কবিতায় শিপ্রা দে

চিরসবুজ মন

মাথার চুলে পাক ধরেছে চোখের কোণে কালি
তাই বলে যে বুড়ি ভাববে সেই গুড়েতে বালি।
মন এখনো চতুর্দশী কিশোরী বেলা ছুঁয়ে
কাগজে নায়ে ভেসে বেড়ায় বার্ধক্য ধুয়ে।
ক্ষীণ দৃষ্টি নুব্জ তনু পরোয়া নেই তাতে
শ্রাবণী মেঘ এখনো ভেজে বৃষ্টি ভেজা প্রাতে।
শঙ্খচিলে ডানায় ওড়ে বেহিসেবি এ’মন
আবীর রাঙা লাল পলাশে ফেরে এ’যৌবন।
চোখের কোণে সুরমা ঢাকে বলিরেখার ভাঁজ
দূরে কোথাও ডাকছে কেউ কিশোর প্রেমি রাজ!
ভোমরা মনে গুনগুনিয়ে কাজল টিপ আঁকে
আটপৌরে সাজের সুখে আঁচল পাটে রাখে।
কোকিলরব হৃদ মাঝারে নুপুর পায়ে নাচে
কুঞ্জছায়ে হৃদ সাথীরে হাতটি ধরে কাছে।
মনের ঘরে রঙবাহারি মেঘের কোলে ধায়
রামধনুর সাতটি রঙ নতুন করে পায়।
ফুলের মালা বেনী’র পরে প্রেম সুবাস মাখে
পাহাড় ঘেঁষে মুনিয়াপাখি ঝর্ণা ধারা আঁকে।
শরত চাঁদে আঁচল ধরে ঢাকে দুঃখ ব্যথা
জ্যোৎস্না দ্যুতি ছড়িয়ে দেয় সুখ বিলাসী কথা।
বয়স খালি অঙ্ক কষে শরীর ফল’টাই
মনটা তাজা মনই রাজা মনটা খালি চাই

 

অবেলায়

কুহরিত পিক ডাকে না এখন
উঠোনে আগের মতো
উতলা হৃদয় উথলে ওঠে না
জীবন হয়েছে হত।

আপনার জন বাহুপাশে বেঁধে
আঁখি’তে রাখে না প্রেম
পায়ের নুপুর ছন্দে বাজেনা
গলেতে শোভেনা হেম।

বেল কুঁড়ি দিয়ে বাধে না খোঁপায়
পাষাণ হৃদয় তার
আহত জীবন আঁখিজল রেখা
ধরে রাখা হয় ভার।
নিশিদিন ধরে সুখের ছলনা
সংসার ছেলে মেয়ে
আজ অবেলায় কেন গো হারায়
অবহেলা যায় ছেয়ে।
যৌবন নদী জোয়ারের স্রোতে
ভাসিয়ে দিয়েছে আগে
বিরহের ব্যথা কতো স্মৃতি কথা
শয়নে স্বপনে জাগে।
মধুনিশা গেছে, রিক্ত জীবনে
বকুল শুকায় চুলে
বাতায়নে বসে কেউ নেই পাশে
আসবে না কেউ ভুলে।
নিবিড় রাতের স্তিমিত দীপ
নীরবে নিভৃতে সাথী
কতই না জানি জাগবে রজনী
কেমনে কাটবে রাতি!
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।