সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে সিদ্ধার্থ সিংহ (পর্ব – ৫০)

দেবমাল্য

কারখানায় ফিরেই সামশের খবর পেয়েছিল বহরমপুর থেকে দেবমাল্যর বন্ধু ফোন করেছিল। নিজে ফোন না করে বন্ধুকে দিয়ে করিয়েছে! তার মানে নিশ্চয়ই কোনও একটা গন্ডগোল হয়েছে। তার উপরে সকাল থেকে যত বার তার মোবাইলে ফোন করেছে ও, শুনেছে সেই একই কথা— দিস নম্বর ইজ নট একজিস্ট।

ও সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেছিল বউদিকে। কিন্তু ফোনটা যে ধরেছিল তার গলা শুনেই ও বুঝতে পেরেছিল, বউদি নয়, অন্য কেউ ধরেছে। তাই বলেছিল, বউদি কোথায়?

এর পর ও প্রান্ত থেকে যে শব্দগুলো ভেসে এসেছিল, তার জন্য একদম প্রস্তুত ছিল না ও। হাউমাউ করে কেঁদে উঠেছিল। তার কাছ থেকেই কারখানার বাকি কর্মচারীরা শুনেছিল, তাদের ছোটবাবুর গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা।

সঙ্গে সঙ্গে কারখানার কাজ তারা বন্ধ করে দিয়েছিল। বড়বাবুকে এক্ষুনি এ খবর দিতে হবে। কিন্তু কে দেবে! এ খবর ফোনে দেওয়া ঠিক হবে না। আর সামশের এই সংবাদ পেয়ে এতটাই ভেঙে পড়েছে যে, উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি নেই তার। তাই কারখানার দু’জন ছুটে গেল বড়বাবুর কাছে।

না, তাঁর ছেলে যে গুলিবিদ্ধ হয়েছে, এ কথা তারা বলেনি। বলেছিল, ছোটবাবু বহরমপুরে গিয়ে হঠাৎ খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওখানকারই একটা নার্সিংহোমে ওকে ভর্তি করা হয়েছে। ওরা বলেছে, ভয়ের কিছু নেই। তবু, বউদি একা আছেন তো… যদি সামলাতে না পারেন। আমাদের এক্ষুনি যাওয়া দরকার।

ছেলের অসুস্থতার কথা শুনে বড়বাবু তখনই ঠিক করলেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, বহরমপুরে যাবেন। কিন্তু এই সময়ে ওখানে যাওয়ার কোনও ট্রেন নেই। ট্রেনে গেলে অনেক কম সময়ে পৌঁছনো যেত। আর বাসে যাওয়ার অভ্যাস নেই তাঁর। দু’হাত দূর দূর স্টপেজ দিতে দিতে যায়। বড় বিরক্তি লাগে। তাই তক্ষুনি খবর পাঠানো হল হরিকে।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!