলা কালারিপায়াত্তুর প্রভাবও দেখা যায় কথাকলির ওপর।
নৃত্যকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ‘শ্লোক’ অংশে থাকে সংস্কৃতে। এই অংশে নানারকম হস্তমুদ্রা, মুখ ও ভ্রুভঙ্গী এবং স্টেজে চলাফেরার মাধ্যমে নাট্যাংশ (অ্যাকশান) তুলে ধরা হয়। ‘পদ’ হল কথাবার্তা বা ডায়ালগ অংশ। সব মিলিয়ে কথাকলি হল একটি অপেরার মতো।
কথাকলিতে স্টেজ হয় মন্দিরসংলগ্ন চত্ত্বরে, খোলা মাঠে অথবা মঞ্চে। স্টেজ সাধারণতঃ ফাঁকা থাকে। শুধু একটি বিশাল নৃত্য প্রদীপ জ্বালা থাকে মঞ্চে, যার নাম কালিভিলাক্কু (কালি – নৃত্য, ভিলাক্কু – প্রদীপ)। অনেক সময় লম্বা বাঁশের মাথায় একটি মশালের মতো জ্বালানো হয় এই প্রদীপ। আগে যখন গ্রামাঞ্চলে কথাকলি হতো, তখন অন্ধকারে এই প্রদীপের আলোয় কলাকুশলীদের দেখতে পেতেন দর্শক।
কথাকলি নাচ সাধারণতঃ লম্বা হতো। দিনের আলো ঢলে এলে, ঠিক সন্ধ্যা নামার আগে নাচ শুরু করে ভোরবেলা নাচ শেষ হতো। হয়তো কয়েক রাত ব্যাপীও চলতো সেই নৃত্য প্রদর্শন। কিন্তু এখন নৃত্যের সময় সীমিত রাখা হয়।
এই নৃত্যে নৃত্যশিল্পীরা থাকেন স্টেজের সামনে এবং পিছনে ডানদিকে বসেন সঙ্গীত ও বাদ্যের দল। গায়ক বসেন ডানদিকে একেবারে সামনে যাতে দর্শকরা তার গান ও কথা শুনতে পান।
পোশাকঃ এই নাচে সবচেয়ে বিস্তারিত পোশাক ও সাজসজ্জা ব্যবহৃত হয়। পুরুষ নৃত্যশিল্পীদের বিশাল মুকুট, মুখোশ, মুখ ও চোখের সাজসজ্জা, মাথার বেণী, বিরাট জমকালো কোমরে ছাতার মতো ঘেরযুক্ত পোশাক ইত্যাদি দেখা যায়। মহিলাদের সাজপোশাক তুলনায় কম। তাঁরা মুখোশ ব্যবহার করেন না।
কথাকলিতে চরিত্রগুলি কিরকম সেই অনুযায়ী সাজসজ্জায় রঙ ব্যবহার করা হয়। দেব, দেবী, রাক্ষস, রাক্ষসী, সাধুসন্ত, পশু ইত্যাদির সাত ধরণের পোশাক ও সাজসজ্জার রঙ হয়। রঙগুলিতে চালের গুঁড়ো এবং শাকসব্জীর রঙ ব্যবহার হয়।
এগুলি হল পচ্ছা, পাঝুপ্পু, কাঠি, করি, থাডি, মিনুক্কু এবং টেপ্পু।
পচ্ছা (গ্রীন) – মুখের রঙ সবুজ, ঠোঁটে প্রবালের মতো লাল রঙ মহান চরিত্র যেমন কৃষ্ণ, বিষ্ণু, রাম, যুধিষ্ঠির, অর্জুন ইত্যাদি বোঝায়।
চুভানা থাডি (লালদাড়ি) – খল (ভিলেন) চরিত্রে ব্যবহার হয়, যেমন দুঃশাসণ, হিরণ্যকশিপু
বেল্লা থাডি (সাদা দাড়ি) – সাদা দাড়ি যুক্ত কোন মহান ব্যক্তিত্ব, যেমন হনুমানকে বোঝায়।
কারুথা থাডি (কালো দাড়ি) – শিকারী
মিনুক্কা (হলুদ বা গেরুয়া) – সাধু, সন্ত, মহান নারী চরিত্রে ব্যবহার হয়। মহিলারা এবং পুরুষ যারা মহিলা চরিত্রে অভিনয় করছেন, তাঁরা মাথার পিছনে একধারে উঁচুতে খোঁপা করেন এবং খোঁপা দক্ষিণভারতীয় রীতিতে সজ্জিত করেন।
টেপ্পু (বিশেষ প্রাণী) – পৌরাণিক নানা বিশেষ প্রাণী বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যেমন গরুড়, জটায়ু, হংস যারা সংবাদ বহণ করে আনেন।
কাঠি (ছুরি, নাইফ) – খল চরিত্রের হাতে থাকে
করি (কালো পোশাক) – খলনায়িকা

মুদ্রা – চব্বিশটি হস্তমুদ্রা ব্যবহার হয়
মুখভাবম – নয়টি – নবরস প্রকাশ করে (শৃঙ্গার, রতি, হাস্য, করূণা, রুদ্র, বীর, ভয়ানক, বীভৎস, অদ্ভুত, শান্ত)

কথাকলি নাচ শুরু হয় বাদ্যযন্ত্রগুলি বাঁধা এবং তালের সঙ্গে শিল্পীদের ধীরে ধীরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে নৃত্যের প্রধাণ অংশগুলি হল, প্রথমে
থোডায়াম ও পুরাপ্পাডু – এগুলি বিশুদ্ধ নৃত্য যেখানে শিল্পী কলা এবং পদচারণ প্রদর্শন করেন। থোডায়াম পর্দার পিছনে হয়। পোশাক(কসটিউম) পুরো পরা হয় না। পুরাপ্পাডু পুরো পোশাক পরে পর্দা উঠে গেলে করা হয়।
এরপর প্রধাণ নৃত্যনাট্যাংশ শুরু হয়। এটি চার ভাগে বিভক্ত। কলসম (সবচেয়ে প্রধাণ এবং সাধারণ অংশ), ইরাত্তি (যুদ্ধ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, সঙ্গে চেমপাত্তা তাল বাজে), থোঙ্কারম (যুদ্ধাংশ, কিন্তু অন্য তালে), নিলামিরাত্তি (স্টেজ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় এবং নাটকের দুই অঙ্কের মধ্যে ব্যবহৃত হয়)
কথাকলিতে শিল্পীরা নানাভাবে মঞ্চপ্রবেশ করেন, যা আর অন্য কোন শাস্ত্রীয় নৃত্যে নেই।
১। সোজাসুজি মঞ্চে প্রবেশ। কোন পর্দা থাকে না সামনে।
২। দর্শকদের মধ্য থেকে শিল্পীরা প্রবেশ, দর্শকদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরীর জন্যই মূলত করা হয়, কারণ আগে কথাকলি খোলা মাঠে সন্ধেবেলার পর করা হত এবং মশালের আলোয় শিল্পীরা প্রবেশ করতেন।
৩। স্টেজে পর্দা থাকে, আস্তে আস্তে, কিছুটা কৌতুহল তৈরী করে, পর্দার আড়াল থেকে শিল্পী বার হন। একে টিজ অ্যান্ড সাসপেন্স, বা নক্কু বলা হয়।
কথাকলি নাচে সঙ্গীতের গুরুত্ব অসীম। সঙ্গীতের সঙ্গে সঙ্গেই নাটক বা গল্পটি বলা হয় এবং শিল্পীরা নাচেন। বিভিন্ন ধরণের নাট্যাংশে বিভিন্ন রকম ভাবে সঙ্গীত প্রয়োগ করা হয়।
সবচেয়ে বেশী ব্যবহৃত হয় চেম্পাডা – অনেক ধরণের মুড, নায়ক খলনায়কের যুদ্ধ অথবা একটি দৃশ্যের শেষে এটি ব্যবহার হয়।
এ ছাড়া আছে চেম্পা – নায়ক নায়িকার মধ্যে মান অভিমান ঝগড়া বাগবিতন্ডার সময় এটি ব্যবহার হয়।
পাঞ্চারি – যুদ্ধের প্রস্তুতি, যেখানে অস্ত্রশস্ত্রে ধার দেওয়া বোঝাচ্ছে সেখানে ব্যবহার হয়।
আদান্থা – রাজা বা দেবতারা যে সব সিনে থাকেন সেখানে ব্যবহার হয়।
মুড়ি আদান্থা – হাসির সিনে বা দ্রুতগামী কোন সিনে বা নায়ক যেখানে রেগে গিয়ে দ্রুত কিছু করছেন সেখানে ব্যবহার হয় এই সঙ্গীত।

বিভিন্ন ধরণের বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হয়। বিভিন্ন তালযন্ত্রের মধ্যে ব্যারেলের মতো দেখতে মড্ডলম, সিলিন্ডারের মতো চেন্ডা যেটি বাঁকা লাঠি দিয়ে বাজানো হয়, ইডাক্কা যেটি বালুঘড়ির মতো দেখতে এবং নারী চরিত্রের সঙ্গে সুরেলা বাজনায় ব্যবহার হয়।
গুরু-শিষ্য পরম্পরায় এই নাচ শেখানো হয় বহু শতাব্দী ধরে। বর্তমানে এই নৃত্য শেখার মূল গুরুকূল হল কেরালা কলামন্ডলম।
কথাকলি নাচের এক বিখ্যাত
শিল্পী বর্তমানে অশীতিপর বৃদ্ধ কলামন্ডলম গোপী। তার বর্তমান বয়স আশির ওপর। প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি নাচছেন। বর্তমানে এই নাচকে বাঁচিয়ে রাখার দায় তার স্কন্ধে।
তিনি কীচক-বধে কীচক, উত্তরাসয়মম্ভরম এক খল চরিত্র দুর্যোধন, নল-দময়ন্তী ইত্যাদি পালায় অসাধারণ নৃত্য ও অভিনয় প্রদর্শন করেছেন। কলামন্ডলম গোপীর মতে কথাকলি নাচ সব ধরণের শাস্ত্রীয় নৃত্যের চেয়ে কঠিন! এই ধরণের চরিত্রগুলি ঠিক ভাবে ফুটিয়ে তোলা এত কঠিন বলে বর্তমানে কথাকলি নাচ অনেক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ এবং বর্তমান প্রজন্ম আরো সহজে এই নাচ বুঝতে পারে। কথাকলিকে বাঁচিয়ে রাখতে গেলে যা খুবই প্রয়োজন।
কথাকলির সঙ্গে বাংলার ছৌ নৃত্যের অনেক মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ছৌ নৃত্য পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া অঞ্চলের নৃত্য। এই নাচেও পৌরাণিক গল্পকথা, মুখোশের ব্যবহার, নানা ধরণের যুদ্ধবিদ্যা ও লড়াই, বড় বড় মুকুট ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়। সঙ্গে বাজে ঢোল ও আড় বাঁশী। তবে দুইয়ের মূল তফাত হল পিছনের সঙ্গীতাংশে। কথাকলিতে সঙ্গীতাংশে সংস্কৃত শ্লোকের ব্যবহার এবং শাস্ত্রীয় রাগের ব্যবহার, নৃত্য-অংশে শাস্ত্রীয় হস্ত ও পদ মুদ্রা, ঘাড়ের কাজ ও চোখের মুদ্রা ব্যবহার একে শাস্ত্রীয় নৃত্যের মর্যাদা দিয়েছে। অপর পক্ষে ছৌ নাচে লোকসঙ্গীতের ব্যবহার একে লোকনৃত্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

কথাকলি রবীন্দ্রনাথের বিশেষ প্রিয় ছিল। আজও রবীন্দ্র নৃত্যের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দুটি শাস্ত্রীয় নৃত্য শিখতেই হয়। একটি কথাকলি, অন্যটি মণিপুরী। রবীন্দ্রনাথের নৃত্যশৈলীতে এই দুটির প্রভাব খুব বেশী। কথাকলি কবির প্রিয় হওয়ার প্রধাণ কারণ এই নৃত্যের মাধ্যমে নাটক বা গল্প বলা যায় খুব সহজে। শান্তিনিকেতনে ১৯২০ সাল থেকে রবীন্দ্র নৃত্যের শাখাটি পরিপুষ্ট করার দিকে নজর দেন কবিগুরু এবং এর দায়িত্বে ছিলেন প্রতিমা দেবী ও শান্তিদেব ঘোষ। তাঁরা শাস্ত্রীয় ও লোক নৃত্যের মিশ্রণেই রবীন্দ্রনৃত্যশৈলী গড়ে তুলবেন মনস্থ করেন। বিভিন্ন স্থানে নানারকম নৃত্য দেখতে যেতেন তাঁরা এবং ফিরে এসে কবিগুরুকে জানাতেন তাঁদের অনুভব। এভাবেই কথাকলি ও মণিপুরী নৃত্যশৈলী চয়ন করা হয় শেখানোর জন্য। শান্তিদেব ঘোষ তখন সদ্যনির্মিত কেরালা কলামন্ডলমে যান এবং শিখে আসেন কথাকলি নাচের মূল বিষয়গুলি। এরপর কবিগুরু ক্রমেই এই নাচে আরো উৎসাহী হওয়ায় কেলু নায়ারকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসা হয় এই নাচ শেখানোর জন্য।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।