কর্ণফুলির গল্প বলা সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সৈয়দ মিজানুর রহমান (পর্ব – ২২)
by
·
Published
· Updated
অনন্ত – অন্তরা
হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো—— ধাত্ লাইন কেটে দিয়েছে- ডোজটা মনে একটু বেশী দিয়ে ফেললাম, এই কিভাবে সামলাবো? ধুত্ করার সময় হুস থাকে না- এখন তো আর ফোন ধরবে না, না আরেক বার ট্রাই করি, ইস সুইচ অফ- আমি জানি যে ও কী করতে পারে!! শুধু শুধু ঝামেলা বাঁধালাম – যাই ওর কাছে তারপর দেখছি ।ধানমন্ডি থেকে বাসে সোজা শাহবাগ ছুটলাম- বাসে উঠে সিট মিললো না কপালে, মন খারাপ হলো কারণ নতুন সেটটা একটু চালিয়ে দেখতে চেয়েছিলাম, কী আর করা পকেট সাবধান সেই সাথে মন অস্থির বেশ imbalance মনে হচ্ছিল,সামলে নিতে থাকলাম আর চোখ রাখলাম সিট পেলেই বসার সুযোগ নিতে হবে ।বেশ সময় অতিবাহিত হলো কিন্তু কারোর উঠার নাম নাই ঘড়ি দেখি ৪৫ মিনিট হয়ে গিয়েছে উফ আজ এতো খুশীর সাথে এই চলমান সময়টা ঠিক যাচ্ছে না বলতেই বাস দাঁড়িয়ে গেল, সামনে তাকিয়ে দেখি গাড়ীর মিছিল সমেবেত হয়েছে একটি শ্লোগানে “শহর তুলনায় মানুষ বেশী রাস্তা তুলিনায় যানবাহন বেশী কেমন বন্টন মানি না মানব না” “জনচাপে আমরা কাহিল, গাড়ির চাপে প্রাণ কাহিল- নষ্ট ধূয়ার কষ্ট শহর- জীবন নাশের একি রঙ্গ!” পরিস্থিতি দেখে কিছু প্যাসেঞ্জার নামতে শুরু করলো সুযোগের সদ্ব্যবহার করে বসে পড়লাম- বেশ একটু আরাম লাগছে, সুগোগ পেয়ে পানি বিক্রিতা বাসে ঢুকে “এই পানি- এই ঠান্ডা পানি বলে সুরে সুরে বলছে, মেঘ না চাইতে বৃষ্টি মতো জল ছুঁয়ে গেল প্রাণে- এই ভাই এই দিকে এক বোতল, নিয়ে ঠান্ডা পানি ঠোঁটে লাগিয়ে চুমুক গলা ভিজে প্রাণ জুড়িয়ে গেল, স্বস্তির ঢেকোর তুলে ফেসবুকে একটু মননিবেশ করার চেষ্টা, অন্তরার প্রোফাইলে গেলাম- এ-কী লিখেছে
মা-মনির জন্য খেলনা! বেশ কিছু খেলনার ছবি । একটা খটকা লেগে গেল মনে কিন্ত কোন ভাবে মন মেনে নিচ্ছে না । হেল্পার শাহবাগ শাহবাগ বলে চিৎকার করছে আবার নামার পালা, বাস দাঁড়ালো ইচ্ছে মতো নামতে বাধ্য হলাম । হায়রে নিয়ম ছাড়া চলবলন বলার কেউ নাই, হেটে যেতে শুরু করলাম পাবলিক লাইব্রারীর কোণায় যেতেই দেখি সন্ধ্যা এইদিকে আসছে । এই সুযোগ, তাকিয়ে দেখি পাশেই আইসক্রিম এই গরমে নিশ্চয় আইসক্রিমে খুশী হবে, দৌড়ে যেয়ে আইসক্রিম কিনে নিয়ে ওর পিছন পিছন হেতে খুব কাছে যেয়ে বললাম এতো ডাকি তাও শুনিস না কেন ও আতঙ্কিত হয়ে ফিরে দেখে আমি
এই তুই এভাবে আমাকে ডাক্লি কেন আমি তো আঁতকে উঠেছি উফ কবে যে মানুষ হবি!!! আমার কাছে কী ্ তুই তোর কাজে যা আমি এখন বাসায় যাব ।
একা যাবি কেন আমি যাব না?
না এখন থেকে একা চলার অভ্যাস করতে হবে এবং নির্ভার চলা জানতে হবে । এই রিক্সা দাঁড়ান নিউমার্কের পাশে যাব, যাবেন?
ওঠেন আফামনি
ঠিক আছে অনন্ত তুই থাক আমি আসি ।
ঠিক আছে তবে তোর জন্য আইসক্রিম কিনেছি এটা নিয়ে যা আর একবার সেটটা হাতে নিয়ে দেখ । ধর –
কিছু সময় ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল- ঠিক আছে তুই খেয়েনে আমার খেতে ইচ্ছে করছেনা আর সেটতো দেখাই যাচ্ছে ধরে দেখার কী প্রয়োজন- ভালো থাকিস বলে রিক্সা চালাতে বলল ।
মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে- সন্ধ্যা চলে গেল- তারপর উল্টোদিকে হাটা শুরু করল কিছু সময় পর পিছন থেকে অনন্ত বলে কে যেন ডাকছে ফিরে দেখ সন্ধ্যা । তবুও নিষ্প্রাণ আমি ।
এই অনন্ত চলে আয় ওঠ রিক্সায় – কী হলো?
কোন কথা না বলে রিক্সায় উঠে বসলো-
আইসক্রিম গলে গলে ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরছে দেখে সন্ধ্যা বলল কিরে তুই ধরে বসে আছিস কেন আমাকে একটা দে আমি খাবো ।
কোন কথা না বলে আইসক্রিম ওর দিকে বাড়িয়ে দিলো ।
সন্ধ্যা নিয়ে খেতে শুরু করলো এবং বলল তুই বসে আসিছ কেন খাবি না ?
না খেলে আমি ফেলে দেবো কিন্তু
অনন্ত খাওয়া শুরু করলো ।