ধারাবাহিক প্রবন্ধে তপশ্রী পাল (পর্ব – ২০)

আলাপ

কথিত আছে বাহাদুর শাহই বিষ্ণুপুরে এক নতুন ঘরানা প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও এই সম্পর্কে কিছু মতভেদও আছে।  কিন্তু আমি সর্বাধিক প্রচলিত তথ্যের ভিত্তিতেই এই আলোচনা করবো। বিষ্ণুপুরে বসবাস শুরু করার পর, বাহাদুর শাহ অনুভব করলেন যে বাংলা ভাষা সুমধুর নরম লালিত্যপূর্ণ একটি ভাষা। বঙ্গের মানুষও নরম প্রকৃতির, শিল্প সাহিত্য ও সঙ্গীতপ্রেমী। তাই এখানে ধ্রুপদের জোরালো কালোয়াতি চলবেনা। ধ্রুপদকে ছোট করে মিষ্টি করে গাইতে হবে। তিনি একটু অন্যরকম ধ্রুপদ ও ধামার গায়নরীতি তৈরী করলেন। রাগগুলিতে গমক দমকের ব্যাবহার কমিয়ে মীড় ও কোমল স্বরের প্রয়োগ বাড়ালেন। তিনি যে শুধু কন্ঠসঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন তা নয়। তিনি বীণা, রবাব, সুর শৃঙ্গার সমান ভাবে বাজাতে পারতেন। তাই সবদিকেই ঘরানা পরিপূর্ণতা লাভ করল । ক্রমে রামশরণ ভট্টাচার্য ও অন্যান্যদের পেলেন শিষ্য হিসাবে। গড়ে উঠলো বিখ্যাত বিষ্ণুপুর ঘরানা যার সঙ্গে সেনিয়া ঘরানার সরাসরি সম্পর্ক থাকলেও তা নিজ বৈশিষ্টে এক অনন্য ঘরানা।
রাজা দ্বিতীয় রঘুনাথ দেব ও রানী দুজনেই ছিলেন সঙ্গীতের ভক্ত। ভোরে ও সন্ধ্যায় রাজবাড়ির প্রাঙ্গনে মার্গসঙ্গীতের আসর বসাতেন বাহাদুর শাহ ও তাঁর শিষ্যরা। স্বর্গীয় সঙ্গীতের মূর্ছনায় ভরে উঠত চারিদিক। কখনো রাজা ও রানী যোগদান করতেন ও অংশগ্রহণ করতেন সঙ্গীতে।
বিষ্ণুপুর ঘরানার মূল বৈশিষ্ট্য ছিলো তার ধ্রুপদ ও ধামার গান। এই গানে খেয়ালের মতো বিস্তার বা তান করা হয় না। ধ্রুপদ খানিকটা বন্দনার মতো। প্রথমে ধীর লয়ে আলাপ, জোড় ও ঝালা করে গান ধরা হয়। ক্রমে দ্বিগুণ তিনগুণ লয়ে গানটি গাওয়া হয়। ছন্দের খেলা সেখানে বিশেষ উপভোগ্য। বিষ্ণুপুরের শিল্পীরা সেই ধরণের গানই করতেন।
ক্রমে ধ্রুপদ ধামার থেকে বেরিয়ে প্রায় সব ঘরানাতেই খেয়াল গানের প্রচলন হলো। তাতে তান বিস্তার ইত্যাদির প্রয়োগ হতে লাগলো। তখনো কিন্তু বিষ্ণুপুর ঘরানা তাঁদের ধ্রুপদের বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছিলেন।
১৯২১ সালে ইংল্যান্ডের প্রিন্স এডোয়ার্ড যখন ভারত ভ্রমণে আসেন, তখন ছটি ঘরানার ছজন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পীকে গান গাইবার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার মধ্যে তিনজনই ছিলেন বিষ্ণুপুর ঘরানার – গোপেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ও ক্ষেত্রমোহন গোস্বামী।
ঘরানার ধ্রুপদের প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয় ১৯০২ সালে। “নাদ বিদ্যা সবসে সেরা” রাগ দরবারীতে আধারিত এই ধ্রুপদ পরিবেশন করেন সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। কালক্রমে এই ঘরানার শিল্পীরাও খেয়াল গাইতে শুরু করেছিলেন। খেয়ালের রেকর্ডও প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০২ সালে। রেকর্ড করেন লালচাঁদ বড়াল, যিনি রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাত্র ছিলেন।
বর্তমানে এই ঘরানার খেয়াল গায়কীতে দেখা যায় সহজ সরল আলাপ। অতিরিক্ত অলংকার প্রয়োগ কখনোই করা হয় না আলাপ ও বিস্তারে। এই ঘরানার খেয়ালের বৈশিষ্ট্য হলো এর মিষ্টতা ও মেলডি। দ্রুত খেয়ালে এঁরা অলংকারের প্রয়োগে তাকে আরো মনোগ্রাহী ও বিচিত্র করে তোলেন। অতি দ্রুত সাপাট তানের ব্যবহারও ঘরানার বৈশিষ্ট্য।
এই ঘরানায় এমন কিছু রাগ আছে যার চলন ও স্বর প্রয়োগ মূল রাগের থেকে কিছু অন্যরকম। যেমন এই ঘরানার পূরবী, সোহিনী, শ্যাম বিভাস ইত্যাদি। রবীন্দ্রনাথ এই ঘরানার প্রচলিত পূরবী ইত্যাদি ব্যবহার করেছেন তাঁর গানে, যা আমরা রবি-পূরবী বলে জানি। পূরবীতে কোমল ধৈবতের সঙ্গে শুদ্ধ ধৈবতের প্রয়োগে তা বিশিষ্ট হয়ে উঠেছে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীতগুরু যদুভট্ট ও বিষ্ণু চক্রবর্তী ছিলেন বিষ্ণুপুর ঘরানার।
এই ঘরানার শিল্পীদের তিনটি বংশ এখন এই ঘরানাকে সমৃদ্ধ করছেন। একটি পন্ডিত সত্যকিংকর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্র শ্রী অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, নীহাররঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ইত্যাদি। একটি লালচাঁদ বড়ালের পুত্র রাইচাঁদ বড়ালের পরিবার, যারা চলচ্চিত্রের সঙ্গেও বিশেষভাবে যুক্ত হয়েছিলেন। তৃতীয় পরিবারটি হলো সেতার শিল্পী মণিলাল নাগ, মিতা নাগের পরিবার। এঁরা সবাই আকাশবানীর টপ গ্রেড শিল্পী, দেশে বিদেশে সঙ্গীত পরিবেশন করে চলেছেন, অসংখ্য রেকর্ডে ধরা আছে এদের গানবাজনা এবং আছে এক বিশাল ছাত্রছাত্রীর দল যারা এগিয়ে নিয়ে চলেছে এই ঘরানাকে। আমার প্রণম্য গুরু শ্রী অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স এখন পঁচানব্বই বছর। তাঁর পায়ের কাছে বসে দীর্ঘ সাতাশ বছর সঙ্গীত শিক্ষা করেছি। এই বয়সেও তাঁর কন্ঠসম্পদ অসাধারণ! তিনি তান শিক্ষা করেন ওস্তাদ আমীর খানের কাছে। তাঁর দ্রুত তান শুনলে এখনো গায়ে কাঁটা দেয়! তাঁর ছাত্রদের মধ্যে আছেন পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর মতো শিল্পী।
অমিয়রঞ্জনের পুত্র পন্ডিত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন সঙ্গীত পরিবেশনের পাশাপাশি ভোকাল সায়েন্স নিয়ে রিসার্চ করছেন ও বিষ্ণুপুর সঙ্গীত ঘরানার এক আর্কাইভ গড়ে তুলেছেন।
এই প্রসঙ্গে এবার একটু বলি কীভাবে গুরুজী শ্রী অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, যাঁকে আমি স্যার বলে ডাকতাম, তাঁর কাছে শেখার । আমার শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষা শুরু হয় তার অনেক পূর্বে। আসানসোলে থাকাকালীনই লক্ষ্ণৌ ভাতখন্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের “সঙ্গীত বিশারদ” দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পরীক্ষা দেওয়া হয়ে যায় মাত্র বারো বছর বয়সের মধ্যেই। কলকাতায় এসে মার্গসঙ্গীত চর্চা চলতে থাকে গুরু সঙ্গীতাচার্য নন্দলাল অধিকারী মহাশয়ের কাছে। তাঁর কাছেই আমি প্রখ্যাত পাখোয়াজ বাদক রাজীবলোচন চক্রবর্তী ইত্যাদিকে দেখি। তাঁর কাছে আবার নতুন করে প্রয়াগ সঙ্গীত সমিতির সঙ্গীত প্রভাকর ডিগ্রীর জন্য শিক্ষা শুরু করলাম। খেয়ালের বিভিন্ন রাগ রাগিনী ধ্রুপদ ধামার সবই শিখছি, বছরের পর বছর পরীক্ষা দিয়ে পাশও করে যাচ্ছি। গুরুজী নানা অনুষ্ঠানে স্টেজে গাওয়ার সুযোগও করে দিচ্ছেন। রেডিওর যুববানীতে গাওয়ার সুযোগও পেলাম। ক্রমে “সঙ্গীত প্রভাকর”ও হয়ে গেলাম। কিন্তু মনে প্রবল অশান্তি। প্রকৃত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত কি আমি গাইতে পারছি? যে সব অসাধারণ শিল্পীর সঙ্গীত আমার কর্ণকুহরে প্রবেশ করেছে সেই শিশুকাল থেকে, এই প্রথাগত শিক্ষা তো তার ধারপাশেও নিয়ে যেতে পারছে না আমাকে। এবার প্রথাগত শিক্ষা শেষ। তাই ভালোভাবে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখতে হবে। কিন্তু পড়াশোনার চাপ তখন প্রবল! যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে ফিজিক্সে বি এস সি করে সবে সায়েন্স কলেজে ঢুকেছি ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনীয়ারিং পড়ার জন্য। পাশাপাশি প্রবল চেষ্টা করছি মূল আকাশবাণীতে খেয়ালের অডিশনের জন্য। সে বড় কঠিন ঠাঁই। এতো পড়াশোনার পরিসরে সঙ্গীত সাধনার সময় সীমিত।
আবার আমার পিতৃদেব লেগে পড়লেন। প্রথমে কোথা থেকে ঠিকানা যোগাড় করে আমাকে নিয়ে গেলেন গোয়ালিয়র ঘরানার বিখ্যাত খেয়ালিয়া শ্রীমতি সুনন্দা পট্টনায়কের বাড়িতে। শুনেছি তাঁর গান রেডিওতে অনেকবার। কিন্তু গাইবার স্টাইলটি মনোগ্রাহী লাগেনি তেমন। কিন্তু তাঁর নামডাক প্রচুর। যাই হোক, তাঁকে দেখে বেশ ভয় ভয় লাগলো। মনে হলো যেন এক সংসারত্যাগী সন্ন্যাসিনী! শ্বেতবস্ত্র পরিধানে। কপালে চন্দনের তিলক। একাই থাকেন সল্টলেকের বাড়িতে। আমাকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করে জিজ্ঞাসা করলেন যে আমি কী করি। বি টেক করছি শুনেই প্রায় লাফ দিয়ে উঠে বললেন “না না! হয় ইঞ্জিনীয়ারিং না হয় সঙ্গীত! শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখতে হবে অন্য সবকিছু ছাড়তে হবে! আগে তো গুরুগৃহে থাকতে হতো! আগে আমাকে কথা দিতে হবে যে ইঞ্জিনীয়ারিং পড়া বন্ধ করে দেবে, তাহলেই আমি শেখাবো।“ এই শর্ত মানা আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না। কারণ সঙ্গীতকে যেমন ভালোবাসতাম, পড়াশোনা, ক্যারিয়ারের ডাকও তার চেয়ে কিছু কম ছিলো না। অতএব সুনন্দাজীর কাছে শেখা হলো না। গুরুর সন্ধানে যখন ঘুরে বেড়াচ্ছি, তখন হঠাত একদিন আমার এক স্কুলের বন্ধুর সঙ্গে দেখা। সে তখন গুরুজীর সন্ধান দিলো। তাঁর কাছেই সে শিখতো তখন। বন্ধুটির মা, তিনিও সঙ্গীত শিল্পী, বললেন গুরুজীর ঘরানার কথা। তিনি তখন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগের প্রধান এবং রেডিওর টপ গ্রেড শিল্পী। শিক্ষক হিসাবেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। চললাম সেই বন্ধুর সঙ্গে গুরুজীর কাছে। গুরুজী থাকতেন দক্ষিণ কলকাতার বিবেকানন্দ পার্কের কাছে একটি বহুতল আবাসনে। কিন্তু আমি তখন উত্তর কলকাতার বরানগরের বাসিন্দা। অতএব উত্তরে তাঁর শিক্ষাস্থল গিরীশ পার্কের কাছে একটি বাড়িতে গেলাম। মার্বেল বাঁধানো পুরোনো দিনের একটি বিশাল বাড়ির দোতলায় উঠে এলাম। বাইরের চক-মিলানো বারান্দায় অপেক্ষা করতে করতে ভিতর থেকে শুনছি আমাদের আগের ব্যাচের ছাত্রছাত্রীরা শিখছে। প্রথম দিনেই আকর্ষণ করেছিলো অপূর্ব সুন্দর বন্দিশ! তারপর গুরুজীর তান শুনলাম! মনে মনে প্রণাম করলাম এই গায়কীকে। মনে হলো যেন প্রকৃত খেয়াল শুনলাম! ক্লাস শেষ হলে ভয়ে ভয়ে ভিতরে গেলাম। বন্ধুটি পরিচয় দিলো। আমার গান শুনতে চাইলেন। বেহাগে একটি বন্দিশ শোনালাম। মাথা নেড়ে জিজ্ঞাসা করলেন কার কাছে শিখেছি। কী পড়াশোনা করি ইত্যাদি। আমি তো ভয়ে ভয়ে ছিলাম যে উনি না করে দেবেন। কিন্তু উনি বেশ হাসি হাসি মুখে ঠাট্টা করে জিজ্ঞাসা করলেন ইঞ্জিনীয়ারিং আর খেয়াল দুটোই একই ব্যাপার। মাথাটা পরিষ্কার থাকলে সবই সহজ। আর চাই সাধনা। খুব আধুনিক মনে হলো গুরুজীর দৃষ্টিভঙ্গী। একবারও বললেন না যে ইঞ্জিনীয়ারিং পড়লে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখা যাবে না। বললাম যে আমি যুববানী তে গাই, মূল আকাশবাণীতে অডিশন দিতে চাই। গুরুজী শুধু বললেন “তোমার গলা ভালো। কিন্তু এখন অবধি যা শিখেছো, ভুলে গিয়ে আবার শিখতে হবে। অন্ততঃ দু বছর আমার কাছে শেখার পর আমি নিজেই বলবো যখন তুমি তৈরী হবে।“ প্রথম দিনই পেলাম রাগ পুরিয়া ধানেশ্রী! বিস্তারের কী চলন! রাগদারী কী চমৎকার! রাগের ছবিটি যেন অল্পের মধ্যে চোখে স্পষ্ট হয়ে উঠলো! কিছু তানের রাস্তাও দেখিয়ে দিলেন। সেদিন প্রায় স্বপ্ন দেখতে দেখতে বাসে ফিরলাম। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে কখন যে নিজের মনে পুরিয়া ধানেশ্রীর বিস্তার, চলন, তান প্র্যাকটিস করে চলেছি, নিজেই জানি না। মনে হচ্ছে বাড়ি গিয়ে কতক্ষণে রেওয়াজে বসে আত্মীকরণ করবো এই রাগ! এই যে রেওয়াজ করার ইচ্ছা এবং খেয়ালকে ভালোবাসা, তা প্রথম দিনই মনে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন গুরুজী। তাঁকে আমি স্যার ডাকতাম, কারণ রবীন্দ্রভারতীর বিশাল ছাত্রদল শিখতে আসতো ওখানে। তারা সবাই তাই ডাকতো। খুব উৎসাহে নিজে ছুটতান তৈরী করে, রেওয়াজ করে ভয়ে ভয়ে গেলাম পরের দিন। গুরুজী ক্লাসে প্রত্যেকের কাছে আলাদা করে পুরো গান শুনতেন। কোন ছাড়াছাড়ি নেই। তাই গাইলাম তানপুরা নিয়ে। চেষ্টা করলাম নিজের বেস্ট দেওয়ার। আমার বন্ধুটিও ছিলো, কিন্তু সে ফাঁকিবাজ। রেওয়াজ করে আসেনি। আমার তান শোনার পর বললেন “দ্যাখ, ও তো সবে দুদিন আমার কাছে এসেছে! কেমন তান করছে! আর তুই?” সেদিন থেকেই ভালোবেসে ফেললেন আমাকে। তারপর এক দীর্ঘ শিক্ষার ইতিহাস। রের পর দক্ষিণে তাঁর বাড়িতে এবং সল্টলেকে এখন তিনি যেখানে থাকেন শিখেছি তাঁর পায়ের কাছে বসে। গুরু শ্রী অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় কেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় তা তাঁর কাছে গেলেই বোঝা যায়। অসম্ভব নিয়মানুবর্তি,সঙ্গীতের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ, মনের জানালাটি সর্বদা ভালো সঙ্গীত শোনা ও শেখার জন্য তৈরী, প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর শিক্ষা ও উন্নতির প্রতি মনোযোগী এবং সর্বোপরি অসম্ভব জ্ঞান, সুবক্তা, ও আধুনিকমনস্ক সঙ্গীতাচার্য অমিয়রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বহু পুরস্কারে ভূষিত, অসংখ্য কৃতি ছাত্রছাত্রী তাঁর। দেশে বিদেশে বড় বড় সঙ্গীত সমারোহে গেয়েছেন। ডোভার লেনে বহুবার শুনেছি তাঁকে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও এতোটুকু গর্ব, অহংকার তাঁকে আচ্ছন্ন করেনি। তাঁর সংস্পর্শে না এলে হয়তো শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে এমন আপন করে পেতাম না এবং ভালোবাসতে পারতাম না।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।