গদ্যের পোডিয়ামে (ধারাবাহিক) – সুদীপ্তা রায় চৌধুরী মুখার্জী – পর্ব – ৫

গবলেটে মেঘ ছিল কিন্তু !
রাত গভীরের নীলাভ ডানা থেকে ঝরে পড়ছে বাঁশির সুর। যমুনা তীর উদ্বেলিত কালো কিশোরের সূর মূর্ছনায় মেয়েটির হৃদকমলে ঝড় তুলছে ডাকাতিয়া বাঁশি। রাইকিশোরী উপায় খুঁজছেন , খুঁজেই চলেছেন একবার তার কাছে পৌঁছনোর।কিন্তু সাংসারিক জাল কেটে বেরোতেই পারছেনা তার চঞ্চল পদযুগল।নিক্কন ধ্বনিও যেএই নিবিড় রাতে তার শত্রুবধ।অবশেষে এলো সেই পল,তিনি ছুঁয়ে এলেন তার প্রিয় পুরুষ কে।অবগাহন করলেন সেই অবিনশ্বর আলোকরাশিতে।সুস্থির চিত্তে মন রাখলেন দৈনন্দিন যাপনের। বেশেছেন…শুধু ভালোবেসেছেন নন্দের নন্দনকে।প্রেমাস্পদকে ঈশ্বরজ্ঞানে আরাধনা করে নিজে কাঙাল হয়েছেন।জগৎ সংসারকে হেলায় তুচ্ছ মেনে নৃসিংহমুরারীকে বানিয়েছেন ললাটের গহনা। অথচ তাকে কখনোই হাতে আঁকড়ে রাখেনি।সে প্রবনতাই তার ছিলনা।উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসে বরং মধুসূদনকে পাঠিয়েছেন কখোনো মথুরাবিজয়ে তো কখোনো ধর্ম সংস্থাপনে।কারন তার জয়টিকাই তো শ্রীরাধিকার কপালের দীর্ঘ সমুদ্রটিপের মায়াসাজ।আবার অনঙ্গমোহনকে কী ভীষন অবলীলায়, পরম তাচ্ছিল্যে তুলে দিয়েছেন ষোলোশত গোপীনির হাতে।আপন কজ্জল গরীমা ও নিজের সূর্য সৃজক প্রেমের অহমীকা ছিলো শ্রীরাধিকার অনামিকার হীরের আংটির মত অবভাসিত দীপ্তিময়।শ্রীকৃষ্ণের দুই পত্নী কে প্রায় বিস্মৃতির অন্তরালে পাঠিয়ে প্রেমাস্পদের সাথে একাসনে পূজিত হ ওয়ার দম্ভের নাম কৃষ্ণ প্রিয়া রাধা।বিরহ বেদনা কিংশুক রক্তিমরাগে রঞ্জিত হলে ও সব বসন্ত ফুল দিয়ে তিন গেঁথেছেন পার্থসারথির জয়ের মালা।তাইতো ধার্মিক মন ছাপিয়ে কাব্যিক মন ছুঁয়ে প্রেমিক মনে তার প্রেমের আবেদন চিরকালীন।তিনি কৃষ্ণ প্রানাধিকা ,আমৃত্যু কৃষ্ণ এর বাঁশিতে বেজেছে সকরুন রাধানাম।আজ রাধাষ্টমী।