গারো পাহাড়ের গদ্যে এস এম শাহনূর (পর্ব – ৭)

দানবীর

➤সর্বজনীন পাঠাগার রামমালা:
কুমিল্লা ঈশ্বর পাঠশালা টোল স্থাপনের পরই প্রতিষ্ঠাতা মহাশয়ের কুমিল্লা বাড়ির বৈঠকখানায় ১৯১২ সালে টোলের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সংস্কৃত গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। টোলের অন্যতম পণ্ডিত সূর্যকান্ত স্মৃতিতীর্থ মহাশয় গ্রন্থাগারের কার্য পরিচালনা করতেন। এ সময় ৪/৫ টি আলমারিতে গ্রন্থগুলি রক্ষিত হতো। সংস্কৃত ভাষায় লিখিত গ্রন্থাদি সাধারণ পাঠকদের বোধগম্য হতো না বিধায় স্থানীয় কতিপয় বিশিষ্ট ব্যক্তির অনুরোধে কিছু কিছু বাংলা পুস্তক এবং ‘প্রবাসী’ ও ‘ভারতবর্ষ’ প্রভৃতি প্রধান প্রধান মাসিক পত্রিকা রাখা হত থাকে।
দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জ্ঞান পিপাসা পূরণ কল্পে গড়ে তুলেছিলেন ব্যয়বহুল অনেক প্রাচীন দুর্লভ ও মহামূল্য গ্রন্থাদির সংগ্রহশালা।তিনি যে একজন খাঁটি স্বদেশী ছিলেন তার প্রমাণ হলো আট হাজার আঞ্চলিক পুঁথি সংগ্রহ।এই পুঁথিগুলো আজকে স্বদেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বের খ্যাতিমান উচ্চবিদ্যাপীঠগুলোতে গবেষিত হচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে বাংলার লোকজ তথা প্রকৃত সংস্কৃতির ইতিহাস। পুঁথির এত বড় সংগ্রহ সম্ভবত উপমহাদেশে আর কোথাও নেই। সেই ঐতিহ্যবাহী রামমালা গ্রন্থাগারে সুদূর ব্রিটিশ লাইব্রেরীসহ দেশ-বিদেশের গবেষকরা তথ্য সংগ্রহ করতে আসেন। খুঁজে নেন আগ্রহের দুলর্ভ তথ্য।
বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ হওয়া সত্ত্বেও রামমালা গ্রন্থাগারে তুলনামূলক ধর্ম বিষয়ে জ্ঞান চর্চা করার জন্যে তিনি হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, শিখ, ইহুদী, খৃষ্টান, ইসলাম, পার্শি,কনফুসিয়ান,তাও, মিশরীয়,বেবিলনীয়, আসিরীয় প্রভৃতি ধর্মীয় গ্রন্থাদির বিশাল সংগ্রহ শালা গড়ে তুলেছিলেন।রামমালা গ্রন্থাগারের তিনটি বিভাগ তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন:

(১) গবেষণা বিভাগ
(২) সাধারণ বিভাগ
(৩) হস্ত লিখিত প্রাচীন পুঁথি বিভাগ।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!