ধারাবাহিক ভ্রমণ সিরিজে শতদ্রু ঋক সেন – ১১৪

রাত আর শেষ হয় না। যত রাত বাড়ছে, প্রচন্ড হাওয়া গতি বাড়িয়ে এসে পুরো তাঁবুকে নাড়িয়ে যাচ্ছে। আর তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আমাদের অস্বস্তি। বুঝতে পারছি, একটু একটু করে শ্বাসকষ্ট বাড়ছে। একসময় মরিয়া হয়ে টলতে টলতে উঠে পড়লাম। এলোপ্যাথিক ওষুধ আর খাওয়া যাবে না, দিনের কোটা শেষ। ব্যাগের এক কোনায় কোকা ৬ রাখা ছিলে, একটু একটু করে খেয়ে নিলাম তিনজনেই।
সাময়িক মুক্তি। কিন্তু জানি, এর হাত ধরে বেশিক্ষণ বাঁচা যাবে না। আবার কষ্ট শুরু হবে। এক উপায়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোরবেলা বেরিয়ে একটু নীচের দিকে নেমে যাওয়া।
এদিকে রাত তো আর কাটে না। বারবার ঘড়ি দেখছি, ঘুম চুলোয় গেছে। গা হাত পা ব্যথা, মাথা ভার। শুয়ে শুয়ে তিনজনেই কাতরাচ্ছি।
যখন ভোর চারটে, একটু যেন বল পেলাম তিনজনেই। যা যা মালপত্র যদিও যৎসামান্য, হাতের কাছে যা ব্যাগ পেলাম আমরা ঢুকিয়ে নিলাম। পাঁচটা বাজতেই পাশের তাঁবুতে কর্মা শুয়ে ছিলেন, বলতেই তড়াক করে রেডি হয়ে গেলেন। সাড়ে পাঁচটা, একটু একটু আলো ফুটছে, আমরা সারচু ছাড়লাম।
গাড়িতে হিটার ছিলো, তার ওমে একটু ভালো লাগছিলো। যত বেলা বাড়লো, আরাম বাড়লো। বেশ কিছুটা চলে, একটা রোডসাইড ঝুপড়ি তে, গদিতে বসে, গরম ম্যাগি, চা খেয়ে সেদিনকার কোটার ডায়ামক্স খেলাম। ঐ গদিতেই ঘন্টা দেড়েক ঘুমিয়ে নিলাম তিনজনেই। উঠে দেখি, পাক্কা একদিন পরে, শরীর ঝড়ঝড়ে হয়েছে।
ক্লাইমেট এক্লেমেটাইসেজন চূড়ান্ত ভাবে হয়ে গেছিল আগের রাতের কষ্টের মধ্যে দিয়ে। তারপর যে কটা দিন লাদাখে ছিলাম, এক ফোঁটা কষ্ট হয়নি, না একটু শরীর খারাপ করেছে।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!