সাপ্তাহিক ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন (পর্ব – ১২৪)

ফেরা

মানালি হয়ে লাদাখ অঞ্চলে পৌঁছে যাবার পরে রাস্তা খুবই ভালো পেয়েছিলাম। তবে কর্মা বলে দিয়েছিল, নুব্রা থেকে প্যানগং যাবার রাস্তা খুব একটা ভালো হবে না, কারণ আমরা নতুন রাস্তা ধরবো, আর সেই রাস্তার অনেকটাই শায়ক নদীর খাত বেয়ে যেতে হবে।
সকাল সকাল হেভি ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পরি। আজ খার্দুং লা হয়ে যেতে হবে, যেটি পৃথিবীর বুকে অন্যতম উঁচু মোটর চলাচলের রাস্তা। এটি মুলতঃ লাদাখ ভ্যালি আর নুব্রা ভ্যালিকে সংযুক্ত করেছে। প্রাচীন কাল থেকে মধ্য এশিয়ার বাণিজ্যিক লেনদেনের এক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।
আবহাওয়া সকালে সেদিন সাথ দেয় না। মেঘলা, টিপটিপ করে বৃষ্টি হয়েই চলেছে। রাস্তা সরু, পিচ্ছিল। কর্মা খুব সাবধানে গাড়ি চালিয়ে চলেন। বেলা আন্দাজ এগারোটা নাগাদ খার্দুং লার শীর্ষে পৌঁছোই।বেশ ভিড়। নেমে ছবি তুলে পাশেই একটা ক্যাফে তে ঢুকি। কফি আর স্ন্যাক্স খাওয়া হয়। এরপর যা খাওয়া, সব প্যানগং পৌঁছে। ক্যাফেতে সিগারেট পাওয়া যাচ্ছে দেখে উল্লসিত হয়ে পড়ি। দুই প্যাকেট স্টক করে নি। গতকালের মতো কেস খেতে রাজি নই আর আমি।
এরপর অনেকটা উৎরাই রাস্তা। একসময় নদীকে ডানে রেখে তার পাশ বরাবর এবড়োখেবড়ো রাস্তায় গাড়ি চলে লাফাতে লাফাতে। শতাব্দী তার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ে। আমি, অনি আর কর্মা গল্প করতে করতে চলি। মনোরম আবহাওয়া, উঁচু নীচু পাথর পড়ে আছে। দেখে মনে হয় কোনো প্রাগৈতিহাসিক যুগে চলে এসেছি।
বেলা যখন প্রায় তিন, গাড়ি এসে ওঠে হাইওয়েতে। এবার রাস্তা ভালো। গাড়ি চলে হু হু করে। আরো খানিক চলার পর, একটা ছোট্ট গ্রাম আসে। সেখানে গাড়ি দাঁড় করায় কর্মা। একটা ছোট্ট রেস্তোরাঁ। নেমে এসে কাওয়া আর মোমোর অর্ডার করা হয়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।