গদ্যের পোডিয়ামে (ধারাবাহিক) – সুদীপ্তা রায় চৌধুরী মুখার্জী – পর্ব- ২

গবলেটে মেঘ ছিল কিন্তু !

।। পর্ব – ২ ।।

প্রতিদিনের দিনগত পাপ স্খালনের শেষে যখন টের পাই মাঝ বয়স ঘন হয়ে আসছে, বসন্ত দিনের কপিরাইট এবার ছাড়তে হবে। অনাঘ্রাতা গোলাপ, হঠাৎই দিয়ে ফেলা অঙ্গীকার আর আমার নয় বরং শর্তহীন সম্পর্ক থেকে চুঁইয়ে নামা সত্যই একমাত্র যাদু বাস্তব । তখনই চোখে পড়ে “আজনবী তুম মুঝে জ়িন্দেগি কি শাম মে কিউ মিলে, মিলনা থা তো দোপহর মে মিলতে” রিলেটেব্ল আফসোস । সাহিত্যিক অমৃতা প্রীতম চিত্রকর ইমরোজ় এই মর পৃথিবীর বুকে জান্নাত নামিয়েছিলেন এই শব্দ কটির সাহারায়। ভাঙা সম্পর্কের আঁচে পুড়তে পুড়তে গড়ে তুলেছিলেন একত্রবাসের নির্জন পরিসর । এক সমুদ্র জলেও যে দহন নেবে না তার কানে কানে “আমি আছি তো” বলার কাছে ঈশ্বরত্বও তুচ্ছ। এভাবেই বৈধ-অবৈধের সম্ভ্রান্ত বাইনারি থেকে সেঁচে নিতে হয় কামনাবাসনার সংহতি । “আমি তোমার প্রেমে হব সবার কলঙ্কভাগী” ভাবতেই মনে পড়ে”লক্ষ কন্ঠে গীতা পাঠে”র মায়াভিকর্ষ । মেদুর হয় ডিসেম্বরের সাঁঝ । স্মৃতি তে নামে ইয়াদোঁ কি বারাত, ভিজে যায় ক্রিসমাস ইভ । বাতাসে ভাসে “শাম কি ফুল” “মনচাহা হি রিস্তার” টানে মিছিল থেকে জনসভা ব্যথার ঘ্রাণ মিশে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার আলোয় । গীতায় বলে, “নৈনং ছিন্দন্তি শস্ত্রাণি নৈনং দহতি পাবক” । আত্মা ও প্রেম তো এখানে একাকার । পুড়তে পুড়তে তিলোত্তমা শিখল এই নিরাকার সত্য । নিঃশব্দ মায়া । প্রেমের সহজিয়া রূপবন্ধ । ঘরপোড়ারা জানে সম্পর্কের কোনো বিরতি হতে নেই, নেই কোনো রবিবার । আঁকরে নয় আগলে রাখতে হয় সম্পর্ক কে । আর বলে যেতে হয় “ম্যায় তেনু ফির মিলেঙ্গা …কিথে…কিস তরহা” পাতো কোনি, তবে সেই মুহুর্তেই মুছে যায় কিশোরী ঘ্রাণ, সেই মুহুর্তে তৃপ্তিতন্দ্রা নামে অফেন বাতাসে । দুটো ঠোঁটাপেক্ষি মন জুড়ে যুগে যুগে বলে যায় “এসো প্রিয় আরও কাছে” । ভালো থাকুন দুজনে দুজনের মায়া জগতে…আর গীতা বলতেই থাকুক, ” নিত্যং সর্ব্বগতঃ স্থাণুরচলোহয়ং সনাতনঃ” অর্থাৎ এই যুগলচলন অক্ষয় হোক…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *