গদ্যানুশীলনে সুদীপ ঘোষাল (সিরিজ – ১০)

ফুলশয্যা


 স্বামী চলে যাওয়ার পরে একদম একা হয়ে পরেছিলেন, কবিতা। মনে পরতো ফুলশয্যা,  আদর।   কি করে যে একটা একটা করে রাত, দিন পার হয়ে যায়, বোঝাই যায় না। তবু বুঝতে হয়, মেনে নিতে হয়। একটা ঘুঘু পাখি তার স্বামী মরে যাওয়ার পর থেকেই এবাড়িতে আসে। আম গাছের ডালে বসে আপন মনে কত কথা বলে। ঘুঘুর ঘু,ঘুঘুর ঘু। সবিতাদেবীর সঙ্গে পাখিটার খুব ভাব।তার মনে হয় স্বামী, ঘুঘুর রূপ ধরে আসেন। তিনি আম গাছের তলায় খুদকুড়ো ছিটিয়ে দেন। ঘুঘু পাখিটা খায় আর গলা তুলে কবিতাকে দেখে । কিছু বলতে চায়। তিনি বোঝেন। আর আপনমনেই পাখিটার সঙ্গে বকবক করেন। পুরোনো দিনের কথা বলেন। ছেলের বৌ বলে,বুড়িটা পাগলী হয়ে গেছে। প্রতিবেশীরা অতশত বোঝে না। হাসাহাসি করে। শুধু তার ছেলে বোঝে মায়ের অন্তরের কথা, ব্যথা। ঘুঘু পাখিটা সারাদিন ডেকে চলে। এবার আয়, এবার আয়। কবিতার বয়স হল আশি। 
একদিন সবাই দেখলো, বুড়ি ফুলশয্যার রথে শ্মশানে গেলো বোধহয় স্বামীর কাছে। ঘুঘু পাখিটা ডেকে চলেছে তখনও,, ঘুঘুর ঘু… 

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।