গারো পাহাড়ের গদ্যে এস এম শাহনূর (পর্ব-১৬)

লালন ও রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিকথা :

রবীন্দ্রনাথ ছিলেন লালনের তত্ত্ব ও গানের এক মহান ভক্ত। ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন কুষ্টিয়ার শিলাইদহে আসেন তখনই কোনো একসময়ে লালন সাঁইজির সাথে তাঁর দেখা হয়। তিনি লালন ফকিরের ২০টি গান প্রবাসী পত্রিকায় হারামনি বিভাগে প্রকাশিত করেছিলেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে দেওয়া তাঁর বক্তৃতায় তিনি লালনের ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ গানের ইংরেজি অনুবাদ বিদেশি শ্রোতাদের শুনিয়েছিলেন। লালনের গানে রবীন্দ্রনাথ দারুণভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এক লেখায় বলেছেন ‘লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন। আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।’ ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি কমনে আসে যায়/ধরতে পারলে মনো-বেড়ি দিতাম পাখির পায়’ লালনের এই গানটি শুনে রবীন্দ্রনাথ এমনই মুগ্ধ হলেন, দেহতত্ত্বের এ গানটিকে রবীন্দ্রনাথ ইংরেজিতে অনুবাদ করলেন। ১৯২৫ সালের ভারতীয় দর্শন মহাসভায় ইংরেজি বক্তৃতায় এই গানের উদ্ধৃতিও দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ নিজে স্বপ্রণোদিত হয়ে লালনের ২৮৯ টি গান সংগ্রহ করেন। রবীন্দ্রনাথই বাঙালির লালনকে ছড়িয়ে দিয়ে বিশ্বমায়ের লালনে পরিণত করেন।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!