ধারাবাহিক রম্য রচনায় সংযুক্তা দত্ত – ২৫

শীতকাল মানেই ফাংশান।
নভেম্বরে বলা যায় শীতের প্রস্তুতি, কলকাতায় সবাই লফ্ট থেকে গরম জামা লেপ কম্বল নামিয়ে রোদে দিয়ে রেডি হচ্ছে। তেমনই শুনতাম কলকাতায় সবাই গিয়ার আপ করছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন‍্য।
এই দুবছর কিন্তু প্রস্তুতি বল,স্টেজ বল, ছিল বাড়ি।
2020 সেই ভয়ংকর বছর, তবে ওই যে কথায় আছে
“When life gives you lemons, make lemonade out of it”
তেমনি বেশ কিছু মানুষ পেয়েছিলাম ফেসবুকে যারা এই লকডাউন মাতিয়ে দিয়েছিল গানে,আবৃত্তিতে ও আমার মত কিছু ক্ষেপিরা নাচানাচিও করেছিল। তা এই নভেম্বরেই একখানা জম্পেশ মেডলি গান পেয়েছিলাম আমার এক ফেসবুক তুতো বন্ধু রাজর্ষি দেবরায়ের গাওয়া।ফেসবুকের জনগণ সবাই জানেন যে কোন ধরনের গানেই রাজর্ষির জুড়ি মেলা ভার, আর এই মেডলিখানা ইংরেজি হিন্দি মেলানো, একেবারে ঝাক্কাস রিদমের সব গান। শখ করে গাউন পরে ইংরেজি গানটায় কয়েকটি স্টেপ করে নিলাম। তারপরই মনে হল পুরো মেডলিটাই করলে কেমন হয়? ব‍্যস শিল্পীর অনুমতির অপেক্ষা. নেমে পড়লাম কোমর বেঁধে।
10টা গান, তাই চাই 10 রকম সাজ এবং আলাদা আলাদা কোরিওগ্রাফি। আমার রবীন্দ্র নৃত‍্য টাইপ সত্তা দূরে সরিয়ে ঝিনচ‍্যাক প‍্যার্টানের কোরিও শুরু করলাম।
একদিনে দুটো করে গানের বেশি ভিডিও করা যেত না কারণ ‘ইয়ে শাম মাস্তানিতে’ শাড়ী, আবার ‘হ‍্যায় আপনা দিল তো আওয়ারা’তে উল্টো টুপি জিনস। তাই একদিন হত শাড়ী পরে দুটো গান, একদিন জিনস পরে আবার একদিন স্কার্ট। শেষের জন‍্য রেখেছিলাম ” ইয়ে চাঁদ সা রোশন চেহারা ‘, আমার তো একেবারে শতকরা বাঙালি চেহারা. ওমন শর্মিলা প‍্যার্টানের কাশ্মিরি লুক করা খুব মুশকিল। তবে ওই ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়েই যায় তাই আলমারি ঘেঁটে কাশ্মিরী কাফতান ড্রেস আর গরিয়াহাটের জিন্দাবাদ বলে বড় বড় ঝুমকোগুলো সেট করে ফেললাম ওড়নায় আর একটু মেককাপের টান। লাস্ট এফেক্টে বেশ ভালোই হয়েছিল জনগণ রায় দিয়েছিলেন।
এই লকডাউনের ক্ষতির সীমা পরিসীমা সত‍্যি নেই কিন্তু যা শিক্ষা আমাদের দিয়ে গেছে তা কিন্তু আমাদের আগামীর পাথেয়।

Spread the love

You may also like...

error: Content is protected !!