T3 || লক্ষ্মী পুজো || সংখ্যায় সুস্মিতা পাল

শ্রী পুজোর দিনে শ্রীনগরকথা
“শ্রীনগরবাসী এক সাধুর তনয়
উপনীত হল আসি ব্রতের সময়”
লক্ষ্মীর পাঁচালীর লাইনদুটো মনে পড়ছে? বাংলার শ্রীনগর নামে কোনো জায়গার কথা বলা হয়েছে হয়তো। আমার কিন্তু কাশ্মীরের সামার ক্যাপিটল শ্রীনগর বড্ড ভালো লেগেছে। শহরের প্রাণ হলো ডাললেক। জীবনের স্পন্দন যেন অনুভব করা যায় ডাল লেকের চারপাশের এলাকা ঘিরে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নাকি এ়খানকার চশমে শাহীর ঝর্ণার জল ছাড়া খেতেন না। সারাবছর তা যোগান যেত এখান থেকে। মুঘলদের তৈরি করা বাগান চারিদিকে। আর কি আশ্চর্য, কি যে ওয়েদারের মহিমা – চুল আর ত্বক , যা নিয়ে সব্বাই নাজেহাল, আপনাআপনি যেন ঝকঝক করে শ্রীনগরে। নামেও শ্রী, কাজেও তাই। ভূস্বর্গ কি এমনি বলে!
হজরতবালে ঢুকে পড়েছিলাম গাড়িতে ব্যাগ রেখে, সঙ্গে তাই টাকাপয়সা কিচ্ছুটি ছিল না, দরজার কাছে প্রণামীর বাক্সে দিলাম না কিছুই। ছেলে আর মেয়েদের আলাদা দরজা ,আলাদা প্রবেশপথ। মূল আরাধনাস্থলে নারীপ্রবেশ নিষিদ্ধ। বাইরে তাই একাই দাঁড়িয়ে ছিলাম চুপটি করে। নানা বয়সী মেয়েরা একসুরে গান গেয়ে প্রার্থনা করছে, দলে দলে পায়রা উড়ে এসে বসছে দানা খুঁটে নেবে বলে, পাশেই লেকের জলে নীল আকাশ ছায়া ফেলেছে। মনটা কেমন শান্ত হয়ে এল, মূর্ত বা আচারসর্বস্ব ঈশ্বর- আরাধনায় নিজের আস্থা আছে কিনা মাঝেমাঝে বুঝতে পারি না, কিন্তু ঐ সময়টুকুতে কেমন একটা নিবেদনের ইচ্ছা অনুভব করলাম। কিছু তো আছে, কেউ তো আছেন – যার আসন মন্দির মসজিদ গির্জার দেয়ালের বাইরে– প্রণামটুকু তার উদ্দেশে রেখে এলাম।