মার্গে অনন্য সম্মান শ্রীস্বদেশ সাধক সরকার (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৮২
বিষয় – নক্ষত্র

অন্তরালে

তোমার সাথে পরিচয় পরিচিতি মিলল
আকাশের গায়ে যখন তোমাদের চিকন
চাকন মিটিমিটি চাহনি সবার কাছে এসে
পৌঁছায়,তখন সেই শিশুবেলা মা,দাদা,
দিদি ,বৌদিরা কোলে নিয়ে বলতো ,ঐ দেখ
কি সুন্দর সব তারা ,তোকে কত কথা বলছে,
সে মধুর ,সে আলাপী ভাবনা আর স্নেহময়
আদুরে কথালাপ আজকের প্রজন্ম তো
ভুলতে বসেছে। সে আাকাশে সে নক্ষত্ররাশি
আজও সময়, তাল,ছন্দ সবই ঠিক রেখে
তাদের কথা আছ ও বলে কিন্তু হায়রে
নক্ষত্রমন্ডলী তোমার পরিবেশ পরিচয় দূষিত
না হলেও বসুন্ধরা যে আজ শ্রান্ত,ক্লান্ত,
অবসন্ন দিশেহারা সবুজহারা এক বিদেহী
কঙ্কাল যার অস্হিচর্মসার দেহ অন্ধ মলিন
বেশে কাতর নয়নে শুধুমাত্র নানান নক্ষত্রের
মধ্যে অশ্লেষা,মঘার মধ্যে বিচরণ করছে ,
তারা উত্তরা,পূর্বাশা,ভবানী, অশ্বিনী,কৃত্তিকা,
অনুরাধা,বিশাখা,শতভিষা,রেবতী সহ
বাকিদের কথায় বিস্মরণ ঘটিয়ে ইহজগতকে
তাদের আদরের পাদপীঠ হতে ধূলায়
ধূলিময় করে স্নাত হচ্ছে~বুঝলে ভায়া~!
নক্ষত্র শুধু তুমি নও,তোমার নামে রূপক
আছে,আছে উপমা,আছে উপমিত~তুমি
এক অনন্যা,এক চিন্তা,চেতনা ও মননের
কল্পনাবিলাসী আঙ্গিনা যেখানেে হংসবলাকার
মত সাবলীল স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে কবিরা
লেখে কবিতা,সাহিত্যিকরা রচনা করেন
উপন্যাস,তর্ক ও যুক্তির মধ্যেও তোমার
গমনাগমন এক মধুময় উঠান বিশেষ।
শুধু কি তাই,তুমি ছিলে বলেই খেলোয়ার
পরিচিত হয় নক্ষত্র হিসাবে,রাজনীতিবিদ
হতে সমাজ সংস্কারক সবাই এক এক
সময় সমকালীন বাতাবরণে তোমার নামে
খ্যাত হয়ে সমাজকে করে তোলে জীবন
পথের পথিক,দর্শনের দূত,ভবিষ্যতের
রূপরেখা ।
তোমার আকাশে সাঁঝতারা হয় শুকতারা~
যার মধ্য দিয়ে তুমি বলতে চাও রাতের
অন্ধকারে যে ফুল ফোটে,ধূলায় সে লুটালেও
আবার ভোরে সে তার গন্ধ ছড়ায় অর্থাৎ
জীবন ফুরায় না,সে সাঁঝতারা হয়ে উঠলেও
সে সকালের শুকতারা। নবজীবনের
অঙ্কুরোদ্গমের নব কিশলয়ের নব নব
হিল্লোলে জনজীবনের প্লাবতা~তাই তো
তুমি পূর্বাশা,তুমি উত্তর ফাল্গুনী,অনুরাধা,
বিশাখা,চিত্রা।
সত্যিই তোমার নামে কত জনের নাম,তবুও
কেন যেন পৃথিবী নক্ষত্রের শোভা বলয়ের
বিন্দুমাত্র আলোর ছটা হতে পারল কই~
তোমার নামেই নাকি গণ,যোগ,রাশি র
নামকরণ আর যার সাথে সম্পর্ক করে দাও
দোষ গুণের মাত্রা,তুমিই যাত্রপথের পথে
দিশা,অনুষ্ঠানের পুরোহিত।
সত্যিই বিচিত্র সমাহারের তুমি বিভুভূতি।
তোমার নীলাকাশে পূর্ণিমার চাঁদের সাথে
যেন এক প্রেমগাথা রাসলীলা,আবার
মেঘলা দিনে বিরহের যন্ত্রণা বিধুর কাতর
অনুরাগ আবার অমাবস্যার কালো রাতে
লুকোচুরিরর খেলায় যেন ভালবাসার
প্রেমজ উদ্যানে পাখির বিলাপ সুরের
অনাস্বাদিত এক আগামীর প্রত্যাশা~
কাজেই তুমি নক্ষত্রমন্ডলী সত্যিই বহুরৃূপী,
সত্যিই ছদ্মবেশী,সত্যিই আনন্দের বাসার
নিত্য সহযাত্রী আবার দুঃখের দিনের ও তুমিই
আশা সঞ্চারিণীর পূরোধা~
নির্মল আকাশের নীল নীলিমায় তোমার
জ্যোতি,তোমার আলাপনী,তোমার বেশভূষা
যেন চরিত্রের আসল বৈশিষ্ট্য ,সহাবস্থানের
এক পাদপীঠ যা দেখে মানুষ তার লব্ধ
শিক্ষাকে পরিশীলিত,পরিশ্রুত,বেগবান ও
স্হিতধীকে পাথেয় করে ভবিষ্যতের
মানচিত্রকে আঁকতে পারে ।
তুমিই কালপুরুষ,তুমিই ধ্রুবতারা ,তুমিই
ছায়াপথ আগামীর স্বপ্নময়ী স্বপ্ন জগতের
আভিযাত্রী।
তুমিই বিজ্ঞান মনস্কতার অগ্রদূত আবার
তুমিই কুসংস্কারগ্রস্ত মননের সৃত্রপাতের
সারণী হয়ে ইহজগতের টাইমটেবিল।
হে ,নক্ষত্রমন্ডলী মহারাজাধিরাজ,তোমার
অন্তরালে অনন্ত রহস্যের অনন্ত জিজ্ঞাসার
জিজ্ঞাসু মননে আজও এ ধরিত্রী অপার
বিস্ময়ে চির ধাবমান প্রকৃতির এ লীলার
রহস্য উদ্ঘাটনে আপামর বিজ্ঞানী ,
জ্যোর্তিবিদ,প্রযুক্তিবিদ,পদার্থবিদ সহ
সমাজের বৃহত্তর অগ্রণী সুধীমন্ডলী~
তুমি থাক শান্তিতে,রাখ শান্তিতে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।