ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৮৩

ফেরা

বেলা আন্দাজ সাড়ে নটা নাগাদ, ঘুম ভেঙে উঠে দেখি, বাইরে চড়া রোদ, বৃষ্টি বাদল কখন টুটে গেছে। রেডি হয়ে মহারাজকে প্রনাম করে বাইরে আসি, কে জানতো সেটাই ওনার সাথে শেষ দেখা? বাইরে এসে আস্তাবল থেকে একটি ঘোড়া ভাড়া করি, তিন ঘন্টার মধ্যে গৌরীকুন্ড পৌঁছে যাই। মালপত্র সব বাসে গুছিয়ে, গৌরীকুন্ডের ভারত সেবাশ্রম সংঘে এসে জুতো মোজা খুলে, খালি পায়ে একটু হেঁটে, আমি আর অধিকারী কাকু আসি উষ্ণ প্রস্রবনের সামনে। একটা ঘেরা মতো জায়গায়, জামা কাপড় ছেড়ে গামছা পরে গরম জলে ঝাঁপ দি।

আহঃ কি আরাম। শরীরের যতো ব্যথা ছিলো, সব যেন জুড়িয়ে যায়। ডুব দি, আবার উঠি। অধিকারী কাকু গরম জল হাতে নিয়ে স্তব করেন। ঝরঝরে শরীরে সংঘে এসে, গরম ভাত তরকারি তে উদর পূর্তি করে আবার বাস। খানিকক্ষণের মধ্যেই গুপ্ত কাশী।
সেদিন বিকেলে আর কোনো কাজ নেই। একটু এদিক হেঁটে আবার ঘরে এসে ঢুকি। দলের কাকিমারা ফেরেন শপিং সেরে। আমাকে বলেন তোর কি ব্যাপার বলতো? সবাই কিনছে, আর তুই কিছু কিনছিস না? হলো কি তোর?

স্বাভাবিক। আমি কিছুই কিনিনি তখন পর্যন্ত। কারণ পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এটা জানি, এই চার ধামের যা কিছু মেমেন্টো, সব হরিদ্বার থেকে আসে। আমাদের ফেরত যাবার সময়, গোটা দুটো আস্ত দিন হরিদ্বার থাকা। যা কেনার তখন কিনবো। কম দামে ভালো জিনিস পাবো। আমি কেন মিছিমিছি সারা ট্যুর জিনিস বইবো? তাই শপিং তোলা থাকে হরিদ্বারের জন্য। আর মনে মনে ভাবি, যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমার এই যাত্রা, তার সময় সমাগত প্রায়। আগামীকাল বিকালে বদ্রীনাথ। আর পরশু, বাবার উদ্দেশ্য পিন্ড দান।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।