T3 || ঈদ স্পেশালে || লিখেছেন তাজ ইসলাম

১| নারী নকশিকাঁথা ও কবিতা

কবিতা একটা বিছানা
প্রথমত একান্ত আন্তরিকতায়
পাতা হয় সব বিছানা।
ছেঁড়া কাঁথাই যার শেষ সম্বল
পরিত্যক্ত সিমেন্টের বস্তার উপর
কাঁথা মেলেই এলিয়ে দেয়
সে তার দেহ।
কবিতা একটা বিছানা
প্রথমত সব বিছানার
প্রাথমিক স্বীকৃত নাম বিছানা।
কাঁথাকে করে নান্দনিক
সূতা আর সুঁইয়ের ফোঁড়ন।
তারপর নকশিকাঁথার বিছানা
হয় অনন্য, দৃষ্টি কাঁড়ে
নন্দনে তার অজস্র চোখের।
কবিতা একটা বিছানা
বিছানায় কাঙ্খিত নারী,
সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে
মনোরম করে তুলে কবিতা প্রেমিক।
কবিতা একটা বিছানা
যে কবি যত বেশি
ইতিহাস, ঐতিহ্য মীথের মালিক
রাজার পালঙ্কে সে তার বিছানা সাজায়।
কবিতা একটা বিছানা
যার আছে যত বেশি
শব্দ কল্প উপমার জোছনা হাতে জমা
প্রজ্ঞার সরোবরে যে দিয়েছে
যত বেশি ডুব,
সৌন্দর্য্য পিপাসু মন
ঐশ্বর্যের সমুদ্রে যার ভ্রমণ অশেষ ;
সেই কবি কবিতার বন্দরে সফল নাবিক।

২| ভয়

মাথায় ঝুঁটি ওয়ালা মোরগ
লাল ডোরা কাটা মোরগ
এবং অন্যান্য ছোট ছোট মোরগ
খুব আগ্রহভরে জানতে চায়
এখন কুক কুরু কুক করে
মুখর করনা কেন সোবহে সাদেক?
দুর্বা ঘাস খুঁটতে খুঁটতে
রাতা মোরগ বলে “ভয়ে”।
বসন্তের একখন্ড রোদ এসে
হাসতে হাসতে বসে আমের মুকুলে
নারকেল গাছ থেকে উড়ে এলো
ছায়াচ্ছন্ন এক বুড়ো বিকেল
গোলাপের সুবাস এলো
এলো ভ্রমরের গুঞ্জরণ
নুপুর বাজাতে বাজাতে এলো
চৈত্রের প্রথম প্রহরের প্রেম
মাতবর বাড়ির উঠোনে
সবাই বসে আছে শালিশে গোল হয়ে
বসন্তকে মধ্যমণি করে ।
এখনো কোকিল আসেনি,
শিমুলের ডালে কোকিল কুহু ডাকতেই
সমস্বরে সবাই বলে ওঠে
তুমি আসনি কেন?
কোকিল জড়োসড়ো হয়ে
কুহু কুহু স্বরে বলে ‘ভয়ে’।
সহসা সাহসের গ্লাস কাত হয়ে
ভয়ের পানি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে
টেবিলে।
ভীতসন্ত্রস্ত সবাই ছুটতে ছুটতে
হারিয়ে যায় রাতের কোটরে।
কেবল একজোড়া চোখ তাকিয়ে দেখে
পোকা আহার রত টিকটিকির মত
ভয়ের আজদাহা গিলে খায়
সাহসী পাখিদের সকল উড়াল।
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!