ফার্স্ট স্টপ

ফার্স্ট স্টপ : সুসময়, সবসময় বা কখনও

দৈব দুর্বিপাকে সকাল আসে এভাবেই, আজকের মতো করেই। সকাল আসার কারণ কী অথবা রাতটাই বা কেন আসে সে উত্তর ভূগোলে পড়েছি সেই কবেই। দিদিভাইয়ের তখনও বিয়ে হয়নি। চুটিয়ে প্রেম চালাচ্ছে আমার জিজুর সাথে। ওদের প্রেমটা বড্ডো খোলামেলা ছিলো, নামতার মত সহজও। জিজু বাড়ি আসতো রোজ হাতে নিয়ে সিঙ্গাড়া, কচুরি এবং অবশ্যই ভাটপাড়ার বিখ্যাত লাল রসগোল্লা। লাল রসগোল্লা মানে গুড়ের এমনটা মোটেই নয়, কড়া পাকের রসগোল্লা। আমার অঙ্ক- বিজ্ঞান তরতরিয়ে এগিয়ে যেতো জিজুর অবাক করা এরেঞ্জমেন্ট আর থ্রোয়িং এ। জিজুকে কোনোদিন বলতে হয়নি সূর্য বা চাঁদের ওঠা নামার কেলেঙ্কারির হিসাব। যাদবপুর থেকে ইলেক্ট্রিক্যালে পাশ করা সেই জিজু লোকটা আমার প্রাইভেট টিউটার হলে আমি নিশ্চিত আজ কবিতা লিখতুম না। ওর মতো এদেশ ওদেশ করে বেরাতাম। কিন্তু আমি যে আমার দিদিভাইয়ের ছাত্র। ভূগোলটা আমি তার থেকেই শিখেছিলাম আর জেনেছিলাম সকাল হওয়াটা একটা খেলা। ওর সঙ্গে সঙ্গে আমার ভূগোল ক্লাস নিতো আমার আরো একজন শিক্ষিকা। আমার দুম্মা। আমার মাতার মাতা। তাঁর কাছেই চলতো আমার আসল পড়াশোনা। তিনি কি জানতেন যে আমি লিখবো একদিন, আর শুধু লিখেই যাবো? হয়তো জানতেন, তাই অবলীলায় বলে দিতেন সূর্যতো সবসময় উঠেই থাকে একচোখো পৃথিবী এক চোখ দিয়ে তাকে দেখে। যে চোখ দিয়ে দেখে সেই চোখে সকাল আর যে চোখ বন্ধ করে সে চোখে রাত। সম্রাজ্ঞী সে। তাঁর কথা ভুল হতেই পারে না। তাইতো আজকের দিনে দাঁড়িয়ে যখন তিনি দীপ্তি রূপে ওই সূর্যলোকে আর আমি তাকিয়ে আছি সূর্যের দিকে, তখনই আমার চোখ দিয়ে নেমে আসা জল জানিয়ে দিচ্ছে – রাণী তুমি আমায় সোনালি করছো, আমায় উত্তাপ দিচ্ছো, আমায় সাবধান করছো একচোখো পৃথিবীর থেকে। আর লেখা চলে না, চোখ ঝাপসা
                                                                                                                                  শাল্যদানী
Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!