গদ্য কবিতায় তুলসী কর্মকার

ফিরে পাওয়া

পর্ব ১

নাট্যমঞ্চে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক
চশমা পরা
পাকা মাথা
পরনে পাতলুম
সাদা জামা
কাঁপাকাঁপা আঙুল
চিরকুট ব্যাগ হাতড়ে বের করছেন মান্যতা
অভিমান
অভিযোগ
কর্মদক্ষতা
প্রতিবাদ
ফেলে আসা বেলা
মন কেমনের সকাল
১০ টা ৪ টের বায়াস
স্কুল ভাত
দেখছেন আর গাল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে
সব অতীত
আর ফিরবে না
পাশ থেকে একজন প্রণাম করে
স্যার ভালো আছেন?
কী যেন নাম?
আমি নবনীল
কাকে কবে পড়িয়েছি স্মৃতির মধ্যে নেই
তবুও ঘাড় হেলিয়ে
হাসিহাসি ভাব
নিরর্থ হ্যাঁ সম্মতিতে বিদায়
তারপর বুক চাপড়ে
আমি ভালো নেই
সময় সব কেড়ে নিয়েছে
লড়াই থেমে গেছে
এখন কেবল নিজের সাথে চলি
নিজের কথা বলি
হাহাকার
হতাশায় ডুবে আছি
ক্রমশ অন্ধকার হয় মঞ্চ

পর্ব ২

একটি মোমবাতি জ্বলছে
অস্পষ্ট দুটি মুখ অঙ্ক কষছেন
খানিক পর বাদ বিবাদ
একজন অতীত থেকে ভবিষ্যৎ আঁকছেন
স্বপ্ন দিয়ে
অন্যজন বর্তমান থেকে অতীত আঁকছেন
বিশ্বাস দিয়ে
উভয়ের দাবী যুক্তিযুক্ত
এগিয়ে দেখি
কলেজের অধ্যাপক প্রফেসার জেরায়
ইনি ১৫ বছর আগে মারা গেছেন
অপরজন বাবা
১৪ বছর আগে হারিয়েছি
প্রফেসার জেরায় -পিঠ চাপড়ে বললে। এই তো উপযুক্ত প্রমাণ। টিউশন ফি মাসে ৫০ টাকা দিতে রাজি হয়নি। প্রফেসার হতে পারেনি। স্বপ্নের ভবিষ্যৎ বাস্তবায়িত হয়েছে। গণিত ঠিক।
বাবা -আমায় দেখে চিৎকার করে বলেন এইতো ‘আমি’ বর্তমান তোর মধ্যে বিরাজ করছি। ক্রোমোজমের অনেক অতীত তোর কাছে গচ্ছিত। অঙ্ক অতীত খুঁজে পেয়েছে।
এরই ফাঁকে একটা ঝোড়ো হাওয়া। বাতি নিভে যায়। গা ছমছম করে। মুঠো বন্ধ হয়। দূর থেকে ভেসে আসে আলো। মঞ্চ খালি, উভয়ে চলে গেছেন। মুঠো খুলে দেখি বিশ্বাস আর স্বপ্ন লেগে আছে।

নাটিকা
তুলসী কর্মকার

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।