ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ৬৯

ফেরা

সেদিন খাবার খেতে ডাকায় ঢুলু ঢুলু চোখে উঠে খেয়ে আবার শুলাম। কানের কাছে বয়ে যাওয়া নদীর কুলুকুলু শব্দ শুনতে শুনতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি, খেয়াল নেই।

অবশ্য সেই রাতে ঘুম দরকার ছিলো। পরেরদিন প্রায় ১৮০ কি মি যাত্রা। নেটালা থেকে গঙ্গোত্রী, সেখানে খানিক থাকা, আবার ব্যাক টু নেটালা। তাই প্ল্যান অনুযায়ী সকাল সাতটায় বেরোনো।
মেঘলা আকাশ, কনকনে ঠান্ডা কে সঙ্গে করে যাত্রা শুরু। যারা ঐ পথে গেছেন, তারা সবাই বলবেন যে গাড়োয়াল হিমালয়ের সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা। দৃশ্যের অসীমতার কোনো সীমা পরিসীমা নেই। রাজ কপুর তাঁর বিখ্যাত সিনেমা রাম তেরি গঙ্গা মৈলীর শুটিং করেছিলেন এখানে। ওনাকে এখানকার লোক প্রায় দেবতা সরূপ মানে। কারণ তার শুটিংয়ের পর এখানকার পর্যটন বেড়েছে, সাথে এদের রুজি রোজগার। একটাই আফসোস, এর পর আর কেউ বিশেষ আগ্রহ দেখাননি।
চলতে থাকি। পেরিয়ে যায় একেকটি মায়াবী জনপদ। ভাটোরি, মানেরি গাংনানি। অবশেষে হরসিল। সবচেয়ে সুন্দর। মনে ভাবি এখানে একটি বাংলো বানিয়ে অবসর কাটাবো। জানি না সেটা সম্ভব হবে কিনা। হরসিলে একটু বিরতি। পাহাড়ি সুস্বাদু ফলে গলা ভিজিয়ে আবার এগিয়ে চলা। অবশেষে গঙ্গোত্রী।

সাত বছরে বিশেষ পাল্টায় নি। তবে যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। বাস থেকে নেমে ঠান্ডা জলে হাত মুখ ধুয়ে মন্দির পানে চলি। চোখে আসে গোমুখ যাবার রাস্তা।

কয়েকজন যাত্রী কে দেখি এগিয়ে চলে গোমুখ পানে। মন খোঁজে সেই ১৯ বছর বয়সী কিশোরকে। কিন্তু তার আর এবার ওখানে যাবার নেই।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।