মার্গে অনন্য সম্মান স্বদেশ সরকার (সেরার সেরা)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পারিবারিক

সাপ্তাহিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ৭৪
বিষয় – সরস্বতী পূজা

শিক্ষা সার্থজনীন

সৃষ্টির পর হতে জীবন তার অনুশীলন,
অভিজ্ঞতা ,আচার-আচরণ ও কাজের
মাধ্যমে বুঝতে শিখল যে মগজের একটা
মনন আছে যা মানবিক সত্ত্বার প্রায়োগিক
দিকগুলিকে ক্রমান্বয়ে অগ্রগতি,প্রগতি বা
নব নব উন্মেষের প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে
যেতে সুচারু রূপে কাজ করে থাকে।
সেই ক্রমধারার মধ্যে চিন্তা ও চেতনের
ধারাবাহিক পরিচর্যায় সত্ত্বার কতকগুলি
মৌলিক অধিকার সে প্রতিষ্ঠিত করল। অবশ্য
এর জন্য আন্দোলন,অধিকার সচেতনতা ও
জীবনের নান্দনিকতার জন্য মানুষের কি
চাহিদা ও প্রয়োজন তা তারা শিখল।
ফলত দাবী দাওয়া পূরণের সাথে সাথে সে
তার মৌলিক অধিকারগুলিকে আয়ত্ব
করতে দেশে দেশে জনজাগরণ ও নব-
জাগরণ দেখা দিল যার ফলশ্রুতিতে সে
অন্ন,বস্ত্র,বাসস্হান ও শিক্ষার দাবীকে
প্রতিষ্ঠিত করল।
সেই চাহিদা পূরণে নিরবিচ্ছিন্ন আন্দোলনের
ফলে তা দেশে দেশে প্রতিষ্ঠিত হল ও শিক্ষা
সে তার ধারাকে ধারাবাহিক অনুশীলন,
পরিশীলন ও পরিচর্যার পর সেই আশ্রমিক,
টোল শিক্ষার পর সে তার ধারাকে
প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করল যদিও
শিক্ষা দুই ধারায় বিকাশ লাভ করে। প্রথাগত
শিক্ষা ও প্রথাবর্হিভূত শিক্ষা। এ ছাাড়াও
অভিজ্ঞতালব্ধ শিক্ষা ও অবশ্যই আছে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে স্কুল শিক্ষা ও অন-লাইন
শিক্ষার মধ্যে কার্যকরী কোনটি ও কেন~
স্কুল শিক্ষা এমন এক শিক্ষা যা পুঁথিগত
শিক্ষা ছাড়াও সামাজিক,প্রাকৃতিক ও
ব্যবহারিক জীবনে পরিবেশের সাথে যে
জীবন্ত বা প্রাণবন্ত আবেগ,অনুভূতি ও
গুরু শিষ্যের সম্পর্ক তৈরী করে তা আর
কোন শিক্ষাই দিতে পারে না।
স্কুল শিক্ষা তর্ক,বিতর্ক,সভা , আলোচনা
সভা,খেলাধূলা সহ আবৃত্তি ,নাচ,গানের
ব্যবস্হা করে জীবনের পূর্ণতা আনার ক্ষেত্রে
এক অনন্য অনুঘটক যা অন-লাইনে
অবাস্তব ও অকল্পনীয় ।
স্কুলশিক্ষা এমন এক শিক্ষা যা জাত,বর্ণ,
লিঙ্গ ,ধর্মের অনুশাসনে না থেকে মৈত্রীর
বন্ধনে বেঁধে মিলেমিশে ভারতীয় সংহতির
পরম্পরাবোধের যে কৃষ্টি তা তৈরী করে দেয়
যা অন-লাইন পারে না ।
স্কুল শিক্ষা এমন এক শিক্ষা যা জীবনশৈলীর
এমন অনেক কথা যা বন্ধুবান্ধবের সাথে
খোলাখুলি আলোচনা করা যায় অন~লাইনে
ঘরের এক কোণে ল্যাপটপে তা তো হয়ই না
বরঞ্চ ছাত্র- ছাত্রীকে একা করে দিয়ে
একাকীত্বের মননকে জাগিয়ে দিয়ে
অবসাদের দিকে শুধু ঠেলে দেয় না সে তার
পরিবারকেই সব ভাবে যা সমাজ জীবনকে
খতরনাকের পর্যায়ে নিয়ে যায় ।
সর্বশেষে এ কথা স্ফীকার করতেই হবে যে
অন-লাইন শিক্ষা সবার পক্ষে নেয়া সম্ভব
নয়-প্রথমত নেটের সমস্যা,আর্থিক সমস্যা
দ্বিতীয়ত ক্লাস করার সূচী ব্যক্তিকেন্দ্রিক ও
মর্জিমাফিক । তৃতীয়ত ছাত্র-ছাত্রীরা সব
সময় অন-লাইনে না থেকেও তা ষ্টোর করে
পরে দেখতে পারে।
তা ছাড়া পরীক্ষা ব্যবস্হা কখনোই অন-
লাইনে সম্ভব নয় আর যদি বা করা যায় তবে
তা হাল আমলে ফলাফল দেখলেই সবাই
বুঝতে পেরেছে।
অন-লাইন শিক্ষা এক ব্যবসায়িক ব্যবস্হা
যা শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার যা
সংবিধান স্বীকৃত এক প্রথা তার বিসর্জন
দিয়ে তাকে পণ্যে পরিণত করার মধ্য দিয়ে
তাকে সার্বজনীন শিক্ষার যে অধিকার তাকে
বঞ্চিত করে এক শ্রেণীর মধ্যে রেখে
সমাজের এক বড় অংশকে শিক্ষার আলো
হতে বঞ্চিত করার প্রয়াস ছাড়া আর কিছুই
নয়।
পরিশেষে বলা যায় অন-লাইন নয়,নয় দূর
শিক্ষা নয় পাড়ায় শিক্ষা,চাই স্কুল শিক্ষা যা
সমাজ গড়ে,দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী করে,সম্পর্ক
তৈরী করে,চেতনার ভিত তৈরী করে দেয়,
দেশ ও দশের কল্যাণ আদর্শ তৈরী করে ও
এক ব্যাপক কর্মসংস্হান তৈরী করে
সমাজের হিতসাধনে চিরন্তন সেবা করে যায়
যা অন-লাইন না করে পুঁজির ফাটকা
ব্যবসাকে উৎসাহ প্রদান করে সামাজিক
অবক্ষয়ের পথকে প্রসস্হ করে~কাজেই
চাই স্কুল শিক্ষা যা জীবনকে গড়ে দেয়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।