সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব – ৪০)

অদৃশ্য প্রজাপতি

রণো বলল, না না, উল্টোপাল্টা গাড়ি ধরলে হবে না। নতুন লোক দেখলে একেবারে ঘাড়ে চেপে বসবে। একটু দাঁড়ান না, আমি আপনাকে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি…

কথা শেষ হওয়ার আগেই একটা সাদা অ্যাম্বাসাডর তাদের সামনে এসে ব্রেক কষে দাঁড়াল। দরজা থেকে মুখ বের করে চালক বলল, কী রে, খালি নাকি?

রণো বলল, না রে বুক আছে। কোথায় যাচ্ছিস?

সে বলল, যাব আর কোথায়? এই তো বেরোলাম।

— যাবি?

— কোথায়?

— দৌলতাবাদ।
রণোর পাশে ধোপদুরস্ত পোশাক পরা দেবমাল্যকে এক ঝলক দেখেই সে বুঝতে পারল, তার বন্ধু এই লোকটার জন্যই গাড়ি নিতে এসেছে। তাই বলল, আপ-ডাউন লাগবে।

এখানকার গাড়িগুলো সাধারণত সকাল থেকেই বুক হয়ে যায়। যারা নেয়, তারা বেশিরভাগই ঘুরতে যায় মুর্শিদাবাদে। দর্শন করে একের পর এক ঐতিহাসিক নিদর্শন। ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যায়।

অ্যাম্বাসাডর, টাটা সুমো, স্করপিয়— গাড়ি অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন ভাড়া। এ সি হলে তার ভাড়া আরও বেশি। ভাড়া যাই হোক না কেন, প্রতি কিলোমিটার যা ভাড়া, ঘণ্টা-পিছু ধার্য হয় তার দশ গুণ। গাড়ি ছাড়ার সময় দেখা হয় কত কিলোমিটার চলেছে এবং কতক্ষণ সময় লেগেছে, হিসেব কষে যেটা বেশি হয়, যাত্রীকে সেটাই দিতে হয়। কিন্তু দূরে কোথাও কাউকে শুধু পৌঁছে দিতে হলে এরা যাতায়াতের ভাড়া একসঙ্গে দাবি করে। এ-ও তাই করল।

রণো বলল, আপ-ডাউন নিবি কী রে? একটু ঠিকঠাক করে বল। আমার দাদা। উনি একটু প্রবলেমে পড়েছেন। ওখানে গেলেই যে ওনার কাজ মিটে যাবে তা কিন্তু নয়। দরকার হলে অন্যান্য জায়গাতেও যেতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে উনি যেখানে যেখানে যেতে চাইবেন, সেখানে সেখানে নিয়ে যাবি। যতক্ষণ থাকতে বলবে, থাকবি। সেই বুঝে কিলোমিটার হিসেব করে যা হবে, নিয়ে নিবি।

— তুই যে বললি দৌলতাবাদ যাবে।

— হ্যাঁ, এখন দৌলতাবাদ যাবেন। উনি যে হোটেলে উঠেছেন, সেখানে। তার পর উনি কোথায় যাবেন, আদৌ যাবেন কি না, সেটা ওখানে গিয়ে ঠিক করবেন।

চালক বলল, রেট বলে দিয়েছিস তো?

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।