মার্গে অনন্য সম্মান শ্রীস্বদেশ সাধক সরকার (সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার
সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা নং – ১২০
বিষয় – বাঙালির ভ্যালেন্টাইনস ডে
প্রথম চোখের আলাপ
ভ্যালেন্টাইনস ডে কেমন যেন কাটখোট্টা
কথা কিন্তু তা হলেও বাঙালিরা তাকে কেমন
যেন সাদরে বরণ করে নিল বিংশ শতাব্দীর
শেষের দিকে ,অনেকে মাতৃভাষা কে
দুগ্ধসম মনে করলেও বেসরকারী স্কুল মানে
বাংলায় ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে পড়া ছাত্র
ছাত্রীদের মধ্যে তার আকর্ষণ বাড়তে লাগল
যা আস্তে আস্তে ভাইরাসের মত সামগ্রিক
রূপ নিল ও আজ কার্যত বেশ সচল।
কারণ বাজারি ব্যবসা একে বাজারিকরণ
করে মুনাফা করার এক কৌশল করে নিল ।
যে ভ্যালেন্টাইন সাহেব বিবাহ প্রথা নিষিদ্ধ
হওয়ার বিরুদ্ধে গোপনে খ্রীষ্টিয় ধর্মমতে
বিয়ে দেয়ার ব্যবস্হা চালু করে ফাঁসির
কাঠগড়ায় জীবন দিল~তার এই মহতী
উদ্যোগের পিছনে ভালভাসার অকৃত্রিম যে
সারবত্তা ছিল তা কিন্তু বর্তমান সময়ে
ভালবাসার আঙ্গিনায় দেখা যায় না। যদি
ও কেউ কেউ ভ্যালেন্টাইনকে চিকিৎসক
হিসেবে ভালবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা
করেন। যাই হোক~ভালবাসা ,অকৃত্রিম,
দেয়া নেয়ার পাদপীঠ,জীবন প্রতিষ্ঠার পরম
মূলধন ।
সেই ভ্যালেন্টাইন ডে কিন্তু বাঙালি মননে,
বাঙালি সংস্কৃতির আবহে বহুদিন ধরেই
চালু ছিল আর তা হল “বসন্ত পঞ্চমী”বা
সরস্বতী পূজোকে কেন্দ্র করে তার মুকুল
বা মঞ্জরি উঠতি নব যৌবনা যুবতী বা যুব
মনে যার চোখের প্রথম আলাপ অলিন্দের
গোপন কোণে বা মন্দির মন্ডপের নিভৃত
এলাকায় এক পলকের চোখের সে চাহনি
যেন কোন এক অপার আনন্দের অপরূপ
গোপন কথার গোয়েন্দা রহস্যের উপাখ্যান
গোপন থাকিলেও আপন খেয়ালেই ওপেন
হয়ে যায় ।
সেই বসন্ত পঞ্চমী যেন পরম্পরার প্রথম
কদম ফুলের পাপড়ির মিষ্টতা নতুন শাড়ি
যা বাসন্তিকা বেশে অপরূপ মোহময়ী সাজে
প্রকৃতির নব কলেবরে নব কিশলয়ের প্রাক
মুহুর্তের তটিনির নুপূর ধ্বনি যেন না বলা
কত কথা বলা হয়ে যায় , যার বিস্তৃতি বা
স্হায়ীত্ব কারো জানা নেই অথচ এ যেন এক
নবজীবনের দ্বারে অব্যক্ত প্রেমের
আলাপচারিতার প্রথম সোপান~!
বাঙালির সেই ভালবাসার প্রতীক কে আজ
ভ্যালেন্টাইনস ডে রূপে পরিচিতি দিতে
চাইছে যা পরম অপমানকর ও অসৌজন্যপূর্ণ
কারণ বাঙালির সংস্কৃতি,তার রুচি,তার
প্রেম,তার ভালবাসা ,তার কবিতা~তার
প্রথম চিঠি লেখা ,তার অর্ন্তদৃশ্য ,তার
বর্হিদৃশ্য সবই এক পৃথক সত্ত্বা,এক পৃথক
অভিরুচি ।
কাজেই ,নয়া প্রজন্মের নয়া দূতেদের সে
কথার বোঝার সময় আজকের বসন্ত পঞ্চমী।
বাঙালির সেই ধূতি,সেই পা‘জামা,পাঞ্জাবি
আর শাড়ি,চুড়ি,টিপ ,আর গলার মালা
যেন এক নব কিংশুকের নতুন অপ্রস্ফুটিত
চকিত চিখন চাওনি ,কোন এক স্রোতের
বর্ণমালার চিরন্তন কথকথা যাকে বাঁচিয়ে
রাখাই জীবন ও মননের ইতিবাচক
কর্তব্য ।
তাই নয় কি !