সাপ্তাহিক কোয়ার্ক ধারাবাহিক উপন্যাসে সুশোভন কাঞ্জিলাল (পর্ব – ৯৯)
নিরানব্বই
আমি ডঃ বার্গেনস্টাইনকে সোজাসুজি চার্জ করলাম। বললাম “ডঃ চোঙদারকে আপনারা মেরেছেন?আমাকে কিডন্যাপ এবং ব্যাঙ্ক ডাকাতি আপনারা করেছেন তাই না?”এতক্ষনের হাসি হাসি মুখটা নিমেষে পাল্টে গেলো। ডঃ বার্গেনস্টাইনের মুখটা গম্ভীর হয়ে গেলো। দৃষ্টি কঠোর হলো।আমার দিকে কঠোর দৃষ্টিতেই তাকিয়ে বললেন “যদিও আমি তোমাকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই। তবু আমি সত্যটা আজ তোমাকে বলবো। আর আশা করবো আমাদের প্রত্যেকটা অ্যাকশন এর পেছনের কারণটা তুমি বুঝবে রুডি “। বলে ঢক ঢক করে অনেকটা বিয়ার খেয়ে নিলেন। ডঃ বিয়ার খেয়ে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে আবার বলতে শুরু করলেন,”তোমার বাবা ডঃ অমিত বিক্রম চৌধুরী বা সংক্ষেপে ABC আমাদের সংগঠনের মেম্বার ছিলেন। তাই ওর আবিষ্কার আমাদের সংগঠনের সম্পত্তি। কিন্তু ABC এর অকাল মৃত্যুতে আমরা খুব অপ্রস্তুত হয়ে পড়ি।ABC যখন লাস্ট কংগ্রেস বলেছিল যে ফিলজফারস স্টোন ও আবিষ্কার করেছে, তখন আমরা খুবই উল্লাসিত হয়েছিলাম।। অ্যালকেমিস্ট দের এতদিনে সাধনা সফল হতে চলেছে।তোমায় মিথ্যে বলবো না SOAM এর ভাণ্ডারে ‘এলিক্সির অফ লাইফ আছে। যদিও এই ওষুধ মানুষকে আজীবন যুবক রাখতে পারেনা তবে panacea নামের এই ওষুধটি মানুষের যেকোনো অসুখ সারাতে পারে যেমন ক্যান্সার বা এইডস ও। আমাদেরই এই ফেলো মেম্বারের আবিষ্কার। এই panacea আফ্রিকার জঙ্গলে দেখতে পাওয়া যায়। এই গাছের পাতায় আছে আশ্চর্য মেডিসিনাল ক্ষমতা তুমি আমাদের সাহায্য করো আমরা তোমায় panacea র ভাগ্ দেবো। যাই হোক ABC এর মৃত্যু তে আমাদের ফিলজফারস স্টোন পাওয়া হলো না। আমরা তোমার ওপর নজর রেখেছিলাম কিন্তু তুমি জার্মানি থেকে ভারতে চলে আসো। আমরা ধারণা করেছিলাম তুমি এতো ছোট তোমাকে ABC তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কার জানিয়ে রেখে যাবে না। তাহলে কোথায় রাখতে পারেন তার আবিষ্কার। ভেবে দেখলাম তোমার বাবার ঘনিষ্ট বন্ধু হলো ডঃ চোঙদার। তিনি একমাত্র উপযুক্ত লোক যাকে তার আবিষ্কারের কাস্টডি হিসেবে ভাবতে পারেন। আমরা ডঃ চোঙদারের ওপর নজরদারি চালাতে লাগলাম। কিন্তু কিছুদিন পর উনিও ভারতে চলে এলেন পাকা পাকি ভাবে বাস করার জন্য। ফিলজ ফারস স্টোন এভাবে আমাদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে আমরা মানতে পারিনি তাই আমরাও ভারতেই ওনার ওপর নজরদারি চালাতে লাগলাম।
আমরা ধরে নিয়েছিলাম ডঃ চোঙদারের ভারতে আসার উদ্দেশ্য হলো তোমার কাছা কাছি গিয়ে তোমার বাবার আবিষ্কার তোমার হাতে তুলে দেওয়া।কিন্তু আমরা আশ্চর্য হলাম যে ডঃ চোঙদার কোনো ভাবে তোমার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেননা।এবার আমরা তার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম। তার উদ্দেশ্য হলো ডঃ চৌধুরীর আবিষ্কার আত্মসাৎ করা। কিন্তু আমরা তা কোনো মতেই হতে দিতে পারিনা। ওই আবিষ্কারে ডঃ চোঙদারের কোনো অধিকার নেই। আমরা ডঃ চোঙদারকে ডাইরেক্ট ABC র আবিষ্কারের কথা জিজ্ঞাসা করলাম। কিন্তু উনি পুরো পুরি অস্বীকার করলেন। কাজ হলোনা দেখে আমরা ওনাকে শাসন শুরু করলাম। লোভ দেখলাম। কিন্তু ডঃ চোঙদার খুব শক্ত প্রকৃতির মানুষ। তাই জীবনের ভয় দেখাবার জন্য আমাদের লোক ওনার পায়ে গুলি চালায়। উনি তখন ইভনিং ওয়াক এ বেরিয়েছিলেন গুলিটা মনে হয় ওনার পায়ে না লেগে বডির কোনো ডেঞ্জার জোনে লেগেছিলো। রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো। তখন উনি ট্যাক্সি করে তারা তারি ফিরতে চেষ্টা করেন। মৃত্যু আসন্ন জেনে ট্যাক্সির সিটে রক্ত দিয়ে সেই কথা গুলি লিখে রাখেন। যেগুলি তুমি অন্য ট্যাক্সিতে উঠে দেখতে পাও। তোমার মোবাইল নোটাও লিখে রেখেছিলেন। তোমাকে কিডন্যাপিং এর সময় ওর হেয়ালিটা আমরা লিখে রাখি যাতে ওটা তোমার কাছে পৌঁছয় এবং তা তুমি উদ্ধার করার চেষ্টা করো। ট্যাক্সিয়ালা যখন বোঝে যে পেছনের সিটে বসে থাকা যাত্রী খুব সিরিয়াসলি ইঞ্জিঅরড তখন সে সোজা গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে যায়। হাসপাতালে ওনাকে ভর্তি নেওয়া হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হয়।কিন্তু ঘন্টা চারেক পরেই ওনার মৃত্যু হয়। সত্যি বলছি ডঃ চোঙদারকে মারার কোনো ইচ্ছাই ছিল না। ইট ইস নাথিং বাট এক্সিডেন্ট। ট্যাক্সিহ্বালাকে দেখে লাস্ট মেসেজ টা উদ্ধার করি। তুমি আমাদের চেনো না। তাই তুমি আমাদের সাহায্যই বা করবে কেন।, আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে তোমাকে কিডন্যাপ করে আমাদের কব্জায় রেখে তোমার সাহাজ্যেই আমরা ফিলস ফারস স্টোন খুঁজে বের করবো “।